ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে জামায়াত সমর্থিত সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থী বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছেন এক ছাত্রশিবির নেতা।
শনিবার (১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘মিনহাজুল হক উসমানি’ নামক ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই শিবির নেতা। তবে রোববার তার এই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
পদত্যাগ করা শিবির ওই নেতার নাম মিনহাজুল হক উসমানি। তিনি নান্দাইল উপজেলা পশ্চিম ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি এবং বতর্মানে উপজেলা কমিটির বায়তুলমাল (দপ্তর ও অর্থ) বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন—দায়িত্বে থাকার সময় তিনি স্থানীয় জামায়াতের এমপি প্রার্থীর অ্যাডভোকেট চান মিয়া চাঁদাবাজি ও অনিয়মের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। বিষয়টি তখন উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বিচারাধীন ছিল।
ফেসবুক পোস্টে মিনহাজুল আরও লিখেছেন, ‘আমার বাবার নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছিল। তদন্তে প্রমাণ হয় আমাদের ব্যবসায় কোনো পার্টনারশিপ নেই। তারপরও আমার বাবাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হয়। নতুন নেতৃত্ব আসার পর সেই অন্যায্য বিচার আবারও পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। ন্যায়বিচারের আশায় আমি পদত্যাগ করেছি। যদি এখনো পক্ষপাতমূলক বা মিথ্যা বিচার হয়, তবে তা আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিলাম।’
অন্য এক পোস্টে এই শিবির নেতা লেখেন, ‘ছাত্রশিবিরের সব দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছি। কোনো কাগজ না শুনে বা সাক্ষী না নিয়ে শুধু মুখ দেখে বিচার করা—এটা কেমন বিচার?’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লেখেন, ‘আমার বয়স ২৪, কিন্তু কেউ আমার বা আমার বাবার সামনে এসে সত্য বলতে সাহস করেনি। যারা পেছনে কথা বলে, তাদের আমরা মুনাফিক বা তৃতীয় লিঙ্গের সঙ্গে তুলনা করি।’
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জামায়াত সমর্থিত এমপি প্রার্থী এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে আপনারা এলাকায় খোঁজখবর নিতে পারেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা জামায়াতে ইসলামির আমির কাজী শামসুদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘মিনহাজুলের বাবা সাইফুল ইসলাম বিএনপির কর্মী। ওনার সঙ্গে টাকা-পয়সার বিরোধ আছে অন্য লোকজনের। এ ঘটনায় তার ছেলে মিনহাজুল হক উসমানি আমাদের মাধ্যমে ওই ঘটনার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীকে জড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা এতে সায় না দেওয়ায় সে ফেসবুকে উল্টাপাল্টা লিখছে। মূলত মিনহাজুল হক উসমানি উপজেলা ছাত্রশিবিরের পদধারী নেতা হলেও সে অনেকদিন ধরে সংগঠনে নিস্ক্রিয়। আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ মিথ্যা।
জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল করিম বলেন, ‘যে কেউ সংগঠন থেকে পদত্যাগ করতেই পারে। তবে চাঁদাবাজি ও অনিয়মের অভিযোগ মিথ্যা।’ তিনি আরও বলেন, ‘ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে জামায়াত সমর্থিত এমপি প্রার্থী বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন মিয়া। তার পক্ষে বতর্মানে জামায়াতের নেতাকর্মীরা কাজ করছে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।’

ডেস্ক রিপোর্ট 























