ঢাকা ১১:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ব.বি কেন্দ্রীয় মাঠের নাজেহাল দশা, খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০৭:০৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
  • ২১ বার দেখা হয়েছে

ব.বি প্রতিনিধি:

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দশ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে একটিমাত্র খেলার মাঠ। কিন্তু এই মাঠটিই সংস্কারের নাম করে খুড়ে ও মাটির স্তুপ করে খেলাধুলার অনুপযোগী করে রাখা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। সংস্কারে ধীরগতির কারণেই দীর্ঘদিন মাঠটি একখন্ড পরিত্যক্ত জমিতে পরিণত হয়েছে।

অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ একরের বিস্তীর্ণ ক্যাম্পাসে এই একমাত্র মাঠটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে খেলাধুলার অনুপযোগী। মাঠের ভিতরে সংস্কারের নামে মাটি স্তুপ আকারে ফেলে রেখেছে বিভিন্ন জায়গায়। এই ঘটনাকে ঘিরে ক্রীড়াপ্রেমি শিক্ষার্থীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সাধারণ অল্প বৃষ্টিতেই মাঠের এমন অবস্থা হয় যে, সেটিকে খেলার মাঠ না ফসলের জমি তা বোঝা দায়। যার মূল সমস্যা ড্রেনেজ ব্যবস্থার ঘাটতি। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পুরো মাঠ কাদায় পরিণত হয়, ফলে খেলাধুলার জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।

সম্প্রতি কুরবানির ঈদের ছুটির আগে মাঠ সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়। এ সময় মাঠে হালচাষ দেওয়া হয়, যা ছিল সংস্কারের প্রস্তুতিমূলক ধাপ। কিন্তু ছুটি শেষ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ফিরে এলেও সংস্কার কাজের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। এখনো মাঠের অবস্থা হালচাষের পরিত্যক্ত জমির মতোই পড়ে আছে।

এতে করে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের দাবি, দ্রুত মাঠ সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করে মাঠটি খেলাধুলার উপযোগী করে তোলা হোক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাঠটিতে ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মাটি ফেলে সংস্কারের একটি কাজ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মে মাসের শেষ দিকে কাজটি শুরু করলেও এখনো মাটি ফেলে শেষ করতে পারেনি। প্রায় তিনশো গাড়ি মাটি ফেলার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাটি ফেলা হয়েছে মাত্র ৬০-৭০ গাড়ি। এখন বৃষ্টিকাল হওয়ায় মাটি সংগ্রহ করতে না পারায় কাজে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে। মাঠে ভালোমানের মাটি ফেলার কথা থাকলেও নিম্নমানের বালুযুক্ত মাটি ফেলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল টিমের অধিনায়ক কাজি সালমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে মাটি তুলে সংস্কার করা হচ্ছে। কাজটি অনেকদিন আগে শুরু হলেও এখনো শেষ করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। বৃষ্টির সময় হওয়ায় মাটি পাওয়া যাচ্ছে না বলে আমরা জেনেছি। এতে আমরা খেলাধুলা করতে পারছি না নিয়মিত। প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে মাঠটি খেলাধুলার উপযোগী করার জন্য।

মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান সিফাত বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র কেন্দ্রীয় খেলার মাঠটি সংস্কারের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলোয়াড়রা মাঠে অনুশীলনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য হতাশাজনক। এছাড়া, হল টুর্নামেন্টের ইনডোর অংশ শেষ হলেও আউটডোর পর্ব সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। আমরা দ্রুত মাঠ সংস্কার সম্পন্ন করে খেলাধুলার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা করছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শাখার উপ-প্রকৌশলী মুরশিদ আবেদীন বলেন, বৃষ্টির কারণে আশপাশের জমিগুলো জলমগ্ন হয়ে থাকায় ঠিকাদার প্রয়োজনীয় মাটি সংগ্রহ করতে পারছেন না। তবে মাঠ সংস্কারের জন্য তিন মাস সময় দেওয়া হয়েuছে, যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৮ আগস্ট।

তবে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন, যদি কাজের অগ্রগতি এভাবে ধীরগতিতে চলতে থাকে, তবে সময়মতো মাঠ সংস্কার শেষ হবে কি না তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট সংশয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

