ঢাকা ০১:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫

এই আগস্ট সেই আগস্ট

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ১০:১৯:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫
  • ১৭ বার দেখা হয়েছে

আমার-আপনার মতো লাখো সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন নিজের শক্তি পরখ করে নিতে। প্রমাণও এসেছিল হাতেনাতে। ঠিক দু’দিন বাদে, চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে।

বছর ঘুরে আবারও এলো আগস্ট। ফিরে তাকালেই এখন স্বপ্ন মনে হয়। সেই শহীদ মিনার, সেই লাখো মানুষের ঢল। সবাই মিলে এক কাতারে আসা। অভূতপূর্ব ক্ষণ!

এক দিকে মানুষের ওপর নেমে আসা অবর্ণনীয় অত্যাচার, আরেকদিকে সেই একই মানুষ, কিন্তু সব নিপীড়নের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানো অপ্রতিরোধ্য মূর্তিতে। এই দ্বিতীয় মানুষ হয়ে ওঠা নিজেকেই নতুন করে চেনা যেন!

জুলাই বাংলাদেশেকে পুনর্জন্ম দিয়েছে। পুনর্জন্ম দিয়েছে এদেশের মানুষদেরও।

“এত দিনে তার লাগিয়াছে ভালো –

আকাশ বাতাস বাহিরেতে আলো,

এবার বন্দী বুঝেছে, মধুর প্রাণের চাইতে ত্রাণ!”

নজরুলের ‘ফরিয়াদ’ কবিতা যেন মূর্ত হয়ে ধরা দিয়েছে ২৪-এর জুলাইয়ে রাস্তায় নেমে আসা প্রতিটি মানুষের মধ্যে। পুরো দেশটাই যে কারাগার হয়ে উঠেছিল! সেখানে ত্রাণকর্তা হয়ে উঠেছিল এ দেশের নারী-পুরুষ-শিশু।

আপন শক্তিকে আমরা চিনতে পেরেছিলাম বলেই মুক্তি এসেছে। আর যে মানুষ একবার নিজের শক্তিকে চিনতে পারে, তাকে আবারও নিষ্পেষণের নিগড়ে বাঁধে, এমন শক্তি আছে কার?

“কে আছে এমন ডাকু যে হরিবে আমার গোলার ধান?

আমার ক্ষুধার অন্নে পেয়েছি আমার প্রাণের ঘ্রাণ-

এতদিনে ভগবান!”

২০২৫ সালের ৩ আগস্ট দুটি সমাবেশ হলো ঢাকায়। শাহবাগে ছাত্রদল, আর শহীদ মিনারে এনসিপি। এর ঠিক এক বছর আগে সমাবেশ ছিল কেবল একটি। সেখানে এই রাজনৈতিক কর্মীরা বাদেও, আমার-আপনার মতো লাখো সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন নিজের শক্তি পরখ করে নিতে। প্রমাণও এসেছিল হাতেনাতে। ঠিক দু’দিন বাদে, চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে।

আজ জুলাইয়ের শক্তিগুলো বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরে আলাদা হয়ে তাদের দর্শন, তাদের রাজনীতি নিয়ে এগোচ্ছেন। করছেন সমাবেশ, পদযাত্রা। কখনো তাদের মতের মিল হচ্ছে, কখনো হচ্ছে বিরোধ। সামনাসামনি আলাপে সে বিরোধে উত্তাপ খুব বেশি না ছড়ালেও, ফোনের পর্দায় ছায়া-যুদ্ধে তা প্রায়শই শালীনতার মাত্রা ছাড়াচ্ছে। সে দুনিয়ায় এখন একটা বড় আলাপ, জুলাইয়ে কার অবদান কত বড়!

বাস্তব কিংবা সাইবার দুনিয়া, দু’জায়গাতেই এক দল মানুষ দিব্বি চলে যাচ্ছেন বিস্মৃতির অন্তরালে। এই মানুষেরা ঢাকার বছিলার বস্তি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন মৃত্যুর তোয়াক্কা না করে, এই মানুষেরা যাত্রাবাড়িতে লড়াই করেছেন নিরন্তর। এরাই পথে নেমেছেন খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী কিংবা সিলেট, চট্টগ্রামে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার আলাপে তাদের কথা শোনার চেষ্টা কই?

নির্বাচনের ক্ষণ তারিখ ঘোষণা হবে হবে অবস্থা এখন। কবির সুমনের ভাষায়—

‘ভোট মানুষের মুখে ব্যালট পেপার, দেখছেন, নেতা দেখছেন!’ অবস্থা। কিন্তু শুধু ব্যালটে সিল মেরেই কি এই বিপুল শক্তিধর জনতা আসলে কি চান তা জানা সম্ভব? শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর মাস-জোড়া সলাপরামর্শেই কি আসলে বেরিয়ে আসে ‘জনগণের চাওয়া’?

