দুমকি প্রতিনিধিঃ জীবন যুদ্ধে হার না মানা শতবর্ষী বৃদ্ধ আজাহার মোল্লা। বয়স তাঁর ১০২ বছর। নিজের পরিবার পরিজন বলতে কেউ নেই। অনাহারে অর্ধাহারে জীবন চলে তার। বৃদ্ধ বয়সেও হাট ঝাড়ু দিয়ে যৎসামান্য অর্থ পায় তা দিয়ে কোন রকম দিন কেটে যায়। কখনো বসে আবার কখনো নুইয়ে ২টি হাট ঝাড়ু দিতে দেখা যায়। থাকেন পালক মেয়ের সংসারে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার দক্ষিণ মুরাদিয়া ৫ নং ওয়ার্ডের ১০২ বছর বয়সী আজাহার মোল্লা। উপজেলার কলবাড়ি হাট ও তালুকদার হাট প্রায়ই ঝাড়ু দেন। বিনিময়ে হাটের ব্যবসায়ীরা ৫/১০ টাকা দিয়ে দিয়ে থাকেন।
বৃদ্ধ আজাহার মোল্লা বলেন, আমার পৈতৃক বাড়ি রাঙ্গাবালি উপজেলার টঙ্গীবাড়ি ইউনিয়নের ফ্যালাবুনিয়া গ্রামে ছিল। যৌবনে জমিজমা ঘরবাড়ি সবকিছুই ছিল। বিয়ে সাদিও করেছিলাম। কিন্তু কপালে আর সুখ সয়নি। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সর্বনাশা আগুন মুখা নদীতে ৫০ বছর আগে আগে সবকিছু বিলীন হয়ে যায়। এরপর স্ত্রীও মারা যায়। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে ভবঘুরে হয়ে গেলাম। ৩০ বছর পূর্বে দুরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের পরিচয়ে মুরাদিয়া ২য় বিয়ে করি। সেখানেও কোন সন্তান হয়নি। ১৫ বছর পূর্বে সে স্ত্রীও মারা যায়। তখন থেকেই অনাহারে অর্ধাহারে পালক মেয়ের সংসারে বোঝা হয়ে আছি। অসুস্থ শরীর নিয়ে সপ্তাহে দুদিন শনি ও মঙ্গলবার মুরাদিয়ার কলবাড়ি হাট ও শ্রীরামপুরের তালুকদার হাটে ঝাড়ু দিয়ে দেড়- দু’শ টাকা পাই। তা দিয়ে কোন মতে চলি। আগে বয়স্ক ভাতা পাইতাম। বর্তমানে তাও বন্ধ।
অসুস্থ শরীর নিয়ে এখন আর পারছিনা।
পালক মেয়ে মরিওম বেগম বলেন, আমি গরীব , পুরাতন কাপড় ফেরি করে কোনমতে তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতে হয়। এরপর বাবার ভরন পোষণ দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাবা সরকারি ভাবে কোন সাহায্য পায়না।
কলবাড়ি বাজার ও তালুকদার বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, শতবর্ষী বৃদ্ধ আজাহার মোল্লা দীর্ঘদিন যাবৎ নিরলস ভাবে দুটি বাজার পরিস্কারের কাজ করে যাচ্ছেন। এখন তার সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন।
জীবন সংগ্রামে হার মানেনি শতবর্ষী বৃদ্ধ আজাহার মোল্লা
-
ডেস্ক রিপোর্ট
- প্রকাশিত : ০৭:০৯:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
- ১৮ বার দেখা হয়েছে
জনপ্রিয় সংবাদ