ঢাকা ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

শিক্ষাবিদ যতীন সরকারকে ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায়

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০২:০৬:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
  • ৮৯ বার দেখা হয়েছে

নেত্রকোণা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকারকে ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানিয়েছে জেলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন, জেলা প্রশাসনসহ সর্বস্তরের জনগণ। বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শহীদ মিনারে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে নিয়ে আসা হয় অধ্যাপক যতীন সরকারের মরদেহ।

শহীদ মিনারে মরদেহ রাখার পর একে একে শ্রদ্ধা জানাতে আসে নেত্রকোণা জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, নেত্রকোণা পৌরসভা, নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়, শতদল গোষ্ঠী, স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতি, নারী প্রগতি, নেত্রকোণা সরকারি কলেজসহ নেত্রকোণা জেলার সর্বস্তরের জনগণ। এ সময় যতীন সরকারের ছেলে সুমন সরকার, মেয়ে সুদিপ্তা সরকার, তার ভক্ত, সহকর্মীসহ সমাজের নানা শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে অধ্যাপক যতীন সরকারকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন উপস্থিত প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাত ৯টায় তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় অজহর রোডে অবস্থিত নেত্রকোণা জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কার্যালয়ে। সেখানে তাকে শ্রদ্ধা জানানো শেষে নিয়ে যাওয়া হবে শহরের সাতপাই এলাকায় অবস্থিত তার স্মৃতি বিজড়িত বাসস্থান বানপ্রস্থে।

সেখানে মরদেহ রাত ১১টা পর্যন্ত রাখা হবে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। তারপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে নেত্রকোণা মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য। তবে তার মেয়ে সুদীপ্তার স্বামী আসতে দেরি হওয়ার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান বিলম্ব হতে পারে।

এর আগে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকার মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ বহু স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

সংস্কৃতির ধারবাহিক সংগ্রামের এক অনির্বাণ যোদ্ধা অধ্যাপক যতীন সরকার। সাম্যবাদী ও মানবতাবাদী লেখক , প্রাবন্ধিক যতীন সরকার পেয়েছেন রাষ্ট্রের সর্ব্বোচ্চ সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার, পদক ও সম্মাননা ।

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম চন্দপাড়ায় ১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম যতীন সরকারের। পরিবারটিতে অভাব-অনটন  থাকলেও গ্রামীণ সম্ভ্রান্ত শিক্ষিত পরিবার হওয়ায় শৈশবেই শিখেছিলেন সংস্কৃত সাহিত্যের পাঠ।

আর্থিক দূরাবস্থার কারণে শিক্ষা জীবনকে টেনে নিতে টিউশনি, শিক্ষকতা থেকে শুরু করে পান সিগারেটের দোকানদারি তিনি করেছেন। এভাবেই ১৯৫৪ সালে মেট্রিকুলেশন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম এ পাস করেন। পরে তিনি ১৯৬৪ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ নাসিরাবাদ কলেজে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন। বর্তমানে তিনি সহধর্মিণী কাননবালা সরকারসহ নেত্রকোণা পৌর শহরের সাতপাই এলাকায় ‘বানপ্রস্থ’ বাসভবনে বসবাস করেছেন।

রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান বনানীতে

শিক্ষাবিদ যতীন সরকারকে ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায়

প্রকাশিত : ০২:০৬:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

নেত্রকোণা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকারকে ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানিয়েছে জেলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন, জেলা প্রশাসনসহ সর্বস্তরের জনগণ। বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শহীদ মিনারে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে নিয়ে আসা হয় অধ্যাপক যতীন সরকারের মরদেহ।

শহীদ মিনারে মরদেহ রাখার পর একে একে শ্রদ্ধা জানাতে আসে নেত্রকোণা জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, নেত্রকোণা পৌরসভা, নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়, শতদল গোষ্ঠী, স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতি, নারী প্রগতি, নেত্রকোণা সরকারি কলেজসহ নেত্রকোণা জেলার সর্বস্তরের জনগণ। এ সময় যতীন সরকারের ছেলে সুমন সরকার, মেয়ে সুদিপ্তা সরকার, তার ভক্ত, সহকর্মীসহ সমাজের নানা শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে অধ্যাপক যতীন সরকারকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন উপস্থিত প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাত ৯টায় তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় অজহর রোডে অবস্থিত নেত্রকোণা জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কার্যালয়ে। সেখানে তাকে শ্রদ্ধা জানানো শেষে নিয়ে যাওয়া হবে শহরের সাতপাই এলাকায় অবস্থিত তার স্মৃতি বিজড়িত বাসস্থান বানপ্রস্থে।

সেখানে মরদেহ রাত ১১টা পর্যন্ত রাখা হবে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। তারপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে নেত্রকোণা মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য। তবে তার মেয়ে সুদীপ্তার স্বামী আসতে দেরি হওয়ার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান বিলম্ব হতে পারে।

এর আগে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকার মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ বহু স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

সংস্কৃতির ধারবাহিক সংগ্রামের এক অনির্বাণ যোদ্ধা অধ্যাপক যতীন সরকার। সাম্যবাদী ও মানবতাবাদী লেখক , প্রাবন্ধিক যতীন সরকার পেয়েছেন রাষ্ট্রের সর্ব্বোচ্চ সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার, পদক ও সম্মাননা ।

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম চন্দপাড়ায় ১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম যতীন সরকারের। পরিবারটিতে অভাব-অনটন  থাকলেও গ্রামীণ সম্ভ্রান্ত শিক্ষিত পরিবার হওয়ায় শৈশবেই শিখেছিলেন সংস্কৃত সাহিত্যের পাঠ।

আর্থিক দূরাবস্থার কারণে শিক্ষা জীবনকে টেনে নিতে টিউশনি, শিক্ষকতা থেকে শুরু করে পান সিগারেটের দোকানদারি তিনি করেছেন। এভাবেই ১৯৫৪ সালে মেট্রিকুলেশন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম এ পাস করেন। পরে তিনি ১৯৬৪ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ নাসিরাবাদ কলেজে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন। বর্তমানে তিনি সহধর্মিণী কাননবালা সরকারসহ নেত্রকোণা পৌর শহরের সাতপাই এলাকায় ‘বানপ্রস্থ’ বাসভবনে বসবাস করেছেন।