মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বর্ষা এলেই শুরু হয় তীব্র জলাবদ্ধতা। পদ্মা সেতুর পাশে অবস্থিত এ এলাকাটিতে সেতু নির্মাণের সময় একদিকে বেরিবাঁধ ও অন্যদিকে পর্যবেক্ষণ রাস্তা তৈরি হওয়ায় ৫০ থেকে ৬০টি পরিবার প্রতি বছর দীর্ঘ সময় পানিবন্দি হয়ে পড়ছে।
বর্ষা শুরু হলে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে থাকে পুরো মৌসুমজুড়ে। বৃষ্টিপাত বেড়ে গেলে ঘরবাড়ির উঠানে হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে যায়। এতে করে ওই এলাকার মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা চর্মরোগ, ঘা, চুলকানি, ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘরবাড়ি ও আঙিনাজুড়ে হাঁটুসমান পানি জমে আছে। দীর্ঘ ছয় থেকে সাত মাস এমন পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা জলিল তালুকদার বলেন, ছয়-সাত মাস পানির মধ্যে থাকতে হয়। অথচ ড্রেন নির্মাণ করা সম্ভব হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সহায়তা পাইনি। এক বছর আগে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির স্যারকে জানানো হয়েছিল। তিনি আশ্বাস দিলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
একই এলাকার গৃহবধূ সোনিয়া বেগম বলেন, আগেও অভিযোগ করেছি, কিন্তু কিছুই হয়নি। সারাক্ষণ পানির মধ্যে থাকতে হয়। ছোট বাচ্চারা সবসময় পানিতে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। মাঝে মাঝে ঘরের ভেতর সাপও ঢুকে পড়ে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান খান বলেন, এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে আছেন। বৃষ্টির সময় ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ে। ইউএনও যদি সরেজমিনে এসে দেখতেন, তাহলে বুঝতেন কেমন কষ্টে আছি। দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতায় ডেঙ্গু মশার বিস্তারও ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
এ বিষয়ে কুমারভোগ ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য রিনা বেগম বলেন, আমরা ইতিমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছি। দু’দিন ধরে একটি ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নেছার উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিচ্ছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা না নিলে জলাবদ্ধতা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।