৭০ কোটি টাকার সম্পদ ও ১৫ হাজার কোটি টাকার সন্দেহভাজন লেনদেন মামলার আসামি নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের লাক মিয়া ও তার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের আয়কর নথি চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশের সিআইডি বিভাগ থেকে পাঠানো চিঠির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লাক মিয়া এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বাবুর টাকা পাচারের অন্যতম সঙ্গী ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান লাক মিয়া। এমপি বাবু পূর্বে উপজেলার বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছিলেন। লাক মিয়া ৪১ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ ও ১৬ কোটি ৭৩ লাখ ৬৭ হাজার ১৪০ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৫৮ কোটি ৬৯ লাখ ৭৯ হাজার ১৪০ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেছেন।
আর তার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের মোট সম্পত্তি ১৫ কোটি ৮৭ লাখ ৭ হাজার ২১৫ টাকা। যার মধ্যে ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৯৩ হাজার ৪২৪ টাকা স্থাবর এবং ৮ কোটি ৩৯ লাখ ১৩ হাজার ৭৯১ টাকা অস্থাবর সম্পদ। লাক মিয়া ঘুষ ও দুর্নীতি, ভিজিডি, ভিজিএফ, এলজিএসপি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক জমি দখল, মাদক ব্যবসা এবং হুন্ডির মাধ্যমে এ সব সম্পদ অর্জন করেছেন।
এ অবস্থায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী-২০১৫) এর ৭ এর উপধারা (১) এর (ক)/(খ) অনুযায়ী তাদের নামে বা মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে আয়কর ফাইল থাকলে টিআইএন নম্বরসহ আয়কর ফাইলের অনুলিপি বা তার সত্যায়িত ছায়ালিপি প্রয়োজন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত ৬ মার্চ ৭০ কোটি টাকার সম্পদ ও ১৫ হাজার কোটি টাকার সন্দেহভাজন লেনদেনের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের লাক মিয়া ও তার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলা দায়ের করে দুদক।
মামলার এজাহারে লাক মিয়ার বিরুদ্ধে ৫৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর তার ৪৯ ব্যাংক হিসাবে ১৪ হাজার ৩৭৬ কোটি লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে দ্বিতীয় মামলায় তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম ও লাক মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকার সম্পদের অভিযোগ আনা হয়।