যশোরের কেশবপুরে নদীপাড়ের মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণে বাধা দেওয়ায় ইউনিয়ন প্রশাসককে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার উপজেলার মঙ্গলকোট ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলকোট ব্রিজের মাথা থেকে পূজামণ্ডপ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চারশ ফুট দীর্ঘ ইট বিছানো একটি রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে, যার বাজেট দুই লাখ টাকা। কাজটি পরিচালনা করছেন মঙ্গলকোট ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম।
সোমবার দুপুরে রাস্তায় ব্যবহারের জন্য মঙ্গলকোট ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে প্রবাহিত বুড়িভদ্রা নদীর পাড় থেকে পাওয়ার ট্রিলারের মাধ্যমে মাটি কেটে আনা হচ্ছিল। বিষয়টি দেখে বাধা দেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা প্রশাসক ও উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ কুমার বিশ্বাস।
প্রশাসকের বাধার খবর পেয়ে ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম তার লোকজনসহ সেখানে হাজির হয়ে প্রশাসককে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। তারা হুমকি দেন, নদীর মাটি কাটতে না দিলে প্রশাসককে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। এরপর আনুমানিক দেড়শ মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে প্রশাসককে অবরুদ্ধ করে রাখে।

পরবর্তীতে বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হলে তিনি সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ নেওয়াজকে ঘটনাস্থলে পাঠান। এরপর তিনি পুলিশসহ গিয়ে প্রশাসককে উদ্ধার করেন।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পূজামণ্ডপের পাশ থেকে শুরু করে প্রায় ১০০ ফুট রাস্তার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে সেখানে ব্যবহৃত ইট ছিল ২ নম্বর মানের এবং ইটের নিচে বালির ব্যবহার করা হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তার নির্মাণকাজ অত্যন্ত নিম্নমানের। একইসঙ্গে দেখা যায়, বুড়িভদ্রা নদীর পাড় থেকে প্রায় ৩০ ফুট অংশের মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম দাবি করেন, রাস্তায় ব্যবহারের জন্য নদীর মাটি নেওয়া হয়েছে, তবে প্রশাসককে অবরুদ্ধ করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগও অস্বীকার করেন।
অন্যদিকে, প্রশাসক সুদীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, তিনি নদীর মাটি কাটতে বাধা দিলে ইউপি সদস্য ও তার লোকজন তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং পরিষদে তালা লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তিনি এ বিষয়ে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, মৎস্য কর্মকর্তার অভিযোগের ভিত্তিতে ইউপি সদস্য কামরুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডেস্ক রিপোর্ট 