ব.বি কেন্দ্রীয় মাঠের নাজেহাল দশা, খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত : ০৭:০৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫

ব.বি প্রতিনিধি:

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দশ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে একটিমাত্র খেলার মাঠ। কিন্তু এই মাঠটিই সংস্কারের নাম করে খুড়ে ও মাটির স্তুপ করে খেলাধুলার অনুপযোগী করে রাখা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। সংস্কারে ধীরগতির কারণেই দীর্ঘদিন মাঠটি একখন্ড পরিত্যক্ত জমিতে পরিণত হয়েছে।

অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ একরের বিস্তীর্ণ ক্যাম্পাসে এই একমাত্র মাঠটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে খেলাধুলার অনুপযোগী। মাঠের ভিতরে সংস্কারের নামে মাটি স্তুপ আকারে ফেলে রেখেছে বিভিন্ন জায়গায়। এই ঘটনাকে ঘিরে ক্রীড়াপ্রেমি শিক্ষার্থীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সাধারণ অল্প বৃষ্টিতেই মাঠের এমন অবস্থা হয় যে, সেটিকে খেলার মাঠ না ফসলের জমি তা বোঝা দায়। যার মূল সমস্যা ড্রেনেজ ব্যবস্থার ঘাটতি। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পুরো মাঠ কাদায় পরিণত হয়, ফলে খেলাধুলার জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।

সম্প্রতি কুরবানির ঈদের ছুটির আগে মাঠ সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়। এ সময় মাঠে হালচাষ দেওয়া হয়, যা ছিল সংস্কারের প্রস্তুতিমূলক ধাপ। কিন্তু ছুটি শেষ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ফিরে এলেও সংস্কার কাজের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। এখনো মাঠের অবস্থা হালচাষের পরিত্যক্ত জমির মতোই পড়ে আছে।

এতে করে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের দাবি, দ্রুত মাঠ সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করে মাঠটি খেলাধুলার উপযোগী করে তোলা হোক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাঠটিতে ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মাটি ফেলে সংস্কারের একটি কাজ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মে মাসের শেষ দিকে কাজটি শুরু করলেও এখনো মাটি ফেলে শেষ করতে পারেনি। প্রায় তিনশো গাড়ি মাটি ফেলার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাটি ফেলা হয়েছে মাত্র ৬০-৭০ গাড়ি। এখন বৃষ্টিকাল হওয়ায় মাটি সংগ্রহ করতে না পারায় কাজে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে। মাঠে ভালোমানের মাটি ফেলার কথা থাকলেও নিম্নমানের বালুযুক্ত মাটি ফেলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল টিমের অধিনায়ক কাজি সালমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে মাটি তুলে সংস্কার করা হচ্ছে। কাজটি অনেকদিন আগে শুরু হলেও এখনো শেষ করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। বৃষ্টির সময় হওয়ায় মাটি পাওয়া যাচ্ছে না বলে আমরা জেনেছি। এতে আমরা খেলাধুলা করতে পারছি না নিয়মিত। প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে মাঠটি খেলাধুলার উপযোগী করার জন্য।

মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান সিফাত বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র কেন্দ্রীয় খেলার মাঠটি সংস্কারের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলোয়াড়রা মাঠে অনুশীলনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য হতাশাজনক। এছাড়া, হল টুর্নামেন্টের ইনডোর অংশ শেষ হলেও আউটডোর পর্ব সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। আমরা দ্রুত মাঠ সংস্কার সম্পন্ন করে খেলাধুলার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা করছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শাখার উপ-প্রকৌশলী মুরশিদ আবেদীন বলেন, বৃষ্টির কারণে আশপাশের জমিগুলো জলমগ্ন হয়ে থাকায় ঠিকাদার প্রয়োজনীয় মাটি সংগ্রহ করতে পারছেন না। তবে মাঠ সংস্কারের জন্য তিন মাস সময় দেওয়া হয়েuছে, যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৮ আগস্ট।

তবে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন, যদি কাজের অগ্রগতি এভাবে ধীরগতিতে চলতে থাকে, তবে সময়মতো মাঠ সংস্কার শেষ হবে কি না তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট সংশয়।