জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে যোগ দেওয়ার জন্য যে ভিত্তি, কারণ এবং অধিকার প্রয়োজন— তা তাইওয়ানের নেই বলে দাবি করেছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছেন।
সেই সঙ্গে নিজেদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মাও নিং বলেন, “জাতিসংঘ কিংবা আন্তঃরাষ্ট্রীয় যেসব সংস্থায় যেসব সার্বভৌম রাষ্ট্র যোগ দেয়— সেসবে যোগ দেওয়ার মতো ভিত্তি, কারণ কিংবা অধিকার তাইওয়ানের নেই। বিশ্বে চীন নামে একটিই রাষ্ট্র আছে এবং তাইওয়ান সেই রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।”
সম্প্রতি মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসে ‘তাইওয়ান নন-ডিসক্রিমিনেশন অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন পাস হয়েছে। এই আইন অনুসারে জাতিসংঘ, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকসহ যে কোনো আন্তঃরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে তাইওয়ানের যোগদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সুপারিশ করতে পারবে।
নতুন এই মার্কিন আইনের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবারের ব্রিফিংয়ে মাও নিং বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে এক চীন নীতি, আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূলনীতিগুলো মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে বলছি, দয়া করে তাইওয়ান ইস্যুকে কেন্দ্র করে চীনের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ এবং তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা দেওয়া বন্ধ করুন।”
১৯৪৯ সালে মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বে চীনে কমিউনিস্ট বিপ্লব হওয়ার পর থেকে চীনের মূল ভূখণ্ড বা বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে স্বায়ত্বশাসিত দ্বীপ ভূখণ্ড তাইওয়ান। দীর্ঘ বেশ কয়েক দশক ধরে চীনের মানচিত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে তাইওয়ান।
চীনের আপত্তির জেরে ১৯৭৯ সালে তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ওই বছরই ‘তাইওয়ান রিলেশন অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন পাস হয় মার্কিন পার্লামেন্টে। সেই আইনের আওতায় তাইওয়ানকে নিয়মিত অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।