ঢাকা ০২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

শিক্ষার সহকারী সচিব, শুধু ব্যাংকেই লেনদেন ১৭ কোটি!

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০৮:১৯:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
  • ৯ বার দেখা হয়েছে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ একজন সহকারী সচিব তিনি। বেতন স্কেল অনুযায়ী, তার মাসিক আয় সর্বোচ্চ ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা। সেখানে তার বাৎসরিক সঞ্চয় কোনোভাবেই কোটির ঘর ছোঁয়ার কথা নয়। অথচ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. সেলিম শিকদারের তিনটি ব্যাংক হিসাবে মিলেছে প্রায় ১৭ কোটি টাকার রহস্যময় লেনদেন। একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে যিনি কর্মজীবন শুরু করেছিলেন, যার আয়কর বিবরণীতে বছরে মাত্র সাত থেকে ১০ লাখ টাকার আয় দেখানোর কথা, সেখানে বিপুল পরিমাণ এই অর্থের উৎস কোথায়— প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক।

সহকারী সচিব পদমর্যাদার এই কর্মকর্তার তিন ব্যাংকে জমা হওয়া অর্থের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের হিসাবে মিলেছে ছয় কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকে আট কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং সাউথইস্ট ব্যাংকে জমা হয়েছে দুই কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি। পরে সব টাকাই তুলে ফেলেন তিনি।

সাদা চোখে এটি অবশ্যই ঘুষ-দুর্নীতির টাকা হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করা এই ব্যক্তির দেওয়া আয়কর বিবরণী বলছে, ব্যবসা ও চাকরি মিলিয়ে বছরে তার আয় সাড়ে সাত থেকে ১০ লাখ টাকা হওয়ার কথা। সেখানে ১৭ কোটি টাকার ব্যাখ্যা না থাকাই স্বাভাবিক— মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

যদিও সেলিম শিকদারের দাখিল করা আয়কর বিবরণী ঘেঁটে কিছুটা ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। ১৯৯৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনি নিজ এলাকা টাঙ্গাইলে ২৭৮ শতাংশ জমি কিনেছেন। এছাড়া, রাজধানীর মিরপুরে একাধিক প্লট ও ১১টি ফ্ল্যাটের গর্বিত মালিক হয়েছেন বলে জানা গেছে। যার বাজার মূল্য ৫০ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ বিপুল পরিমাণ এই অর্থ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বা অবৈধভাবে অর্জিত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানেও এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য মিলেছে।

সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে এত সম্পদের মালিকানার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনে তার কাছে সম্পদবিবরণী চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেই হিসাব জমা দিতে ব্যর্থ হলেও ঢাকা পোস্টের কাছে সম্পদবিবরণী জমা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি।

একজন সরকারি কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক এমন লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘আপনার তথ্যানুসারে, একজন সরকারি কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাবে এমন লেনদেন অবশ্যই অস্বাভাবিক। যেহেতু দুদক তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে, অনুসন্ধানেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। পরবর্তীতে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

 

শিক্ষার সহকারী সচিব, শুধু ব্যাংকেই লেনদেন ১৭ কোটি!

প্রকাশিত : ০৮:১৯:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ একজন সহকারী সচিব তিনি। বেতন স্কেল অনুযায়ী, তার মাসিক আয় সর্বোচ্চ ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা। সেখানে তার বাৎসরিক সঞ্চয় কোনোভাবেই কোটির ঘর ছোঁয়ার কথা নয়। অথচ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. সেলিম শিকদারের তিনটি ব্যাংক হিসাবে মিলেছে প্রায় ১৭ কোটি টাকার রহস্যময় লেনদেন। একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে যিনি কর্মজীবন শুরু করেছিলেন, যার আয়কর বিবরণীতে বছরে মাত্র সাত থেকে ১০ লাখ টাকার আয় দেখানোর কথা, সেখানে বিপুল পরিমাণ এই অর্থের উৎস কোথায়— প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক।

সহকারী সচিব পদমর্যাদার এই কর্মকর্তার তিন ব্যাংকে জমা হওয়া অর্থের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের হিসাবে মিলেছে ছয় কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকে আট কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং সাউথইস্ট ব্যাংকে জমা হয়েছে দুই কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি। পরে সব টাকাই তুলে ফেলেন তিনি।

সাদা চোখে এটি অবশ্যই ঘুষ-দুর্নীতির টাকা হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করা এই ব্যক্তির দেওয়া আয়কর বিবরণী বলছে, ব্যবসা ও চাকরি মিলিয়ে বছরে তার আয় সাড়ে সাত থেকে ১০ লাখ টাকা হওয়ার কথা। সেখানে ১৭ কোটি টাকার ব্যাখ্যা না থাকাই স্বাভাবিক— মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

যদিও সেলিম শিকদারের দাখিল করা আয়কর বিবরণী ঘেঁটে কিছুটা ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। ১৯৯৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনি নিজ এলাকা টাঙ্গাইলে ২৭৮ শতাংশ জমি কিনেছেন। এছাড়া, রাজধানীর মিরপুরে একাধিক প্লট ও ১১টি ফ্ল্যাটের গর্বিত মালিক হয়েছেন বলে জানা গেছে। যার বাজার মূল্য ৫০ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ বিপুল পরিমাণ এই অর্থ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বা অবৈধভাবে অর্জিত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানেও এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য মিলেছে।

সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে এত সম্পদের মালিকানার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনে তার কাছে সম্পদবিবরণী চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেই হিসাব জমা দিতে ব্যর্থ হলেও ঢাকা পোস্টের কাছে সম্পদবিবরণী জমা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি।

একজন সরকারি কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক এমন লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘আপনার তথ্যানুসারে, একজন সরকারি কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাবে এমন লেনদেন অবশ্যই অস্বাভাবিক। যেহেতু দুদক তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে, অনুসন্ধানেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। পরবর্তীতে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’