জুলাইয়ে মানুষ কেবল পেটের দায়ে নেমে আসেনি। জুলাইয়ের ডাকে আমরা পথে নেমেছিলাম মানুষ হিসেবে, এদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেদের মর্যাদা পুনরুদ্ধারে। এদেশের মায়েরা পিচঢালা রাজপথে, কখনো প্রখর রোদ, কখনো অবিশ্রাম বৃষ্টি উপেক্ষা করে পথে নেমেছিলেন তাদের সন্তানদের রক্ষা করতে। নারীরা পথে নেমেছিলেন মর্যাদা আদায় করে নিতে।

ভোটের ট্রেনে এক দৌড়ে উঠে পড়বার আগে নেতাদের সময় হবে তো একবার এদের দিকে ফিরে তাকাবার? রাজনৈতিক দলের বাইরেও বিপুল রাজনৈতিক শক্তি তথাকথিত অসংগঠিত জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে আছে। সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বাচন আয়োজনের ফাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের কি একটু অবসর হবে তাদের কাছে যাবার?

শুধু ঢাকা শহর, আরও নির্দিষ্ট করে বললে, শাহবাগ আর রমনা মিলেই বাংলাদেশ নয়। দেশটা তার চাইতে ঢের বড়। শুধু ঢাকার মানুষ জুলাই অভ্যুত্থান করেনি। তা হলে, ‘লং মার্চ টু ঢাকা’র প্রয়োজন পড়তো না।

তাই এক বছর পরে হলেও, এবার ঢাকার বাইরের মানুষের কথা শোনার আয়োজন করা হোক। ট্রেন বোঝাই করে দেশের চার মাথা থেকে ঢাকায় লোক এনে বড় বড় বক্তৃতা ঝাড়লেই সারা দেশের মানুষের ভাবনা বোঝা যায় না।

এদেশের মানুষ ধৈর্যশীল। তারা অপেক্ষা করে। ভাবে, কেউ না কেউ তাদের কথা শুনতে চাইবে। ভাবে, দেশের সরকার আর রাজনীতিবিদরা তাদের প্রাপ্য সম্মান আর গুরুত্বটুকু দেবে।

এর আগে ১৫ বছর ধরে একজন মনে করেছেন, তিনিই কেবল জানেন সবার কীসে ভালো! তাই একতরফা ‘উন্নয়নের’ তোড়ে নিজের মসনদ কখন ভেসে গেছে টের পাননি। তাই এবার কেন্দ্রের কর্তাদের সময় এসেছে প্রান্তের খবর নেওয়ার। সে খবর ঢাকায় বসে পাওয়া যাবে না। সে খবর নিতে হবে পর্ণকুটিরের দাওয়ায় বসে।

এদেশের মানুষ ধৈর্যশীল। তারা অপেক্ষা করে। ভাবে, কেউ না কেউ তাদের কথা শুনতে চাইবে। ভাবে, দেশের সরকার আর রাজনীতিবিদরা তাদের প্রাপ্য সম্মান আর গুরুত্বটুকু দেবে।

এখন পর্যন্ত এই অপেক্ষার সময় মোটাদাগে ১৫ বছর। কিন্তু এখন যারা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তারা যদি মনে করেন যেমন খুশি তেমন শাসন করে তারা আরও ১৫ বছর খোশমেজাজে কাটিয়ে দিতে পারবেন, তাহলে সে ভুল ভাঙতে খুব দেরি হওয়ার কথা নয়। ২৪-এর স্মৃতি এত সহজে হারাবার নয়।

কিন্তু ২৪ তো হাজারও মায়ের কোল খালি করার আর্তনাদে ভরা, ২৪ তো দৃষ্টি হারানো ভাই-বোনেদের অন্ধকারে ছাওয়া, ২৪ তো অঙ্গ হারানো মানুষগুলোর তছনছ হয়ে যাওয়া জীবন। তাই ২৪ বারেবারে ফিরে আসুক সেটা কারও কাম্য হতে পারে না।

আর সেটা যাতে না হয়, সে দায়িত্ব এ দেশের রাজনীতিবিদদের, সে দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। সাধারণকে ভুলে যাওয়ার পুনরাবৃত্তি যেন ২৪-এর জুলাইতেই শেষ হয়। নতুন বাংলাদেশ হোক সাধারণকে ধারণ করার।

মানজুর-আল-মতিন : আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট

এই আগস্ট সেই আগস্ট

প্রকাশিত : ১০:১৯:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫

আমার-আপনার মতো লাখো সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন নিজের শক্তি পরখ করে নিতে। প্রমাণও এসেছিল হাতেনাতে। ঠিক দু’দিন বাদে, চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে।

বছর ঘুরে আবারও এলো আগস্ট। ফিরে তাকালেই এখন স্বপ্ন মনে হয়। সেই শহীদ মিনার, সেই লাখো মানুষের ঢল। সবাই মিলে এক কাতারে আসা। অভূতপূর্ব ক্ষণ!

