নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) দীর্ঘদিনের দুঃখ ১০ তলা একাডেমিক ভবন-৩ নির্মাণকাজের অচলাবস্থা অবশেষে ঘুচতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নপূরণে প্রি-একনেকে অনুমোদন পেয়েছে ৩৪২ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল।
জানা গেছে, শ্রেণিকক্ষ, ল্যাবরেটরি ও অফিস সংকটে ভুগছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। বিশেষ করে একাডেমিক ভবন-৩ এর কাজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। শিক্ষার্থীদের দাবি, ভবনটির কাজ শেষ হলেই নোবিপ্রবির শিক্ষা কার্যক্রমে নতুন গতি আসবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, একাডেমিক ভবন-৩ ও কেন্দ্রীয় গবেষণাগার নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের মাঝামাঝি। এর প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ১১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। তবে নির্মাণ প্রতিষ্ঠান দুটি হলো- জিকে বিল্ডার্স ও বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং। এরই মধ্যে ৩১ কোটি টাকার বেশি গ্রহণ করলেও প্রকল্পের অগ্রগতি ছিল অত্যন্ত ধীর।
২০১৯ থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত কোভিডের অজুহাতে প্রতিষ্ঠান দুটি কচ্ছপগতিতে কাজ চালায়। এরপর হঠাৎ করেই তারা কাজ বন্ধ করে দেয়। এ সময় জিকে বিল্ডার্সের মালিক জিকে শামিম টেন্ডার বাণিজ্য ও অর্থপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।
ফলে ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি বাতিল করে। দীর্ঘ সময় ধরে কাজ বন্ধ থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের উদাসীনতাকেও দায়ী করেছেন। তবে নতুন অনুমোদনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আবারও ফিরছে আশার আলো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নোবিপ্রবি দেশের অন্যতম আধুনিক গবেষণা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠবে।
নোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক বলেন, নোবিপ্রবির দীর্ঘদিনের দুঃখের নাম ছিল ‘একাডেমিক ভবন-৩’। শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব ও গবেষণার সংকটে জর্জরিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় আশি ভাগ সমস্যার মূলে ছিল এই অসমাপ্ত ভবনটি। বহু বছর ধরে প্রকল্পটি আটকে থাকায় থমকে ছিলো নোবিপ্রবির অগ্রযাত্রা।
তিনি আরও বলেন, এবার সেই দুঃখ ঘুচতে যাচ্ছে। প্রি-একনেক সভায় প্রকল্পের অনুমোদনই ছিল মূল চ্যালেঞ্জ। সেটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া বাকি। সবকিছুর সমাধান হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। নোবিপ্রবির দুঃখ হয়তো অচিরেই শেষ হবে। নোবিপ্রবির দুঃখ ঘুচুক, কষ্টের দিন শেষ হোক, এগিয়ে যাক প্রিয় নোবিপ্রবি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, প্রি-একনেক সভায় আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্নের প্রকল্পের অনুমোদন পাওয়া নোবিপ্রবি পরিবারের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। একাডেমিক ভবন-৩ নির্মাণ কাজের স্থবিরতা আমাদের একাডেমিক ও গবেষণার অগ্রযাত্রায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই অনুমোদনের মাধ্যমে সেই বাধা দূর হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ সংকট, ল্যাবরেটরি সমস্যা ও গবেষণা অবকাঠামোর অভাব অনেকটাই দূর হবে। এটি নোবিপ্রবিকে একটি আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নিতে সহায়তা করবে।

ডেস্ক রিপোর্ট 























