বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও জনগণের যোগাযোগ আরও বাড়াতে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কুয়ালালামপুর রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নেতারা।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাই-কমিশনার মোহাম্মদ শুহাদা ওসমান।
চেম্বার প্রশাসক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এম. এ. ছালাম, মালয়েশিয়ার অনারারি কনসাল মোহাম্মদ আক্তার পারভেজ, সাবেক পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, ব্যবসায়ী নেতা একরামুল করিম চৌধুরী, হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, ওয়াহিদ আলম ও আমিনা শাহিন বক্তব্য দেন। হাই-কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি হাজওয়ান বিন হাসনুলসহ কয়েকজন কূটনীতিকও উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় হাই-কমিশনার বলেন, আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কুয়ালালামপুর সফরে পাঁচটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। তিনি জানান, আসিয়ান অঞ্চলের বাইরে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। দেশটিতে প্রায় ৯ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ দিনদিন বাড়ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক চিকিৎসাপ্রার্থী বিদেশে যান—মালয়েশিয়ার আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা তাদের জন্য নতুন গন্তব্য হতে পারে। পাশাপাশি হালাল সনদ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ হালাল পণ্যের রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চেম্বার প্রশাসক নূরুল্লাহ নূরী বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার হলেও দুই দেশের মধ্যে বৈষম্যপূর্ণ বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়া বাংলাদেশে রপ্তানি করেছে ২০৬.৬ মিলিয়ন ডলার পণ্য, যেখানে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করেছে মাত্র ৩৮.২ মিলিয়ন ডলার।
তিনি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের সুযোগ নিয়ে চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল, বে-টার্মিনাল ও রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে ম্যানুফ্যাকচারিং, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ইলেকট্রনিক্স, জাহাজ নির্মাণ, শিপিং ও লজিস্টিকস খাতে মালয়েশিয়ান বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ভোজ্যতেল বাজারে মালয়েশিয়ার পাম তেলের বড় চাহিদা রয়েছে। তারা আশিয়ানে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিতে মালয়েশিয়ার সমর্থন, ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং রাবার ও শিপিং খাতে যৌথ বিনিয়োগের প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের নিয়মিত সফর এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম-কুয়ালালামপুর সরাসরি ফ্লাইট চালুর ওপর জোর দেন তারা।

ডেস্ক রিপোর্ট 






















