ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১২ থেকে ১৪ সদস্য নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ও ত্রাণ উপদেষ্টা বীর প্রতীক ফারুক-ই আজম।
রোববার (১৯ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অগ্নি নির্বাপন নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, এ কমিটি স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনির নেতৃত্বে হচ্ছে। আগামী ৫ নভেম্বর এর মধ্যে এ কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আজ আমরা দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলেছি। বহু কিছু নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিবকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করবো। তারা শুধু আগুন, নয় অন্যান্য দুর্যোগ যেগুলো হয় সেসব নিয়েও যাতে যথাযথভাবে ব্যবস্থা নিতে পারি। কমিটি সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে একটা রিপোর্ট দেবে।

সচিবালয়েও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে, সেখানে তদন্ত কমিটি কি পেল, কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়টাও এখানে উল্লেখ হয়েছে, সেখানে কিছু কিছু কাজ হয়েছে, কিছু কিছু কাজ হয়নি। কেন হয়নি সেটার জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে। এছাড়া আরো বহু স্থাপনা আছে যেখানে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা আছে কিন্তু কার্যকর নেই। সেগুলো কেন নেই সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।
একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে নাশকতার কোনো শঙ্কা করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু বলতে পারছি না।
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত কমিটিতে কাদের গাফিলতি দেখতে পাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তখনও স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বেই কমিটি হয়েছিল। ফলে সচিবের কাছ থেকেই জানতে চাওয়া হয়েছে।
কমিটির পর্যালোচনায় কি পাওয়া গেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরাতো এতক্ষণ এসব নিয়েই আলোচনা করলাম। আমাদের সক্ষমতা ও অক্ষমতা সবটা নিয়েই আলোচনা করেছি। বহু কিছু আছে, এধরনের ঘটনাগুলো তদন্ত করার মতো টেকনিক্যাল সরঞ্জাম নেই। আমাদের সীমাবদ্ধতা নিয়েও আলোচনা করেছি। আমরা আশা করছি ৫ নভেম্বরের মধ্যে একটি পরিচ্ছন্ন রিপোর্ট পাবো। তখন আপনাদের জানানো যাবে।
সচিবালয়ের ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াও হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, সে বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে জানতে চেয়েছি। ৫ নভেম্বরের পর আমরা সুস্পষ্ট বলতে পারবো।
বিমানবন্দরের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস সঠিক সময়ে যায়নি এবং ফায়ার সার্ভিস থেকে বলা হয়েছে সেখানে অগ্নিনির্বাপণের পরিপূর্ণ ব্যবস্থা ছিলো না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিপূর্ণ সবটাতে ছিলো তা না, কিছু কিছু ঘাটতি ছিলো। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ফায়ার সিস্টেম ছিলো। সেটা তাদের পর্যাপ্ত ছিলো না। সে কারণে এটা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা সব কিছু জানতে চেয়েছি। কেন আরো দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি? রিপোর্ট পেলেই আমরা বিস্তারিত জানতে পারবো।
প্রযুক্তিগত স্বল্পতার কথা বলেছেন, দেশের বাইরে থেকে আনার কোনো চিন্তা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের চিন্তার মধ্যে আছে। কমিটি যদি সুপারিশ করে। তাহলে বাইরে থেকে প্রযুক্তি আনা যেতে পারে।
সরকারের সক্ষমতার অভাব আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগুনতো সব জায়গায় লাগতেই পারে। সেটা নির্বাপণের বিষয়ে সরকারের সক্ষমতা ও অক্ষমতার একটা বিষয় আছে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানেরও কিছু দায় থাকে। সেগুলো আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখবো।
অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়ক্ষতি কি আপনারা নিরূপণ করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, না, সেজন্য বিমানবন্দর অথরিটি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারা সেটা নিরূপণ করবে।