মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার ভেতরে মোটরসাইকেল রাখতে নিষেধ করায় এক নারী পুলিশ সদস্যসহ দুইজনকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে খন্দকার আকবর হোসেন বাবলু ও ঘিওর উপজেলা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর কাউসারসহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত পৌনে ৯টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবালয় সার্কেল) সাদিয়া সাবরিনা চৌধুরী থানা পুলিশের সদস্যদের লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সন্ধ্যার দিকে থানার ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মানিকগঞ্জ-১ আসনে এমপি প্রার্থী খন্দকার আকবর হোসেন বাবুল ও ঘিওর সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর কাউসারের নেতৃত্বে একটি মোটরসাইকেলের বহর থানার ভেতরে ঢুকে এবং থানার ভেতরে মোটরসাইকেল রাখতে চায়। এ সময় থানায় দায়িত্বে থাকা নারী পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল) থানার ভেতরে মোটরসাইকেল রাখতে নিষেধ করলে ঘিওর সদর বিএনপির সাধারণ সম্পাক মীর কাউসারসহ বাবলুর অনুসারী বিএনপির নেতাকর্মীরা ওই নারী পুলিশ কনস্টেবলকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এরপর ওই নারী পুলিশ কনস্টেবল থানার ভেতরে গিয়ে টিউটি অফিসার এএসআই রফিককে বিষয়টি জানান। ডিউটি অফিসার রফিক তাদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলেন এবং থানার ভিতরে মোটরসাইকেল না রাখতে অনুরোধ করেন।
এরপর এমপি প্রার্থী খন্দাকার আকবর হোসেন বাবুল ও ঘিওর সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর কাউসার সঙ্গে থানার ডিউটি অফিসার রফিককের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাবলুর উপস্থিতিতেই তার অনুসারীরা থানা পুলিশ সদস্যদের লাঞ্ছিত করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে থানার আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এ সময় বিএনপির নেতা খন্দকার আকবর হোসেন বাবুল তার অনুসারীদের নিয়ে থানার ভেতর থেকে বেরিয়ে যান।
জানা গেছে, থানা থেকে বেরিয়ে বিএনপির নেতা বাবলু তার অনুসারিদের নিয়ে ঘিওর মাঠে মেলায় চলে যান এবং রাজনৈতিক বক্তব্য দেন। এসময় তিনি আইনশৃঙ্খলা ও মেলার পরিস্থিত স্বাভাবিক রাখতে পুলিশকে অনুরোধ করেন। তবে সেখানেও তার বক্তব্যে পুলিশকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন বলে জানা যায়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও এমপি প্রার্থী খন্দকার আকবর হোসেন বাবলু বলেন, আমি থানার ভেতরে ছিলাম না, আমার গাড়ি বাহিরে ছিল। পুলিশের কাছে আমার নেতাকর্মীরা হেনস্থার শিকার হয়েছে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে হয়তো পুলিশের এএসআই রফিকের কথা কাটাকাটি হতে পারে, লাঞ্ছিত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবালয় সার্কেল) সাদিয়া সাবরিনা চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছি না।