নোয়াখালীতে টানা ৯ দিনের বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার লাখো মানুষ। জলাবদ্ধতা, রাস্তাঘাটের ভাঙাচোরা অবস্থা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশা এবং বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় নোয়াখালীবাসীর জনজীবনে নেমে এসেছে এক নিদারুণ বিপর্যয়। কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা।
জানা গেছে, গত ১৩ জুন থেকে নোয়াখালী জেলায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বুধবার (১৯ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ১৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় নোয়াখালীতে। টানা ভারী বর্ষণে জেলা শহর ও নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ অংশ প্লাবিত হয়ে পড়েছে। জলাবদ্ধতায় নাকাল হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
বিশেষ করে নোয়াখালী পৌরসভা এলাকাসহ বেশ কিছু নিচু এলাকা পানির নিচে চলে গেছে। কোথাও কোথাও রিকশা, অটো চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বহু বাসা-বাড়ি, দোকান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী ও রোগীদের চলাফেরায় মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
নোয়াখালী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ দিনে জেলায় গড়ে প্রতিদিন ৭০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এতে জেলার প্রধান শহর মাইজদী, চৌমুহনী, সোনাপুরসহ অধিকাংশ এলাকার সড়ক, অলিগলি ও বাজার এলাকাগুলো তলিয়ে গেছে। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত ও হাসপাতালমুখী মানুষকে পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।
আগামী দুই থেকে তিন দিন বৃষ্টির প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ১৩ তারিখ থেকে বৃষ্টি শুরু হলেও ১৯ তারিখ সব থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী এক-দুই দিন এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে কোনো ধরনের ভারী বজ্রঝড় বা শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা নেই।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, আমরা বেশ কিছু এলাকায় পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করছি। তবে টানা বৃষ্টির কারণে কাজ অনেকটা ব্যাহত হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অব্যাহত আছে।