ঢাকা ০৭:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

পাখির বাড়ি

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০৪:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩৫ বার দেখা হয়েছে

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :

দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে পাখিরা বসবাস করায় বাড়িটি এখন স্থানীয়দের কাছে শিক্ষক আখতার হোসেনের বাড়িটি পরিচিতি পেয়েছে পাখির বাড়ি নামে। বাড়িটির গাছে গাছে বাস করছে বিভিন্ন দশীয় প্রজাতির হাজারো পাখি

দিনশেষে পাখিরা ঘরে ফেরে। গাছের ডালপালাই তাদের সেই ঘর। সব গাছই পাখিদের ঘর হয় না। যেখানে নিরাপদ আশ্রয় রয়েছে পাখিরা সেরকম স্থানকেই ঘর হিসেবে বেছে নেয়। সেখানেই বাসা করে থাকতে শুরু করে তারা।

এই পাখির বাড়ি হলো পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের মুসুলিয়াবাদ গ্রামে আখতার হোসেনের বাড়ি। তিনি বাড়ির অদূরে পূর্ব মধুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী প্রধান শিক্ষক। তার বাড়িতে থাকা গাছগুলোতে ৪০ বছর ধরে থাকছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। ফলে এলাকাবাসীর কাছে ‘পাখির বাড়ি’ নামে পরিচিত পেয়েছে আখতার হোসেনের ছিমছাম বাড়িটি।

সম্প্রতি ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে , বাড়িটি চারপাশ বিভিন্ন প্রজাতির বনজ গাছ-গাছালিতে ভরা। হাজারো সাদা বক, পানকৌড়ি আর বাদুর এই গাছগুলোকে নিজেদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে। অসংখ্য পাখির মলত্যাগের কারণে আখতার হোসেনের পরিবারের সদস্যরা কিছুটা বিরক্ত হলেও পাখিদের সঙ্গে তাদের তৈরি হয়েছে সখ্যতা। অধিকাংশ সময় ডাক দিলেই পাখিরা গাছ থেকে চলে আসে তাদের হাতের নাগালে

পাখিদের বিরক্ত করা তো দূরের কথা তাদের নিরাপত্তার জন্য পরিবারের সব সদস্যরা রাখেন আলাদা নজর। শুধু পরিবারের সদস্যরাই নয়, পাখিরদের নিরাপদ চলাফেরার জন্য এলাকাবাসীও যথেষ্ট সচেতন। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে পাখিরা বসবাস করায় বাড়িটি এখন স্থানীয়দের কাছে পরিচিতি পেয়েছে পাখির বাড়ি নামে।

গ্রামের বাসিন্দা সায়েম হোসেন বলেন, ছোট থেকেই দেখছি, আখতার স্যারের বাড়িতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর পাখি বাস করে। বাড়িটিতে গেলেই প্রাণ জুড়িয়ে যায়। আমরা সব সময় নজরদারি রাখি, যাতে পাখিদের কেউ বিরক্ত করতে না পারে।”

গ্রামের অপর বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব ইকরামুল হোসেন বলেন, “পাখিরা সব গাছ ও বাড়িতে থাকে না। অনেকটা উচু, বেশি ডালপালা বিশিষ্ট গাছ- গাছালী, যান্ত্রিক শব্দ দুষণ নেই, কেউ বিরক্ত করেনা এমন বাড়িতেই সাধারণত পাখিরা বাসা বাধে এবং নির্বিঘ্নে বাস করে। পাখিদের বসবাসের উপযোগী বলেই শিক্ষক আখতার হোসেনের বাড়িতে প্রায় ৪০ বছর ধরে পাখিগুলো থাকছে। তাদের পরিবারের সবাই পাখির খুব যত্ন করে।”

শিক্ষক আখতার হোসেন বলেন, “অনেক সময় আহত পাখি নীড়ে ফেরে। বা মাঝে মাঝে কোনো পাখি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসব আহত বা অসুস্থ পাখিদের আলাদা যত্ন নেই, প্রয়োজনে চিকিৎসা দেই। আবার অনেক পাখির বাচ্চা খাবার খেতে পারে না। গাছ থেকে নামিয়ে সেগুলোকে নিয়মিত খাবার খাওয়াই। পরিবারের সবাই পাখিগুলোর নিরাপত্তার জন্য সব সময় নজর রাখি। তাই আমার পরিবারের সবার সঙ্গেই পাখিদের একটা মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে।

পাখিদের কলকাকলী, কিচির-মিচির শব্দ আমাদের কাছে ভালোই লাগে, যোগ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, “অসংখ্য পাখির মলত্যাগের কারণে বাড়িতে কিছুটা দুর্গন্ধ হয়। আমরা সবসময় দুর্গন্ধ নাশক ঔষধ ছিটিয়ে বাড়িতে থাকি। আশা করছি, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাকারী পাখি সুরক্ষায় সমাজের সবাই এগিয়ে আসবেন।”

মহিপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, “পাখির আবাসস্থল হিসেবে পরিচিতি পাওয়া শিক্ষক আখতারের বাড়ি পরিদর্শন করে ভালো লেগেছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে পাখিদের জন্য তাকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।”

নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে আইআরআই

পাখির বাড়ি

প্রকাশিত : ০৪:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :

দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে পাখিরা বসবাস করায় বাড়িটি এখন স্থানীয়দের কাছে শিক্ষক আখতার হোসেনের বাড়িটি পরিচিতি পেয়েছে পাখির বাড়ি নামে। বাড়িটির গাছে গাছে বাস করছে বিভিন্ন দশীয় প্রজাতির হাজারো পাখি

দিনশেষে পাখিরা ঘরে ফেরে। গাছের ডালপালাই তাদের সেই ঘর। সব গাছই পাখিদের ঘর হয় না। যেখানে নিরাপদ আশ্রয় রয়েছে পাখিরা সেরকম স্থানকেই ঘর হিসেবে বেছে নেয়। সেখানেই বাসা করে থাকতে শুরু করে তারা।

এই পাখির বাড়ি হলো পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের মুসুলিয়াবাদ গ্রামে আখতার হোসেনের বাড়ি। তিনি বাড়ির অদূরে পূর্ব মধুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী প্রধান শিক্ষক। তার বাড়িতে থাকা গাছগুলোতে ৪০ বছর ধরে থাকছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। ফলে এলাকাবাসীর কাছে ‘পাখির বাড়ি’ নামে পরিচিত পেয়েছে আখতার হোসেনের ছিমছাম বাড়িটি।

সম্প্রতি ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে , বাড়িটি চারপাশ বিভিন্ন প্রজাতির বনজ গাছ-গাছালিতে ভরা। হাজারো সাদা বক, পানকৌড়ি আর বাদুর এই গাছগুলোকে নিজেদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে। অসংখ্য পাখির মলত্যাগের কারণে আখতার হোসেনের পরিবারের সদস্যরা কিছুটা বিরক্ত হলেও পাখিদের সঙ্গে তাদের তৈরি হয়েছে সখ্যতা। অধিকাংশ সময় ডাক দিলেই পাখিরা গাছ থেকে চলে আসে তাদের হাতের নাগালে

পাখিদের বিরক্ত করা তো দূরের কথা তাদের নিরাপত্তার জন্য পরিবারের সব সদস্যরা রাখেন আলাদা নজর। শুধু পরিবারের সদস্যরাই নয়, পাখিরদের নিরাপদ চলাফেরার জন্য এলাকাবাসীও যথেষ্ট সচেতন। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে পাখিরা বসবাস করায় বাড়িটি এখন স্থানীয়দের কাছে পরিচিতি পেয়েছে পাখির বাড়ি নামে।

গ্রামের বাসিন্দা সায়েম হোসেন বলেন, ছোট থেকেই দেখছি, আখতার স্যারের বাড়িতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর পাখি বাস করে। বাড়িটিতে গেলেই প্রাণ জুড়িয়ে যায়। আমরা সব সময় নজরদারি রাখি, যাতে পাখিদের কেউ বিরক্ত করতে না পারে।”

গ্রামের অপর বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব ইকরামুল হোসেন বলেন, “পাখিরা সব গাছ ও বাড়িতে থাকে না। অনেকটা উচু, বেশি ডালপালা বিশিষ্ট গাছ- গাছালী, যান্ত্রিক শব্দ দুষণ নেই, কেউ বিরক্ত করেনা এমন বাড়িতেই সাধারণত পাখিরা বাসা বাধে এবং নির্বিঘ্নে বাস করে। পাখিদের বসবাসের উপযোগী বলেই শিক্ষক আখতার হোসেনের বাড়িতে প্রায় ৪০ বছর ধরে পাখিগুলো থাকছে। তাদের পরিবারের সবাই পাখির খুব যত্ন করে।”

শিক্ষক আখতার হোসেন বলেন, “অনেক সময় আহত পাখি নীড়ে ফেরে। বা মাঝে মাঝে কোনো পাখি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসব আহত বা অসুস্থ পাখিদের আলাদা যত্ন নেই, প্রয়োজনে চিকিৎসা দেই। আবার অনেক পাখির বাচ্চা খাবার খেতে পারে না। গাছ থেকে নামিয়ে সেগুলোকে নিয়মিত খাবার খাওয়াই। পরিবারের সবাই পাখিগুলোর নিরাপত্তার জন্য সব সময় নজর রাখি। তাই আমার পরিবারের সবার সঙ্গেই পাখিদের একটা মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে।

পাখিদের কলকাকলী, কিচির-মিচির শব্দ আমাদের কাছে ভালোই লাগে, যোগ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, “অসংখ্য পাখির মলত্যাগের কারণে বাড়িতে কিছুটা দুর্গন্ধ হয়। আমরা সবসময় দুর্গন্ধ নাশক ঔষধ ছিটিয়ে বাড়িতে থাকি। আশা করছি, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাকারী পাখি সুরক্ষায় সমাজের সবাই এগিয়ে আসবেন।”

মহিপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, “পাখির আবাসস্থল হিসেবে পরিচিতি পাওয়া শিক্ষক আখতারের বাড়ি পরিদর্শন করে ভালো লেগেছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে পাখিদের জন্য তাকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।”