ঢাকা বসবাসযোগ্য না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো থাকবে না। তাই সমন্বয় ও বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমেই নগর সমস্যার সমাধান সম্ভব। বুধবার (২০ আগস্ট) সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ কর্তৃক আয়োজিত এক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সেন্টার ফর গভরনেন্স স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক পারভেজ করিম আব্বাসী, বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, আইনজীবী শামীম হায়দার পাটোয়ারি, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবির, সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি প্রমুখ।
বক্তব্যে জিল্লুর রহমান বলেন, সবাই নিজেদের সঙ্গে ড্যাপকে (ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান) ব্যবহার করছে। কিন্তু এর জন্য সাধারণ জনগণ ভুক্তভোগী হচ্ছে। বাস্তবে আবাসিক নগর পরিকল্পনা চলছে যা ড্যাপের নিয়ম না মেনে করা হচ্ছে। ভালো কোনো স্কুল নেই। নাগরিকরা চুপ থাকলে কি হয় তা এই ১৫ বছরে দেখেছি। ক্ষমতায় যেই হোক না কেন, নাগরিক যদি সচেতন থাকে তাহলে উন্নতির দিকে যেতে কেউই থামাতে পারবে না। ঢাকাতে একটু বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ড্যাপের সংলাপে অনেক সময় সরকারের লোক আসতে চায় না। তাদের আবার নিরাপত্তার সংকট আছে। অথচ জনগণের টাকা দিয়ে তাদেরকে নিরাপত্তা দেয়া হয়। কিন্তু তা তাদের জন্য যথেষ্ট হয় না। তারা আসতে চায় না। কারণ নগরবাসীর অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে তাদেরকে। কিন্তু এখন আর এটি করা যাবে না। মেগা সিটি বানানোর নামে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। অনেকে গোপনে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে। কেউ রাস্তায় মার খেলে আমরা তাকে উদ্ধার করি না। ভিডিও করি। মানবিকতার সমস্যা দেখা দিয়েছে আমাদের। ড্যাপের ফলে বাড়ি ভাড়া বেড়ে চলছে। যার প্রভাব বাজারেও পড়ছে।
পারভেজ করিম আব্বাসী বলেন, ঢাকার মত উচ্চ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা যেখানে সরকারি সেবা ও সুবিধার কার্যকর বিকেন্দ্রীকরণ নেই সেখানে যানজট কমাতে ফ্লোর এরিয়া রেশিও মানের উপর জোর দেওয়া সম্ভবত যুক্তিসংগত নয়। সেক্ষেত্রে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। আমাদের অবকাঠামো খুবই সীমিত। ঢাকা অপরিকল্পনার জন্য কৃষি জমি ও নদী কমে যাবে। উচ্চ ফ্লোর রেশিও ঘনবসতিপূর্ণ উন্নয়নকে সমর্থন করে। আমাদের ল্যান্ড রিভাইভালের কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমলারা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে না। এটি জনগণের জন্য করতে হবে। আমাদের গ্রিন বিল্ডিং ডিজাইন অবলম্বন করতে হবে, যেটি চীন করছে। ঢাকা বসবাসযোগ্য না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো থাকবে না। কোন পলিসি করলে সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের যুক্ত করতে হবে। সব মহলের সহযোগিতা করতে হবে। রাজউকে অ্যাপ্লিকেশন প্রসেস ডিজিটাইজেশন করতে হবে। দুর্নীতি কমে যাবে তাহলে। ঢাকার বাইরে ট্রান্সপোর্ট সহজ করতে হবে।
আলমগীর কবির বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হল দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা। রাজনীতি ও আমলাতন্ত্র দেশটাকে নষ্ট করে দিয়েছে। আমলা দোষ দেয় রাজনীতিবিদদের। রাজনীতিবিদরা দোষ দেয় আমলার। আমাদের দরকার সর্বস্তরে নীতিবান ও সৎ ব্যক্তিত্ব।
বক্তব্যে মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, আইনের কনসিস্টেনসি বা কন্টিনিউটি থাকতে হবে। বারবার ড্যাপ বদলালে আইন আরও কঠিন হয়ে যাবে। প্ল্যান করার সময় কোঅরডিনেশন থাকতে হবে। কোনো সিদ্ধান্ত একটি জায়গা থেকে সকলকে নিয়ে নির্ধারণ করতে হবে। ২০১২ সালে কেউ রেজিস্ট্রেশন করল। এখন ২০২৫ সাল কিন্তু তার রেজিস্ট্রেশন হয়নি। এই টাকাটা তারা ট্যাক্সের কই দেখাচ্ছে? কমপ্লায়েন্স থাকতে হবে। বাড়ি বানানোর পর আবার বাড়ি ভাঙ্গা অপচয়। আমাদের প্রথমে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে।

ডেস্ক রিপোর্ট 























