গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত বহুল প্রতীক্ষিত মওলানা ভাসানী সেতু অবশেষে উদ্বোধন হয়েছে। সেতুটি একনজর দেখার জন্য সকাল থেকে হাজারো মানুষের ঢল নামে। কেউ আসছেন নৌকায়, কেউ মোটরসাইকেল কিংবা বিভিন্ন যানবাহনে। তবে সবার চেয়ে আলাদা নজর কেড়েছেন শহরের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য সাদেক আলী সরদার (৬৮) ও তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৩৮)।
অন্যদের মতো তারা কোনো বাহন ব্যবহার না করে হেঁটে এসেছেন সেতু দেখতে। গাইবান্ধা শহরের সাদেক চত্বর থেকে বুধবার (২০ আগস্ট) ভোরে রওনা দেন বাবা-ছেলে। টানা হাঁটার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌঁছে যান কাঙ্ক্ষিত সেতুতে। প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছে তাদের মুখে তখন আনন্দের ঝিলিক।

সাদেক আলী সরদার জানান, সেনাবাহিনীতে চাকরির সুবাদে শরীরচর্চার অভ্যাস গড়ে ওঠে তার। সেই থেকে পায়ে হেঁটে ভ্রমণের নেশা জন্ম নেয়। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত হাঁটা, দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘোরা—সবই করেছেন ছেলে মোস্তাফিজকে সঙ্গে নিয়ে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার হাঁটার অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের।
তিনি বলেন, অনেক দিন ধরেই শখ ছিল ভাসানী সেতুতে আসব। তাই এবার সিদ্ধান্ত নিলাম হেঁটেই আসব। পায়ে হেঁটে ভ্রমণ আমার জীবনের অংশ হয়ে গেছে। এখানে এসে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বাবার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করাই তার আনন্দ। তিনি বলেন, ‘আলোকিত বাংলার স্বপ্ন যাত্রা, আমরা করব জয়’—এই স্লোগান নিয়ে বাবার সঙ্গে ভ্রমণ করি। এতে বাবা-ছেলের বন্ধন আরও মজবুত হয়। আজও সেই ধারাবাহিকতায় ৩০ কিলোমিটার হেঁটে এখানে এসেছি।
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে মাওলানা ভাসানী সেতুর উদ্বোধন করেন।
এ সেতু চালুর মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের মানুষের বহুল প্রত্যাশিত যাতায়াতের সুবিধা তৈরি হলো। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কাটিয়ে নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্বার খুলে দিলো এই সেতু।

ডেস্ক রিপোর্ট 























