নদীর বুকে ঢেউয়ের তালে এগিয়ে চলা নৌকা-বৈঠার ঝাপটার সঙ্গে ঢাক-ঢোল আর দর্শকদের উচ্ছ্বাসে রঙিন হয়ে ওঠে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ির বড়াল নদী। এমন পরিবেশে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হলো ৪৬তম জাতীয় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশনের আয়োজনে এবং সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’-এর একটি বিশেষ পর্ব।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব-উল-আলম। তিনি নৌকাবাইচকে বাংলাদেশের নদীমাতৃক সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি টিকিয়ে রাখা মানেই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখা।
এদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আটটি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। নদীর পাড়ে ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ নৌকায় বসে, আবার কেউ সেতুর ওপরে দাঁড়িয়ে প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। শিশুদের উল্লাসধ্বনি, তরুণদের স্লোগান আর প্রবীণদের গভীর মনোযোগে চারপাশ হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।
তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে বৈঠার ঝাপটায় এগিয়ে চলে সারিবদ্ধ নৌকা। নদীর বুক যেন কাঁপিয়ে ওঠে সেই ছন্দে। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
প্রথম স্থান অর্জন করে শেরে বাংলা প্রামাণিক ফাইটার্স, ভিটেপাড়া দল এবং তারা পুরস্কার হিসেবে পায় ১ লাখ টাকা। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ভাটিপাড়া আজম ব্রাদার্স। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৭৫ হাজার টাকা। তৃতীয় হয় বাংলার বাঘ সংঘ। যারা পায় ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার।
বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হলে আনন্দে ভরে ওঠে তাদের মুখ। সেই উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে দর্শকদের মধ্যেও।