এক দিকে মানুষের ওপর নেমে আসা অবর্ণনীয় অত্যাচার, আরেকদিকে সেই একই মানুষ, কিন্তু সব নিপীড়নের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানো অপ্রতিরোধ্য মূর্তিতে। এই দ্বিতীয় মানুষ হয়ে ওঠা নিজেকেই নতুন করে চেনা যেন!

জুলাই বাংলাদেশেকে পুনর্জন্ম দিয়েছে। পুনর্জন্ম দিয়েছে এদেশের মানুষদেরও।

“এত দিনে তার লাগিয়াছে ভালো –

আকাশ বাতাস বাহিরেতে আলো,

এবার বন্দী বুঝেছে, মধুর প্রাণের চাইতে ত্রাণ!”

নজরুলের ‘ফরিয়াদ’ কবিতা যেন মূর্ত হয়ে ধরা দিয়েছে ২৪-এর জুলাইয়ে রাস্তায় নেমে আসা প্রতিটি মানুষের মধ্যে। পুরো দেশটাই যে কারাগার হয়ে উঠেছিল! সেখানে ত্রাণকর্তা হয়ে উঠেছিল এ দেশের নারী-পুরুষ-শিশু।

আপন শক্তিকে আমরা চিনতে পেরেছিলাম বলেই মুক্তি এসেছে। আর যে মানুষ একবার নিজের শক্তিকে চিনতে পারে, তাকে আবারও নিষ্পেষণের নিগড়ে বাঁধে, এমন শক্তি আছে কার?

“কে আছে এমন ডাকু যে হরিবে আমার গোলার ধান?

আমার ক্ষুধার অন্নে পেয়েছি আমার প্রাণের ঘ্রাণ-

এতদিনে ভগবান!”

২০২৫ সালের ৩ আগস্ট দুটি সমাবেশ হলো ঢাকায়। শাহবাগে ছাত্রদল, আর শহীদ মিনারে এনসিপি। এর ঠিক এক বছর আগে সমাবেশ ছিল কেবল একটি। সেখানে এই রাজনৈতিক কর্মীরা বাদেও, আমার-আপনার মতো লাখো সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন নিজের শক্তি পরখ করে নিতে। প্রমাণও এসেছিল হাতেনাতে। ঠিক দু’দিন বাদে, চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে।

আজ জুলাইয়ের শক্তিগুলো বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরে আলাদা হয়ে তাদের দর্শন, তাদের রাজনীতি নিয়ে এগোচ্ছেন। করছেন সমাবেশ, পদযাত্রা। কখনো তাদের মতের মিল হচ্ছে, কখনো হচ্ছে বিরোধ। সামনাসামনি আলাপে সে বিরোধে উত্তাপ খুব বেশি না ছড়ালেও, ফোনের পর্দায় ছায়া-যুদ্ধে তা প্রায়শই শালীনতার মাত্রা ছাড়াচ্ছে। সে দুনিয়ায় এখন একটা বড় আলাপ, জুলাইয়ে কার অবদান কত বড়!

বাস্তব কিংবা সাইবার দুনিয়া, দু’জায়গাতেই এক দল মানুষ দিব্বি চলে যাচ্ছেন বিস্মৃতির অন্তরালে। এই মানুষেরা ঢাকার বছিলার বস্তি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন মৃত্যুর তোয়াক্কা না করে, এই মানুষেরা যাত্রাবাড়িতে লড়াই করেছেন নিরন্তর। এরাই পথে নেমেছেন খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী কিংবা সিলেট, চট্টগ্রামে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার আলাপে তাদের কথা শোনার চেষ্টা কই?

নির্বাচনের ক্ষণ তারিখ ঘোষণা হবে হবে অবস্থা এখন। কবির সুমনের ভাষায়—

‘ভোট মানুষের মুখে ব্যালট পেপার, দেখছেন, নেতা দেখছেন!’ অবস্থা। কিন্তু শুধু ব্যালটে সিল মেরেই কি এই বিপুল শক্তিধর জনতা আসলে কি চান তা জানা সম্ভব? শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর মাস-জোড়া সলাপরামর্শেই কি আসলে বেরিয়ে আসে ‘জনগণের চাওয়া’?

