সারদেশে অব্যাহত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালীতে জামায়াত নেতার হাতে বিএনপি নেতা আব্দুর রহিম সিকদার হত্যার বিচার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মশাল মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসি এলাকায় এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে সংগঠনটি।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা —“লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই”, “ফ্যাসিবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না”, “আইনশৃঙ্খলার অবনতি, ইন্টেরিমের এ কোন নীতি”, “দিল্লি গেছে স্বৈরাচার, পিণ্ডি যাবে রাজাকার”, “আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না”, “রহিম হত্যার বিচার চাই, করতে হবে করতে হবে”, “আমার ভাই মরলো কেন, ইন্টেরিম জবাব দে” ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস। তিনি বলেন, পরশুদিন কক্সবাজারে ইউনিয়ন জামায়াতের এক ঘাতক বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রহিম উদ্দিন সিকদারকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যার সর্বোচ্চ বিচার দাবি করছি। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাহীনতা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে আমাদের এই কর্মসূচি।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানেরের পর যে সরকারকে ছাত্রজনতা বিশ্বাস করেছিল, সেই সরকার আজ এক বছরে ১,২৪৫টি হত্যাকাণ্ড রোধে ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংস্কার তো দূরের কথা, বরং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন,১৬ জুলাই—একটি ঐতিহাসিক দিন। গত বছরের এই দিনে রংপুরের শহীদ আবু সাইদ ও চট্টগ্রামের ওয়াসিম আকরাম তাদের রক্ত দিয়ে যে আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন, তা ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলেছিল এবং স্বৈরাচার পতনের পথ তৈরি করেছিল। অথচ আজ, ঠিক এই দিনে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে গণঅভ্যুত্থানের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ সময় ছাত্রদল নেতারা অভিযোগ করে বলেন, জুলাইয়ের চেতনা বিক্রি করে কেউ কেউ আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনে কাজ করছে। রহিম হত্যাকাণ্ডের বিচার যদি দ্রুত না করা হয়, তাহলে এ সরকারের দায়িত্বশীলতার ওপর জাতির আস্থা থাকবে না।
বক্তারা বলেন, জুলাই এখনো শেষ হয়নি। আমরা দেখতে পাচ্ছি জুলাইয়ের চেতনা বিক্রি করে অনেক সুযোগসন্ধানী আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছে। আজ আমরা দেখেছি, গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাদের ওপর হামলা হয়েছে। ইন্টেরিম এই হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা বলতো চাই অব্যাহত ব্যর্থতার দায়ে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা হতাশ এই সরকারের আচরণে। সারাদেশের মানুষ আশা করেছিল এই সরকারের হাতে আইন শৃঙ্খলা শক্তিশালী হবে। কিন্তু এই সরকার বারবার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।
সমাবেশে ছাত্রদল ঢাবি শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আলম ভূঁইয়া ইমনসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা অংশ নেন।