সাম্প্রতিক সহিংসতা কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আবারও বাড়তে শুরু করেছে পর্যটকের আগমন। প্রতিদিনই জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণপিপাসু মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকাল থেকেই খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটন স্পট আলুটিলা রহস্যময় সুড়ঙ্গ, রিছাং ঝর্ণা, জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কসহ বেশ কয়েকটি স্থানে দেখা গেছে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে শত শত পর্যটক সাজেক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে খাগড়াছড়িতে এসেছেন। সকাল থেকেই সাজেকগামী যানবাহনের কাউন্টারগুলোতে ছিলো পর্যটকদের ব্যাপক ভিড়।
সাজেক কাউন্টারের লাইনম্যান মো. আরিফ জানান, আজ খাগড়াছড়ি শহর থেকে সাজেকের উদ্দেশ্যে শতাধিক পর্যটকবাহী গাড়ি ছেড়ে গেছে। আজ দুপুরের স্কটেও ৫০টির বেশি গাড়ি সাজেকের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। কয়েক সপ্তাহ পর এমন ভিড় দেখা যাচ্ছে।
ফরিদপুর থেকে আসা পর্যটক ফারদিন বলেন, আমরা ৪০ জনের একটি দল নিয়ে সাজেক ঘুরতে এসেছি। পথে কিছুটা যানজট থাকায় খাগড়াছড়ি পৌঁছাতে দেরি হয়েছে। তাই দুপুরের স্কটে সাজেকের পথে রওনা দেবো। আপাতত শহরের আশপাশ ঘুরে দেখছি।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক অনিক জানান, আমরা ১২ জন বন্ধু মিলে সাজেক যাচ্ছি। সাজেক থেকে ফিরে খাগড়াছড়ির অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখার পরিকল্পনা আছে।
গত ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারায় সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় পর্যটকদের আগমন কমে যায়। দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগে থেকে করা অধিকাংশ হোটেল-মোটেলের অগ্রিম বুকিং বাতিল হয়ে যায়। এতে পর্যটন ব্যবসায়ীরা কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েন।
খাগড়াছড়ি সাজেক মাহেন্দ্র কাউন্টারের লাইনম্যান গিয়াসউদ্দিন জানান, গত দুই সপ্তাহ পর্যটক না থাকায় গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ ছিলো। এখন আবার পর্যটক বাড়তে শুরু করেছে। আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহ থেকে ব্যবসা আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।
হোটেল মাউন্টেইনের পরিচালক নুরশাদ হোসেন বাপ্পি বলেন, খাগড়াছড়ির অর্থনীতি অনেকটাই পর্যটন নির্ভর। তাই এ অঞ্চলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকলে সবার জন্যই ভালো হবে।
খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, বর্তমানে খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। পর্যটকদের নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। যে কোনো প্রয়োজনে পর্যটকরা পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা নিতে পারবেন।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, আসন্ন শীত মৌসুমে খাগড়াছড়ি আবারও পর্যটকে মুখরিত হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।