ঢাকা ০২:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

দুদকের কব্জায় দুর্নীতির ২৬ হাজার কোটি টাকা ১১ মাসে

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ১২:২১:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • ২ বার দেখা হয়েছে

গণ অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে দুর্নীতিবাজদের ধরপাকড়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধে রেকর্ড সাফল্য দেখিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১১ মাসে দেশে-বিদেশে দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী, সরকারি লোপাটকারী এবং ঋণখেলাপিসহ তিন শতাধিক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৬ হাজার ১৩ কোটি টাকার বেশি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

যেখানে ২০২৪ সালের পুরো সময়ে ক্রোক ও অবরুদ্ধের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৬১ কোটি টাকা। শুধু তাই নয় ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে ক্রোক ও অবরুদ্ধ সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেল ১১ মাসে সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে দুদক।

দুদকের বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় গত ১১ মাসে (ডিসেম্বর-অক্টোবর) আদালতের নির্দেশনায় ওই সব সম্পদ ক্রোক বা অবরুদ্ধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সার্বিক বিষয়ে দুদকের কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, দুদকের দন্ত ও নক রয়েছে। যা আরও শার্প করা হয়ত দরকার আছে। একটা কথা বলতে চাই, দুদক কিন্তু যথার্থ আইনি শক্তিতে মহিয়ান। বিচারকাজে গতিশীল করতে দুদকের আরও বিশেষ আদালত প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আদালত ও দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ১১ মাসে দেশে ৩ হাজার ৪৫৭ কোটি ৮৩ লাখ ৪৭ হাজার ক্রোক করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দেশে ফ্রিজ ২২ হাজার ২২৬ কোটি ৭৯ লাখ ৩২ হাজার ও বিদেশে ৩২৮ কোটি ৩৮ লাখ ১৩ হাজার ফ্রিজ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে দেশে-বিদেশে প্রায় ২৬ হাজার ১৩ কোটি ২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ক্রোক ও ফ্রিজ করা হয়েছে।

অন্যদিকে ১১ মাসে বিচারাধীন মামলার মধ্যে ২৪৯টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যেখানে সাজা হয়েছে ১২৬টির, খালাস ১২৩টি, জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৫ হাজার ৫৮ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৩২১ কোটি টাকা।

১১ মাসের মামলা ও চার্জশিটের পরিসংখ্যানের বিষয় জানা যায়, গত ১১ মাসে ১১ হাজার ৬৩০টি অভিযোগ এলেও মাত্র ৯৬০টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় এনফোর্সমেন্ট হয়েছে ৭৯৮টি। এর মধ্যে অনুসন্ধান হচ্ছে ১৮৮টির, মামলা হয়েছে ২৮টি এবং চারটি ফাঁদ পেতে অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। আর গণশুনানি হয়েছে ২৩টি।

দুদক জানায়, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে মোট ৫১২টি মামলা দায়েরের মাধ্যমে ২ হাজার ১৯১ জনকে আসামি করা হয়েছে। মোট চার্জশিট দেওয়া হয়েছে ৩১৫টির, এতে আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৭৮ জনকে। এফআরটি বা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ৭৩টি।

গত বছরের ৫ আগস্ট জনবিক্ষোভের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও দুর্নীতির প্রমাণ পায় সংস্থাটি। এর পরই একের পর এক মামলা করতে থাকে অন্যদিকে আদালতের নির্দেশে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হচ্ছে। যা এখনও চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

দুদকের কব্জায় দুর্নীতির ২৬ হাজার কোটি টাকা ১১ মাসে

প্রকাশিত : ১২:২১:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

গণ অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে দুর্নীতিবাজদের ধরপাকড়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধে রেকর্ড সাফল্য দেখিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১১ মাসে দেশে-বিদেশে দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী, সরকারি লোপাটকারী এবং ঋণখেলাপিসহ তিন শতাধিক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৬ হাজার ১৩ কোটি টাকার বেশি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

যেখানে ২০২৪ সালের পুরো সময়ে ক্রোক ও অবরুদ্ধের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৬১ কোটি টাকা। শুধু তাই নয় ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে ক্রোক ও অবরুদ্ধ সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেল ১১ মাসে সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে দুদক।

দুদকের বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় গত ১১ মাসে (ডিসেম্বর-অক্টোবর) আদালতের নির্দেশনায় ওই সব সম্পদ ক্রোক বা অবরুদ্ধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সার্বিক বিষয়ে দুদকের কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, দুদকের দন্ত ও নক রয়েছে। যা আরও শার্প করা হয়ত দরকার আছে। একটা কথা বলতে চাই, দুদক কিন্তু যথার্থ আইনি শক্তিতে মহিয়ান। বিচারকাজে গতিশীল করতে দুদকের আরও বিশেষ আদালত প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আদালত ও দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ১১ মাসে দেশে ৩ হাজার ৪৫৭ কোটি ৮৩ লাখ ৪৭ হাজার ক্রোক করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দেশে ফ্রিজ ২২ হাজার ২২৬ কোটি ৭৯ লাখ ৩২ হাজার ও বিদেশে ৩২৮ কোটি ৩৮ লাখ ১৩ হাজার ফ্রিজ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে দেশে-বিদেশে প্রায় ২৬ হাজার ১৩ কোটি ২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ক্রোক ও ফ্রিজ করা হয়েছে।

অন্যদিকে ১১ মাসে বিচারাধীন মামলার মধ্যে ২৪৯টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যেখানে সাজা হয়েছে ১২৬টির, খালাস ১২৩টি, জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৫ হাজার ৫৮ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৩২১ কোটি টাকা।

১১ মাসের মামলা ও চার্জশিটের পরিসংখ্যানের বিষয় জানা যায়, গত ১১ মাসে ১১ হাজার ৬৩০টি অভিযোগ এলেও মাত্র ৯৬০টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় এনফোর্সমেন্ট হয়েছে ৭৯৮টি। এর মধ্যে অনুসন্ধান হচ্ছে ১৮৮টির, মামলা হয়েছে ২৮টি এবং চারটি ফাঁদ পেতে অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। আর গণশুনানি হয়েছে ২৩টি।

দুদক জানায়, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে মোট ৫১২টি মামলা দায়েরের মাধ্যমে ২ হাজার ১৯১ জনকে আসামি করা হয়েছে। মোট চার্জশিট দেওয়া হয়েছে ৩১৫টির, এতে আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৭৮ জনকে। এফআরটি বা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ৭৩টি।

গত বছরের ৫ আগস্ট জনবিক্ষোভের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও দুর্নীতির প্রমাণ পায় সংস্থাটি। এর পরই একের পর এক মামলা করতে থাকে অন্যদিকে আদালতের নির্দেশে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হচ্ছে। যা এখনও চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।