ঢাকা ০৫:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

রাবি সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০১:৪৯:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
  • ১ বার দেখা হয়েছে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা হোসেনের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনার পর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং রাতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ করেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শারীরিক শিক্ষা বিভাগ ও মেডিকেল সেন্টারের অবহেলা এবং দায়িত্বহীনতার কারণেই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোসা. রোখসানা বেগম প্রাথমিকভাবে দাবি করেছেন, সায়মার মৃত্যু ‘হার্ট অ্যাটাক’র কারণে হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ শুরু করেন।

রাত ৯টার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদক্ষেপে অসন্তোষ জানিয়ে তারা ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটনে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা এবং সুইমিংপুল ও চিকিৎসা সেবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।

এ সময় রাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি (সহ সভাপতি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, আমরা এতক্ষণ ধরে আন্দোলন করতেছি, কিন্তু প্রশাসনের থেকে প্রতিনিধি আসতে এত সময় লাগে কেন জানি না। প্রশাসন মনে করে ওরা আন্দোলন করতেছে করুক, তারপর যখন ক্লান্ত হয়ে যাবে তখন আমরা চলে যাব৷ প্রত্যেকটা আন্দোলনেই তারা এমন করেছে। আমাদের ভাই-বোনদের ইচ্ছে করে কষ্ট দিচ্ছে। আমরা যদি নির্দিষ্ট সময় না দেই, তারা এমনভাবেই চলতে থাকবে। শুধু মন্নুজান হল না, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটা হলের শিক্ষার্থীরা সঠিক তদন্ত ও বিচার চাই৷ আমরা এখান থেকে বিচার নিশ্চিত করে যাবো ইনশাআল্লাহ।

রাকসুর জিএস (সাধারণ সম্পাদক) সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘কয়েকটা বিষয় প্রশাসনকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে। একজন শিক্ষার্থী সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে, তাহলে তার ফিটনেস কেন চেক করা হয়নি? ফিটনেস চেক ছাড়া শরীরচর্চা বিভাগ শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকা একজন শিক্ষার্থীকে কীভাবে সাঁতারের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অনুমতি দিল? এটার জবাব তাদের দিতে হবে। সুইমিংপুলে স্বচ্ছ পানি কেন ছিল না এবং আধা ঘণ্টা ধরে একজন শিক্ষার্থী সুইমিং পুলে থাকলেও সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা তা কেন দুর্ঘটনার সময় দেখতে পেলেন না—তারও জবাব দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়াও রাবি মেডিকেল সেন্টারে আগেও বাংলা বিভাগের এক ভাইকে নিয়ে গেলে আধমরা অবস্থায় রামেকে পাঠানো হয়। আজও তারা আমার বোন সায়মাকে সঠিকভাবে কোনো চিকিৎসা দিতে পারেনি কেন? এবং অবশ্যই সায়মা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত অনতিবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, আমরা ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সেখানে ফরিদ সাহবকে (উপ উপাচার্য) রাখা হয়েছে যাতে কোনো গড়িমসি না হয়। তারা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে একটা প্রাথমিক রিপোর্ট দেবেন। সেটা দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।

জনপ্রিয় সংবাদ

রাবি সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

প্রকাশিত : ০১:৪৯:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা হোসেনের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনার পর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং রাতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ করেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শারীরিক শিক্ষা বিভাগ ও মেডিকেল সেন্টারের অবহেলা এবং দায়িত্বহীনতার কারণেই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোসা. রোখসানা বেগম প্রাথমিকভাবে দাবি করেছেন, সায়মার মৃত্যু ‘হার্ট অ্যাটাক’র কারণে হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ শুরু করেন।

রাত ৯টার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদক্ষেপে অসন্তোষ জানিয়ে তারা ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটনে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা এবং সুইমিংপুল ও চিকিৎসা সেবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।

এ সময় রাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি (সহ সভাপতি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, আমরা এতক্ষণ ধরে আন্দোলন করতেছি, কিন্তু প্রশাসনের থেকে প্রতিনিধি আসতে এত সময় লাগে কেন জানি না। প্রশাসন মনে করে ওরা আন্দোলন করতেছে করুক, তারপর যখন ক্লান্ত হয়ে যাবে তখন আমরা চলে যাব৷ প্রত্যেকটা আন্দোলনেই তারা এমন করেছে। আমাদের ভাই-বোনদের ইচ্ছে করে কষ্ট দিচ্ছে। আমরা যদি নির্দিষ্ট সময় না দেই, তারা এমনভাবেই চলতে থাকবে। শুধু মন্নুজান হল না, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটা হলের শিক্ষার্থীরা সঠিক তদন্ত ও বিচার চাই৷ আমরা এখান থেকে বিচার নিশ্চিত করে যাবো ইনশাআল্লাহ।

রাকসুর জিএস (সাধারণ সম্পাদক) সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘কয়েকটা বিষয় প্রশাসনকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে। একজন শিক্ষার্থী সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে, তাহলে তার ফিটনেস কেন চেক করা হয়নি? ফিটনেস চেক ছাড়া শরীরচর্চা বিভাগ শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকা একজন শিক্ষার্থীকে কীভাবে সাঁতারের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অনুমতি দিল? এটার জবাব তাদের দিতে হবে। সুইমিংপুলে স্বচ্ছ পানি কেন ছিল না এবং আধা ঘণ্টা ধরে একজন শিক্ষার্থী সুইমিং পুলে থাকলেও সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা তা কেন দুর্ঘটনার সময় দেখতে পেলেন না—তারও জবাব দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়াও রাবি মেডিকেল সেন্টারে আগেও বাংলা বিভাগের এক ভাইকে নিয়ে গেলে আধমরা অবস্থায় রামেকে পাঠানো হয়। আজও তারা আমার বোন সায়মাকে সঠিকভাবে কোনো চিকিৎসা দিতে পারেনি কেন? এবং অবশ্যই সায়মা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত অনতিবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, আমরা ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সেখানে ফরিদ সাহবকে (উপ উপাচার্য) রাখা হয়েছে যাতে কোনো গড়িমসি না হয়। তারা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে একটা প্রাথমিক রিপোর্ট দেবেন। সেটা দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।