ঢাকা ০৮:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

জাতীয় দলে ফিরে আসছেন বিশ্বনাথ ঘোষ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০৯:৪৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
  • ৭৬ বার দেখা হয়েছে

জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ। রাইট ফুলব্যাক পজিশনে তার অবস্থান ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বি। সেই বিশ্বনাথ গত বছর সেপ্টেম্বরে ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে আঘাত পান। এরপর থেকে ফুটবলের বাইরে। ঘরোয়া ফুটবলে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে পুরো মৌসুমই আর খেলতে পারেনি। জাতীয় দলের পাঁচটি ম্যাচ মিস করেছেন।

বিশ্বনাথ হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েছিলেন সেপ্টেম্বরে। অক্টোবর-নভেম্বর দুই মাস প্রকৃত সমস্যা নির্ণয়েই ক্ষেপণ হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর থাইল্যান্ডে অস্ত্রপচার করালেও এখনো মাঠে ফিরতে পারেননি। আগামী জুলাই থেকে বল নিয়ে নামার অপেক্ষায় টাঙ্গাইলের এই ফুটবলার, ‘আমি সম্প্রতি জিম ও ওয়েট নেয়া শুরু করেছি। আশা করি সামনে মাস থেকে অনুশীলন শুরু করতে পারব। লক্ষ্য রয়েছে ১২ আগস্ট এএফসি কাপে ম্যাচ দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ফেরার।’

জাতীয় দলের খেলায় আঘাত পেলেও বিশ্বনাথ ঘোষের চিকিৎসা ব্যয় পুরোটাই বহন করেছে তার ক্লাব বসুন্ধরা কিংস। ক্লাবের ফিজিও আবু সুফিয়ান সরকারের তত্ত্বাবধানেই এখন রয়েছেন। বিশ্বনাথের ইনজুরি ও সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিশ্বনাথের ইনজুরি খুবই গুরুতর ছিল। বাংলাদেশের কোনো ফুটবলার বোধ হয় এ রকম ইনজুরিতে পড়েনি। তার সমস্যাটি কার্টিনালে। অস্ত্রপচারের পর এখন সে রিহ্যাব প্রক্রিয়া রয়েছে। আগামী সপ্তাহে আরেক দফা পর্যবেক্ষণের পর তার পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান করা হবে।’

আধুনিক ফুটবলে ফুলব্যাক পজিশনের ফুটবলারদের অনেক দায়িত্ব। আক্রমণ রচনায় যেমন ভূমিকা আবার রক্ষণের গুরু দায়িত্বও থাকে। হাটুর বড় ইনজুরির পর আগের সেই দ্রুতগতির বিশ্বনাথকে পাওয়া খানিকটা শঙ্কারই। এরপরও বেশ আত্মবিশ্বাসী এই ডিফেন্ডার, ‘পরিশ্রম করলে অনেক অসাধ্যই সম্ভব। সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাস আর পরিশ্রম এই দু’টোই আমার সম্বল। এখন অনেকটাই সুস্থ। সামনের দিনগুলোতে পরিশ্রম করে আমার ফিটনেস ও ফর্ম ফিরিয়ে আনতে হবে।’

বিশ্বনাথ ঘোষ ভালো মানের ডিফেন্ডার। তার লম্বা থ্রো বাংলাদেশের আক্রমণের বাড়তি অস্ত্র। এই দু’টোর বাইরে তার আচরণ বাংলাদেশ টিম স্পিরিটের অন্যতম চালিকা শক্তি। ২০২৩ ব্যাঙ্গালুরু সাফে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উঠলে নিজেই পাঁচ লাখ টাকা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার এই টিম স্পিরিট বক্তব্যের জন্য বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনই তাকে পরবর্তীতে পাঁচ লাখ টাকা বোনাস দিয়েছিলেন। খেলায় শতভাগ, টিম স্পিরিটের পাশাপাশি তিনি অত্যন্ত মানবতাবাদী। ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ শেষে কিংস অ্যারেনায় বিশ্বনাথ ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে পতাকা নিয়ে স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করেন। পরবর্তীতে দলের অন্য খেলোয়াড়েরা বিশ্বনাথের পিছু নেন।

প্রকৃতির নির্মমতা স্থান শূন্য থাকে না। বিশ্বনাথের রাইট ব্যাক পজিশনে সাম্প্রতিক সময়ে তাজ উদ্দিন ও শাকিল আহাদ তপু খেলেছেন। দুই জনই বেশ আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। বিশ্বনাথ তার হারানো জায়গা ফিরে পেতে লড়াই করতে প্রস্তত,‘ ‘তাজ ও শাকিল দুই জনই ভালো খেলেছে। আমি আমার সেরাটা দিয়েই আবার দলে ফিরতে চাই। আশা করি সেপ্টেম্বর ফিফা উইন্ডো কিংবা অক্টোবর হংকং ম্যাচে জাতীয় দলে খেলার।’

