ঢাকা ১০:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

কার্যকর সাংবিধানিক অঙ্গ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে বিচার বিভাগ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০৮:৩৩:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
  • ৪২ বার দেখা হয়েছে

দেশের বিচার বিভাগ একটি পূর্ণাঙ্গ কার্যকর সাংবিধানিক অঙ্গ হিসেবে আজ রাষ্ট্রে তার দায়িত্ব পালন করছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

রোববার (২২ জুন) ‘বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি একথা বলেন।

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি গভীর তাগিদ নিয়ে আবারও পুনরাবৃত্তি করছি যে বিচার বিভাগের জন্য একটি আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি। এটি শুধু প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসনের জন্যই প্রয়োজন নয়, বরং কাঠামোগত ভিত্তি নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য। যার ওপর সব ধরনের সংস্কার নির্ভর করে। ন্যায়বিচার কখনো ধার করা অবকাঠামো বা প্রেরিত কর্তৃত্বের ওপর ভর করে এগিয়ে যেতে পারে না; এর নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি থাকতে হবে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর আমি যে ‘বিচার বিভাগীয় সংস্কার রোডম্যাপ’ উপস্থাপন করি, সেটি কেবল ঘোষণাপত্র ছিল নয়—বরং সেটি ছিল বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, জবাবদিহিতা ও জনগণের সেবার প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তরের এক স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি। যে রোডম্যাপের কেন্দ্রে রয়েছে ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়’ গঠনের প্রস্তাব, যাতে বিচার বিভাগের প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হয়। পাশাপাশি ছিল বদলি ও পদায়ন নিয়ে রাজনীতি-বিমুক্ত নির্দেশনা এবং দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত পৃথকীকরণের প্রস্তাব, যা বিচারিক স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।’

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ আরও বলেন, ‘অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ৩৬টি জেলায় গত ১০ মাসে নতুন মামলার চেয়ে মামলা নিষ্পত্তির হার ছিল বেশি। সেখানে বিচারকেরা দেখিয়েছেন যে, সংস্কার ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি নয়, বরং বর্তমানের বাস্তবতা।’

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনঃপ্রতিষ্ঠা বিচারিক শৃঙ্খলার রক্ষক হিসেবে কাজ করছে এবং সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের ফলে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও নৈতিকতার ভিত্তিতে হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল এখন বিচার বিভাগের স্বাধীনতার যুগল স্তম্ভ।’

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামন, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লেলার, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

সেমিনারে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, জেলা ও দায়রা জজ, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার বিচারকসহ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারের একপর্যায়ে বিচার বিভাগ সংস্কারে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’ নিয়ে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।

অ্যাওয়ার্ড নাইট’ চালু করতে যাচ্ছে বিসিবি ১৯ বছর পর

কার্যকর সাংবিধানিক অঙ্গ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে বিচার বিভাগ

প্রকাশিত : ০৮:৩৩:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

দেশের বিচার বিভাগ একটি পূর্ণাঙ্গ কার্যকর সাংবিধানিক অঙ্গ হিসেবে আজ রাষ্ট্রে তার দায়িত্ব পালন করছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

রোববার (২২ জুন) ‘বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি একথা বলেন।

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি গভীর তাগিদ নিয়ে আবারও পুনরাবৃত্তি করছি যে বিচার বিভাগের জন্য একটি আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি। এটি শুধু প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসনের জন্যই প্রয়োজন নয়, বরং কাঠামোগত ভিত্তি নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য। যার ওপর সব ধরনের সংস্কার নির্ভর করে। ন্যায়বিচার কখনো ধার করা অবকাঠামো বা প্রেরিত কর্তৃত্বের ওপর ভর করে এগিয়ে যেতে পারে না; এর নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি থাকতে হবে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর আমি যে ‘বিচার বিভাগীয় সংস্কার রোডম্যাপ’ উপস্থাপন করি, সেটি কেবল ঘোষণাপত্র ছিল নয়—বরং সেটি ছিল বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, জবাবদিহিতা ও জনগণের সেবার প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তরের এক স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি। যে রোডম্যাপের কেন্দ্রে রয়েছে ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়’ গঠনের প্রস্তাব, যাতে বিচার বিভাগের প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হয়। পাশাপাশি ছিল বদলি ও পদায়ন নিয়ে রাজনীতি-বিমুক্ত নির্দেশনা এবং দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত পৃথকীকরণের প্রস্তাব, যা বিচারিক স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।’

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ আরও বলেন, ‘অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ৩৬টি জেলায় গত ১০ মাসে নতুন মামলার চেয়ে মামলা নিষ্পত্তির হার ছিল বেশি। সেখানে বিচারকেরা দেখিয়েছেন যে, সংস্কার ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি নয়, বরং বর্তমানের বাস্তবতা।’

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনঃপ্রতিষ্ঠা বিচারিক শৃঙ্খলার রক্ষক হিসেবে কাজ করছে এবং সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের ফলে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও নৈতিকতার ভিত্তিতে হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল এখন বিচার বিভাগের স্বাধীনতার যুগল স্তম্ভ।’

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামন, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লেলার, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

সেমিনারে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, জেলা ও দায়রা জজ, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার বিচারকসহ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারের একপর্যায়ে বিচার বিভাগ সংস্কারে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’ নিয়ে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।