ঢাকায় জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় রংপুরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে গণঅধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতারা।
এদিকে জাতীয় পার্টির ওপর আঘাত আসলে বরদাস্ত না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের রংপুরের নেতারা। যে কোনো ধরনের আঘাত প্রতিহত করার প্রস্তুতি নিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল থেকে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ করে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে এনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানানো হয়।
দুপুরে দলের কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় পার্টি দেশের প্রাচীন দল, রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, বিরোধী দলেও ছিল। জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে গেলে ভালো ফলাফল করতে পারবে- এমন আশংঙ্কায় পরগাছা দলের মাধ্যমে কিছু উসকানিদাতা পেছন থেকে কাজ করছে এবং জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবি তুলছে। আজ দেশের আইনশৃঙ্খলার ভঙ্গুর অবস্থা, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কলার চেপে ধরা হচ্ছে। এই লাল-সবুজের পতাকা, স্বাধীনতা ও ভূখণ্ড বিপদের সম্মুখীন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তারা মব বন্ধ করেছে। এই মব সংস্কৃতি চলতে থাকলে দেশ অস্থিতিশীল হবে এবং আমরা যে নির্বাচনের কথা চিন্তা করছি তা শঙ্কার মধ্যে পড়বে। বর্তমানে জাতীয় পার্টির পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে স্পষ্ট করে বলতে চাই রংপুরে এসব বরদাস্ত করা হবে না। দেহে একবিন্দু রক্ত আছে যতদিন, ততদিন কোনো অন্যায় বরদাস্ত করা হবে না।
দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ইয়াসির আহমেদ বলেন, গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ঢাকায় জাতীয় পার্টি অফিসে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের দলের ৮-১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। পুলিশ মব সন্ত্রাসকারীদের থামানোর চেষ্টা করেও পারেনি। সেজন্য তারা বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করেছে। আমাদের ওপর কেউ আঘাত করতে আসলে তাদের দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
এদিকে ঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলটির নেতাকর্মীরা। শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাব থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এরপর সমাবেশে বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য হানিফ খান সজীব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ, গণঅধিকার পরিষদের জেলা সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল রতনসহ অন্যরা।
এ সময় বক্তারা বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মতো পুলিশ এখনো নারকীয়ভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর রাষ্ট্রযন্ত্র হামলা চালাচ্ছে। ভিপি নুর দেশের একজন সাহসের প্রতীক। স্বৈরাচারের দোসরদের রক্ষায় তার ওপর হামলা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
অন্যদিকে নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতারা। নগরীর প্রেসক্লাব থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের সাবেক আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি, সাবেক মুখপাত্র খন্দকার নাহিদ ইসলাম, সংগঠক মোতাওয়াক্কিল বিল্লাহ শাহ ফকির প্রমুখ।

ডেস্ক রিপোর্ট 























