নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেছেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসাহ দিতে আমরা চেষ্টা করছি প্রতিটি উপজেলায় যতগুলো সম্ভব মন্দির পরিদর্শন করতে। আমরা তাদের পাশে থাকার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এই দেশ আমার—আমাদের সবার। আমরা সকলে মিলে কাঙ্ক্ষিত এমন একটা সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলব, যেখানে সিস্টেম নিজেই কাজ করবে—কেউ সিস্টেমকে কাজ করাবে না। প্রতিটি ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষ তাদের নিজেদের ঐতিহ্য নিয়ে বেড়ে উঠবে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) শারদীয় দুর্গাপূজার মহাসপ্তমীতে তিনি বন্দর উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে এ মন্তব্য করেন।
দিনের শুরুতে জেলা প্রশাসক চর শ্রীরামপুর (জহরপুর) মুছাপুরে শ্রী শ্রী ব্রহ্মা মন্দির ও উপাসনালয়, শ্রী শ্রী দুর্গামন্দির পঞ্চায়েত কমিটি মণ্ডপ এবং শ্রী শ্রী রক্ষাকালী মন্দির মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। পরে তিনি লাঙ্গলবন্দ রাজঘাট শ্রী শ্রী সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি (স্থায়ী) মণ্ডপে যান এবং পূজার সার্বিক পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক পূজামণ্ডপের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় দর্শনার্থীদের স্বাগত ও আপ্যায়নে কোনো ঘাটতি না থাকে, সেজন্য রক্ষাকালী মন্দির এবং রাজঘাট মণ্ডপকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন।
তিনি পূজা উদযাপনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, দুর্গাপূজা কেবল হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, এটি আমাদের সবার উৎসব। এখানে যে উৎসবমুখর পরিবেশ, তা আমাদের সামাজিক ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক।
শ্রী শ্রী ব্রহ্মা মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী শ্যামল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, পাকিস্তান আমলে আমাদের এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এই মন্দিরে কখনও কোনো জেলা প্রশাসক আসেননি। এলাকাটি জেলার অন্যান্য অঞ্চল থেকে কিছুটা কম জনবসতিপূর্ণ এবং দুর্গম চরাঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় আমরা অনেকটা উপেক্ষিত ছিলাম। মহা সপ্তমীর এই দিনে ডিসি স্যার উপস্থিত হওয়ায় আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের সবাই খুব উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত।
জেলা প্রশাসকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট কানিজ ফারজানা শান্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) নাঈমা ইসলাম, বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।