ঢাকা ০৪:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

চাকরিপ্রার্থী নয়, উদ্যোক্তা হিসেবে তরুণদের গড়ে তোলা হবে : ড. ইউনূস

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০৮:২১:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩০ বার দেখা হয়েছে

দেশের তরুণ প্রজন্মকে কেবল চাকরিপ্রার্থী হিসেবে নয়, বরং উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্ম উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে তারা সমাজ পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে। তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নবায়নযোগ্য শক্তি ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে সরকার।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, তরুণ প্রজন্ম ইতোমধ্যেই প্রমাণ করেছে তারা সমাজ পরিবর্তনের শক্তি। সরকার তাদের নেতৃত্ব বিকাশ, দক্ষতা বৃদ্ধি ও ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে। মূল লক্ষ্য হলো, তরুণদের কেবল চাকরিপ্রার্থী হিসেবে নয়, উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা, যাতে তারা নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করে সামাজিক সমস্যার সমাধানে অবদান রাখতে পারে।

তিনি আরও বলেন, এ উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে অংশীদারিত্বে মাঠ পর্যায়ের তরুণদের সঙ্গে সরকারের শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের যুক্ত করার একটি স্থায়ী মাধ্যম চালু হয়েছে। ইতোমধ্যেই সারা দেশে একাধিক পরামর্শ সভা আয়োজন করা হয়েছে। তরুণরা স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত হতে চায়।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তরুণরা চান প্রক্রিয়াটিতে জবাবদিহিতা অন্তর্ভুক্ত হোক, নিয়মিত অগ্রগতি প্রতিবেদন থাকুক এবং সংলাপ অব্যাহত থাকবে। প্রক্রিয়াটি অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে, যাতে নারী, সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সমান অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের সুযোগ পান।

তিনি উল্লেখ করেন, এ বছর বিশ্ব যুব কর্মপরিকল্পনার ৩০তম বার্ষিকী, যা তরুণদের জন্য তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জের সমাধান খুঁজে বের করার সুযোগ নিয়ে এসেছে। দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির যুগে, ডিজিটাল বিভাজনের কারণে তরুণদের ঝুঁকির বিষয়গুলো বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, শুধু প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন যথেষ্ট নয়, সামাজিক উদ্ভাবনও জরুরি। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ক্ষুদ্রঋণ প্রথমে বিপ্লবী ধারণা হলেও আজ এটি বিশ্বব্যাপী দরিদ্রদের ক্ষমতায়নের শক্তিশালী হাতিয়ার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বছরে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে নিম্ন-আয়ের নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে, যা শতভাগ নিয়মিতভাবে পরিশোধ হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে সামাজিক ব্যবসার ধারণা সম্প্রসারিত হচ্ছে—যেখানে মুনাফা পুনরায় সামাজিক কল্যাণে বিনিয়োগ হয়। সামাজিক ব্যবসা প্রমাণ করছে যে উদ্যোক্তা সত্তা সামাজিক কল্যাণ ও সমস্যা সমাধানে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা সম্ভব। পরিবেশ, স্বাস্থ্য, বেকারত্ব, দারিদ্র্য—সবক্ষেত্রেই এই পদ্ধতি টেকসই সমাধান হিসেবে কাজ করছে।

ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, তরুণদের উদ্যোক্তা শক্তিকে কাজে লাগানোই ভবিষ্যতের টেকসই সমাজ বিনির্মাণের মূল চাবিকাঠি।

চাকরিপ্রার্থী নয়, উদ্যোক্তা হিসেবে তরুণদের গড়ে তোলা হবে : ড. ইউনূস

প্রকাশিত : ০৮:২১:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশের তরুণ প্রজন্মকে কেবল চাকরিপ্রার্থী হিসেবে নয়, বরং উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্ম উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে তারা সমাজ পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে। তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নবায়নযোগ্য শক্তি ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে সরকার।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, তরুণ প্রজন্ম ইতোমধ্যেই প্রমাণ করেছে তারা সমাজ পরিবর্তনের শক্তি। সরকার তাদের নেতৃত্ব বিকাশ, দক্ষতা বৃদ্ধি ও ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে। মূল লক্ষ্য হলো, তরুণদের কেবল চাকরিপ্রার্থী হিসেবে নয়, উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা, যাতে তারা নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করে সামাজিক সমস্যার সমাধানে অবদান রাখতে পারে।

তিনি আরও বলেন, এ উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে অংশীদারিত্বে মাঠ পর্যায়ের তরুণদের সঙ্গে সরকারের শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের যুক্ত করার একটি স্থায়ী মাধ্যম চালু হয়েছে। ইতোমধ্যেই সারা দেশে একাধিক পরামর্শ সভা আয়োজন করা হয়েছে। তরুণরা স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত হতে চায়।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তরুণরা চান প্রক্রিয়াটিতে জবাবদিহিতা অন্তর্ভুক্ত হোক, নিয়মিত অগ্রগতি প্রতিবেদন থাকুক এবং সংলাপ অব্যাহত থাকবে। প্রক্রিয়াটি অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে, যাতে নারী, সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সমান অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের সুযোগ পান।

তিনি উল্লেখ করেন, এ বছর বিশ্ব যুব কর্মপরিকল্পনার ৩০তম বার্ষিকী, যা তরুণদের জন্য তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জের সমাধান খুঁজে বের করার সুযোগ নিয়ে এসেছে। দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির যুগে, ডিজিটাল বিভাজনের কারণে তরুণদের ঝুঁকির বিষয়গুলো বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, শুধু প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন যথেষ্ট নয়, সামাজিক উদ্ভাবনও জরুরি। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ক্ষুদ্রঋণ প্রথমে বিপ্লবী ধারণা হলেও আজ এটি বিশ্বব্যাপী দরিদ্রদের ক্ষমতায়নের শক্তিশালী হাতিয়ার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বছরে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে নিম্ন-আয়ের নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে, যা শতভাগ নিয়মিতভাবে পরিশোধ হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে সামাজিক ব্যবসার ধারণা সম্প্রসারিত হচ্ছে—যেখানে মুনাফা পুনরায় সামাজিক কল্যাণে বিনিয়োগ হয়। সামাজিক ব্যবসা প্রমাণ করছে যে উদ্যোক্তা সত্তা সামাজিক কল্যাণ ও সমস্যা সমাধানে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা সম্ভব। পরিবেশ, স্বাস্থ্য, বেকারত্ব, দারিদ্র্য—সবক্ষেত্রেই এই পদ্ধতি টেকসই সমাধান হিসেবে কাজ করছে।

ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, তরুণদের উদ্যোক্তা শক্তিকে কাজে লাগানোই ভবিষ্যতের টেকসই সমাজ বিনির্মাণের মূল চাবিকাঠি।