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচে হারের পেছনে ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। নিজে এক জন ডিফেন্ডার হয়ে বিশ্বনাথ বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের জার্সিতে নামে সবাই চায় দেশের হয়ে গোল করতে আবার সবারই লক্ষ্য থাকে বাংলাদেশ যেন গোল হজম না করে। সব খেলোয়াড়ই দেশের জন্য মন প্রাণ উজাড় করেই খেলে।’

বাংলাদেশের ফুটবলে এখন তুমুল উন্মাদনা। হামজা চৌধুরি মার্চে ভারতে শিলংয়ে জাতীয় দলের জার্সি পড়েছেন। জুনে আরেক ম্যাচে অভিষেক হয়েছে সামিত সোমের। এই তুমুল উন্মাদনায় দেশের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ নিজেকে বাইরে বেশ কষ্টে সংযত রাখছেন, ‘আসলে এটা যে কোনো ফুটবলারের জন্যই কষ্টকর। এত বড় খেলা হচ্ছে এবং হামজা-সামিতের মানের ফুটবলার আসছে। সেখানে আমি নেই, এটা খারাপ লেগেছে। এজন্য সামাজিক মাধ্যম থেকে দূরে ছিলাম বেশ কিছু দিন। যাতে ফুটবল সংক্রান্ত বিষয়গুলো সামনে না আসে।’

জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে ম্যাচে কিংবা অনুশীলনে ফুটবলাররা ইনজুরিতে পড়লে ফিফা ক্লাব প্রটেকশন স্কিমের আওতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে ২১ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হয়। বিশ্বনাথ ইনজুরিতে পড়ার পর আবার কিছু দিন ক্লাবের অনুশীলনে ছিলেন। ২১ দিন সময় পেরিয়ে যাওয়ায় আর তার ক্লাব ফিফার প্রটেকশন স্কিমের আওতায় অর্থ আবেদন করতে পারেনি। বসুন্ধরা কিংসই পুরো ব্যয় বহন করেছে। এজন্য ক্লাবের কাছে কৃতজ্ঞতা তার, ‘আসলে ক্লাবকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা দিয়ে শেষ করা যায় না। আমার দুঃসময়ে যেভাবে পাশে দাড়িয়েছে। ক্লাব আমার উপর আস্থা রাখলে আমি এবার ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চটাই দেব। এখনও আমি ক্লাবে জিম করছি।’

অ্যাওয়ার্ড নাইট’ চালু করতে যাচ্ছে বিসিবি ১৯ বছর পর

জাতীয় দলে ফিরে আসছেন বিশ্বনাথ ঘোষ

প্রকাশিত : ০৯:৪৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ। রাইট ফুলব্যাক পজিশনে তার অবস্থান ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বি। সেই বিশ্বনাথ গত বছর সেপ্টেম্বরে ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে আঘাত পান। এরপর থেকে ফুটবলের বাইরে। ঘরোয়া ফুটবলে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে পুরো মৌসুমই আর খেলতে পারেনি। জাতীয় দলের পাঁচটি ম্যাচ মিস করেছেন।

বিশ্বনাথ হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েছিলেন সেপ্টেম্বরে। অক্টোবর-নভেম্বর দুই মাস প্রকৃত সমস্যা নির্ণয়েই ক্ষেপণ হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর থাইল্যান্ডে অস্ত্রপচার করালেও এখনো মাঠে ফিরতে পারেননি। আগামী জুলাই থেকে বল নিয়ে নামার অপেক্ষায় টাঙ্গাইলের এই ফুটবলার, ‘আমি সম্প্রতি জিম ও ওয়েট নেয়া শুরু করেছি। আশা করি সামনে মাস থেকে অনুশীলন শুরু করতে পারব। লক্ষ্য রয়েছে ১২ আগস্ট এএফসি কাপে ম্যাচ দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ফেরার।’

জাতীয় দলের খেলায় আঘাত পেলেও বিশ্বনাথ ঘোষের চিকিৎসা ব্যয় পুরোটাই বহন করেছে তার ক্লাব বসুন্ধরা কিংস। ক্লাবের ফিজিও আবু সুফিয়ান সরকারের তত্ত্বাবধানেই এখন রয়েছেন। বিশ্বনাথের ইনজুরি ও সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিশ্বনাথের ইনজুরি খুবই গুরুতর ছিল। বাংলাদেশের কোনো ফুটবলার বোধ হয় এ রকম ইনজুরিতে পড়েনি। তার সমস্যাটি কার্টিনালে। অস্ত্রপচারের পর এখন সে রিহ্যাব প্রক্রিয়া রয়েছে। আগামী সপ্তাহে আরেক দফা পর্যবেক্ষণের পর তার পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান করা হবে।’

