নরসিংদীতে গ্যাস সংযোগের পাইপলাইনের লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আকলিমা বেগম (৩০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এসময় তার ২ শিশু সন্তানও দগ্ধ হয়। গুরুতর আহতবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সোমবার (৪ আগস্ট) রাত ১১টায় নরসিংদীর মাধবদী নুরালাপুর ইউনিয়নের আলগী গ্রামের নিহত নারীর নিজ বসতঘরে গ্যাসের চুলা জ্বালানোর সময় লিকেজ থেকে হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত আকলিমা বেগম এম আর এমরানের স্ত্রী। তিনি স্থানীয় একটি টেক্সটাইল মিলে শ্রমিকের কাজ করতেন। এ ঘটনায় তার ছেলে সিয়াম (১২) ও মেয়ে সামিয়াও (১৪) দগ্ধ হয়েছে।
স্থানয়ীরা জানিয়েছেন, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নরসিংদীর মাধবদী নুরালাপুর ইউনিয়নের আলগী গ্রামে বসবাসরত শ্রমিক আকলিমা বেগম রাতের খাবার গরম করার জন্য চুলা জ্বালানোর চেষ্টা করেন। ওই সেময় রাদিয়াশলাই জ্বালানোর সাথে সাথে ঘরে আগুন লেগে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় আকলিমা ও তার দুই সন্তান সিয়াম ও সামিয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে আহত হয়। পরে স্থানয়ী তাদের উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও পরে অবস্থার অবনতি হলে তাদের রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে আকলিমার মৃত্যু হয়।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ নরসিংদী তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপক মাকসুদুর রহমানের পরোক্ষ মদদে তার নিজ এলাকা নরসিংদীর মাধবদী নুরালাপুর ও আলগীসহ মাধবদী এলাকায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে আসছে একটি চক্র। এর প্রেক্ষিতে এলাকাবাসী কয়েকবার নরসিংদী তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আর সঠিক সময় ব্যবস্থা গ্রহণ না নেওয়ায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করছে স্থানীয়রা।
এর আগে (৪ জুলাই) সোমবার ভোর পাঁচটার দিকে তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন ফেটে আগুন লাগায় শহর ও আশেপাশে এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সারাদিন গ্যাস সরবরাহ না থাকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ জেলার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার গ্রাহক চরম দুর্ভোগে পড়েন।
এ বিষয়ে কথা বলতে নরসিংদী তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপক মাকসুদুর রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে মাধবদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, অগ্নিদগ্ধে নিহত আকলিমার লাশ এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। খোঁজ খবর নিচ্ছি। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।