পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাঙ্গাবালীর চরহেয়ার সমুদ্র সৈকতে ঢেউয়ের সঙ্গে মিশে যায় ভক্তদের জপ ও প্রার্থনার ধ্বনি। সাগরের নোনা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে ধর্মীয় সুর— এমন শান্তিময় পরিবেশেই অনুষ্ঠিত হলো চরহেয়ার সৈকতের প্রথম রাস উৎসব।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের এই সৈকতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় উৎসব। রাতভর চলে কীর্তন, পূজা-অর্চনা ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান। বুধবার সূর্যোদয়ের প্রথম আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই ভক্তরা ঝাঁপিয়ে পড়েন সমুদ্রের জলে। নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধ সবাই অংশ নেন পুণ্যস্নানে।
তাদের বিশ্বাস—এই দিনে পুণ্যস্নান আত্মার পরিশুদ্ধি ঘটায়, মনের কামনা পূর্ণ হয়।

স্থানীয় ভক্ত খোকন দেবনাথ বলেন, “আমরা নিজেরা মিলেই আয়োজন করেছি। ভোরে এসে স্নান করেছি, পূজা করেছি। মনে অনেক শান্তি পেয়েছি।”
আরেক ভক্ত কমল দেবনাথ বলেন, “প্রথমবার এখানে রাস উৎসব হলো। সবাই আনন্দে অংশ নিয়েছি। আগামী বছর আরও বড় করে আয়োজন করতে চাই।”
তবে কোনো মেলা বা সাংস্কৃতিক আয়োজন ছিল না। শুধুমাত্র ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়েই সম্পন্ন হয় এই অনুষ্ঠান।
চরমোন্তাজ ও আশপাশের দ্বীপ এলাকা থেকে ভক্তরা আসেন নৌপথে। খবর পেয়ে অনেকে দর্শনার্থী হিসেবেও হাজির হন সৈকতে। ভোরের পুণ্যস্নান ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই ধর্মীয় উৎসব।

উৎসবকে ঘিরে পুরো চরহেয়ার সৈকতে সৃষ্টি হয় শান্তিপূর্ণ ও ধর্মীয় আবহ। স্থানীয়দের আশা—এ আয়োজন নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হলে একদিকে যেমন এলাকার ধর্মীয় ঐতিহ্য সমুন্নত থাকবে, তেমনি চরহেয়ার সৈকতের পর্যটন সম্ভাবনাও বাড়বে।
এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব দাশ পুরকায়স্থ বলেন, “চরহেয়ার সৈকতে প্রথমবারের মতো শান্তিপূর্ণভাবে ছোট পরিসরে রাস উৎসব সম্পন্ন হয়েছে। মেলা বা সাংস্কৃতিক আয়োজন না থাকলেও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়েই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী বছরগুলোতেও যদি এমন আয়োজন হয়, প্রশাসন সহযোগিতা করবে।”

ডেস্ক রিপোর্ট 






