আধুনিক ফুটবলে ফুলব্যাক পজিশনের ফুটবলারদের অনেক দায়িত্ব। আক্রমণ রচনায় যেমন ভূমিকা আবার রক্ষণের গুরু দায়িত্বও থাকে। হাটুর বড় ইনজুরির পর আগের সেই দ্রুতগতির বিশ্বনাথকে পাওয়া খানিকটা শঙ্কারই। এরপরও বেশ আত্মবিশ্বাসী এই ডিফেন্ডার, ‘পরিশ্রম করলে অনেক অসাধ্যই সম্ভব। সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাস আর পরিশ্রম এই দু’টোই আমার সম্বল। এখন অনেকটাই সুস্থ। সামনের দিনগুলোতে পরিশ্রম করে আমার ফিটনেস ও ফর্ম ফিরিয়ে আনতে হবে।’

বিশ্বনাথ ঘোষ ভালো মানের ডিফেন্ডার। তার লম্বা থ্রো বাংলাদেশের আক্রমণের বাড়তি অস্ত্র। এই দু’টোর বাইরে তার আচরণ বাংলাদেশ টিম স্পিরিটের অন্যতম চালিকা শক্তি। ২০২৩ ব্যাঙ্গালুরু সাফে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উঠলে নিজেই পাঁচ লাখ টাকা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার এই টিম স্পিরিট বক্তব্যের জন্য বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনই তাকে পরবর্তীতে পাঁচ লাখ টাকা বোনাস দিয়েছিলেন। খেলায় শতভাগ, টিম স্পিরিটের পাশাপাশি তিনি অত্যন্ত মানবতাবাদী। ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ শেষে কিংস অ্যারেনায় বিশ্বনাথ ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে পতাকা নিয়ে স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করেন। পরবর্তীতে দলের অন্য খেলোয়াড়েরা বিশ্বনাথের পিছু নেন।

প্রকৃতির নির্মমতা স্থান শূন্য থাকে না। বিশ্বনাথের রাইট ব্যাক পজিশনে সাম্প্রতিক সময়ে তাজ উদ্দিন ও শাকিল আহাদ তপু খেলেছেন। দুই জনই বেশ আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। বিশ্বনাথ তার হারানো জায়গা ফিরে পেতে লড়াই করতে প্রস্তত,‘ ‘তাজ ও শাকিল দুই জনই ভালো খেলেছে। আমি আমার সেরাটা দিয়েই আবার দলে ফিরতে চাই। আশা করি সেপ্টেম্বর ফিফা উইন্ডো কিংবা অক্টোবর হংকং ম্যাচে জাতীয় দলে খেলার।’

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচে হারের পেছনে ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। নিজে এক জন ডিফেন্ডার হয়ে বিশ্বনাথ বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের জার্সিতে নামে সবাই চায় দেশের হয়ে গোল করতে আবার সবারই লক্ষ্য থাকে বাংলাদেশ যেন গোল হজম না করে। সব খেলোয়াড়ই দেশের জন্য মন প্রাণ উজাড় করেই খেলে।’

বাংলাদেশের ফুটবলে এখন তুমুল উন্মাদনা। হামজা চৌধুরি মার্চে ভারতে শিলংয়ে জাতীয় দলের জার্সি পড়েছেন। জুনে আরেক ম্যাচে অভিষেক হয়েছে সামিত সোমের। এই তুমুল উন্মাদনায় দেশের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ নিজেকে বাইরে বেশ কষ্টে সংযত রাখছেন, ‘আসলে এটা যে কোনো ফুটবলারের জন্যই কষ্টকর। এত বড় খেলা হচ্ছে এবং হামজা-সামিতের মানের ফুটবলার আসছে। সেখানে আমি নেই, এটা খারাপ লেগেছে। এজন্য সামাজিক মাধ্যম থেকে দূরে ছিলাম বেশ কিছু দিন। যাতে ফুটবল সংক্রান্ত বিষয়গুলো সামনে না আসে।’

জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে ম্যাচে কিংবা অনুশীলনে ফুটবলাররা ইনজুরিতে পড়লে ফিফা ক্লাব প্রটেকশন স্কিমের আওতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে ২১ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হয়। বিশ্বনাথ ইনজুরিতে পড়ার পর আবার কিছু দিন ক্লাবের অনুশীলনে ছিলেন। ২১ দিন সময় পেরিয়ে যাওয়ায় আর তার ক্লাব ফিফার প্রটেকশন স্কিমের আওতায় অর্থ আবেদন করতে পারেনি। বসুন্ধরা কিংসই পুরো ব্যয় বহন করেছে। এজন্য ক্লাবের কাছে কৃতজ্ঞতা তার, ‘আসলে ক্লাবকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা দিয়ে শেষ করা যায় না। আমার দুঃসময়ে যেভাবে পাশে দাড়িয়েছে। ক্লাব আমার উপর আস্থা রাখলে আমি এবার ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চটাই দেব। এখনও আমি ক্লাবে জিম করছি।’