জুলাইয়ে মানুষ কেবল পেটের দায়ে নেমে আসেনি। জুলাইয়ের ডাকে আমরা পথে নেমেছিলাম মানুষ হিসেবে, এদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেদের মর্যাদা পুনরুদ্ধারে। এদেশের মায়েরা পিচঢালা রাজপথে, কখনো প্রখর রোদ, কখনো অবিশ্রাম বৃষ্টি উপেক্ষা করে পথে নেমেছিলেন তাদের সন্তানদের রক্ষা করতে। নারীরা পথে নেমেছিলেন মর্যাদা আদায় করে নিতে।

ভোটের ট্রেনে এক দৌড়ে উঠে পড়বার আগে নেতাদের সময় হবে তো একবার এদের দিকে ফিরে তাকাবার? রাজনৈতিক দলের বাইরেও বিপুল রাজনৈতিক শক্তি তথাকথিত অসংগঠিত জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে আছে। সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বাচন আয়োজনের ফাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের কি একটু অবসর হবে তাদের কাছে যাবার?

শুধু ঢাকা শহর, আরও নির্দিষ্ট করে বললে, শাহবাগ আর রমনা মিলেই বাংলাদেশ নয়। দেশটা তার চাইতে ঢের বড়। শুধু ঢাকার মানুষ জুলাই অভ্যুত্থান করেনি। তা হলে, ‘লং মার্চ টু ঢাকা’র প্রয়োজন পড়তো না।

তাই এক বছর পরে হলেও, এবার ঢাকার বাইরের মানুষের কথা শোনার আয়োজন করা হোক। ট্রেন বোঝাই করে দেশের চার মাথা থেকে ঢাকায় লোক এনে বড় বড় বক্তৃতা ঝাড়লেই সারা দেশের মানুষের ভাবনা বোঝা যায় না।

এদেশের মানুষ ধৈর্যশীল। তারা অপেক্ষা করে। ভাবে, কেউ না কেউ তাদের কথা শুনতে চাইবে। ভাবে, দেশের সরকার আর রাজনীতিবিদরা তাদের প্রাপ্য সম্মান আর গুরুত্বটুকু দেবে।

এর আগে ১৫ বছর ধরে একজন মনে করেছেন, তিনিই কেবল জানেন সবার কীসে ভালো! তাই একতরফা ‘উন্নয়নের’ তোড়ে নিজের মসনদ কখন ভেসে গেছে টের পাননি। তাই এবার কেন্দ্রের কর্তাদের সময় এসেছে প্রান্তের খবর নেওয়ার। সে খবর ঢাকায় বসে পাওয়া যাবে না। সে খবর নিতে হবে পর্ণকুটিরের দাওয়ায় বসে।

এদেশের মানুষ ধৈর্যশীল। তারা অপেক্ষা করে। ভাবে, কেউ না কেউ তাদের কথা শুনতে চাইবে। ভাবে, দেশের সরকার আর রাজনীতিবিদরা তাদের প্রাপ্য সম্মান আর গুরুত্বটুকু দেবে।

এখন পর্যন্ত এই অপেক্ষার সময় মোটাদাগে ১৫ বছর। কিন্তু এখন যারা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তারা যদি মনে করেন যেমন খুশি তেমন শাসন করে তারা আরও ১৫ বছর খোশমেজাজে কাটিয়ে দিতে পারবেন, তাহলে সে ভুল ভাঙতে খুব দেরি হওয়ার কথা নয়। ২৪-এর স্মৃতি এত সহজে হারাবার নয়।

কিন্তু ২৪ তো হাজারও মায়ের কোল খালি করার আর্তনাদে ভরা, ২৪ তো দৃষ্টি হারানো ভাই-বোনেদের অন্ধকারে ছাওয়া, ২৪ তো অঙ্গ হারানো মানুষগুলোর তছনছ হয়ে যাওয়া জীবন। তাই ২৪ বারেবারে ফিরে আসুক সেটা কারও কাম্য হতে পারে না।

আর সেটা যাতে না হয়, সে দায়িত্ব এ দেশের রাজনীতিবিদদের, সে দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। সাধারণকে ভুলে যাওয়ার পুনরাবৃত্তি যেন ২৪-এর জুলাইতেই শেষ হয়। নতুন বাংলাদেশ হোক সাধারণকে ধারণ করার।

মানজুর-আল-মতিন : আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট