ঢাকা ১০:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রসূতির পেটে গজ রেখে সেলাই

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০১:১৯:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৭ বার দেখা হয়েছে

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারকালে এক প্রসূতির পেটে গজ-প্যাড (স্যানিটারি ন্যাপকিন) রেখে সেলাই করে রিলিজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে নার্স ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী নারী ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের নিশ্চিন্তপুর এলাকার মো. আবুজর গিফারীর স্ত্রী।

ভুক্তভোগীরা জানান, গত ২৫ জুলাই মধ্যরাতে সাথী আক্তারের প্রসব ব্যথা ওঠার কারণে তার স্বামী আবুজর গিফারী ভোররাতে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করান। তার কিছুক্ষণ পর নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সাথী আক্তার সন্তান প্রসব করেন। এ সময় সাথী আক্তারের এক সাইডে অস্ত্রোপচার করা হয়।

অস্ত্রোপচার শেষে নার্সরা ভেতরে গজ ও একটি প্যাড রেখে সেলাই করে দেন। পরদিন হাসপাতালের গাইনি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিশ রহমানের উপস্থিতিতে সাথী আক্তারকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর গত রোববার (১৭ আগস্ট) রোগীর প্রচণ্ড ব্যথা উঠলে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বেড রেস্ট দেন। পরে রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে গেলে ডাক্তার ডাকার জন্য নার্সদের বলা হলে তারা ডাক্তার ডাকতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বলে এখন ডাক্তারের রাউন্ড শেষ হয়ে গেছে তাই ডাক্তার আর কোনো রোগী দেখবেন না। পরদিন ডাক্তার আসলে তখন দেখানো হবে।

এ সময় কর্তব্যরত নার্সরা বলে ওঠেন, রোগীর বেশি সমস্যা হলে বাইরে প্রাইভেটভাবে চিকিৎসা করান। এরপর রোগীর স্বজনরা ডা. জিন্নাত পারভীনের কাছে নিয়ে গেলে তিনি অবজারভেশন করেন এবং রোগীর প্রসাবের রাস্তা থেকে একটি সম্পূর্ণ প্যাড (স্যানিটারি ন্যাপকিন) বের করেন।

এ বিষয়ে রোগীর স্বামী আবুজর গিফারী অভিযোগ করে বলেন, গতকাল আমার স্ত্রী ব্যথা অনুভব করলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানকার নার্স ও চিকিৎসকদের কাছে ভালো সেবা না পেয়ে ডা. জিন্নাত পারভীনের কাছে যাই। তিনি আমার স্ত্রীকে ভালোভাবে চেকআপ করে গজ ও একটি প্যাড বের করেন। এটা যদি আরও কিছুদিন ভেতরে থাকতো তাহলে আমার স্ত্রীকে বাঁচানো যেত না।

তিনি আরও বলেন, ডা. আইরিশ রহমান কীভাবে একজন রোগীকে ভালো ভাবে না দেখে রিলিজ দিলেন? অবশ্যই তার গাফিলতি রয়েছে। এর আগেও এই চিকিৎসকের নামে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। তারপরও কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না? শুধু চিকিৎসক নন, হাসপাতালের নার্সদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তারা ঠিকমতো রোগীদের সেবা করেন না। আমি ওই চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আশা করি তত্ত্বাবধায়ক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।

তবে এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিশ রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহা. ফিরোজ জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রোগীর স্বজনরা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কোনো গাফিলতি পাওয়া যায় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বামনায় ধানের শীষে ভোট চেয়ে ছাত্রদলের নির্বাচনী মিছিল

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রসূতির পেটে গজ রেখে সেলাই

প্রকাশিত : ০১:১৯:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারকালে এক প্রসূতির পেটে গজ-প্যাড (স্যানিটারি ন্যাপকিন) রেখে সেলাই করে রিলিজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে নার্স ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী নারী ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের নিশ্চিন্তপুর এলাকার মো. আবুজর গিফারীর স্ত্রী।

ভুক্তভোগীরা জানান, গত ২৫ জুলাই মধ্যরাতে সাথী আক্তারের প্রসব ব্যথা ওঠার কারণে তার স্বামী আবুজর গিফারী ভোররাতে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করান। তার কিছুক্ষণ পর নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সাথী আক্তার সন্তান প্রসব করেন। এ সময় সাথী আক্তারের এক সাইডে অস্ত্রোপচার করা হয়।

অস্ত্রোপচার শেষে নার্সরা ভেতরে গজ ও একটি প্যাড রেখে সেলাই করে দেন। পরদিন হাসপাতালের গাইনি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিশ রহমানের উপস্থিতিতে সাথী আক্তারকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর গত রোববার (১৭ আগস্ট) রোগীর প্রচণ্ড ব্যথা উঠলে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বেড রেস্ট দেন। পরে রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে গেলে ডাক্তার ডাকার জন্য নার্সদের বলা হলে তারা ডাক্তার ডাকতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বলে এখন ডাক্তারের রাউন্ড শেষ হয়ে গেছে তাই ডাক্তার আর কোনো রোগী দেখবেন না। পরদিন ডাক্তার আসলে তখন দেখানো হবে।

এ সময় কর্তব্যরত নার্সরা বলে ওঠেন, রোগীর বেশি সমস্যা হলে বাইরে প্রাইভেটভাবে চিকিৎসা করান। এরপর রোগীর স্বজনরা ডা. জিন্নাত পারভীনের কাছে নিয়ে গেলে তিনি অবজারভেশন করেন এবং রোগীর প্রসাবের রাস্তা থেকে একটি সম্পূর্ণ প্যাড (স্যানিটারি ন্যাপকিন) বের করেন।

এ বিষয়ে রোগীর স্বামী আবুজর গিফারী অভিযোগ করে বলেন, গতকাল আমার স্ত্রী ব্যথা অনুভব করলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানকার নার্স ও চিকিৎসকদের কাছে ভালো সেবা না পেয়ে ডা. জিন্নাত পারভীনের কাছে যাই। তিনি আমার স্ত্রীকে ভালোভাবে চেকআপ করে গজ ও একটি প্যাড বের করেন। এটা যদি আরও কিছুদিন ভেতরে থাকতো তাহলে আমার স্ত্রীকে বাঁচানো যেত না।

তিনি আরও বলেন, ডা. আইরিশ রহমান কীভাবে একজন রোগীকে ভালো ভাবে না দেখে রিলিজ দিলেন? অবশ্যই তার গাফিলতি রয়েছে। এর আগেও এই চিকিৎসকের নামে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। তারপরও কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না? শুধু চিকিৎসক নন, হাসপাতালের নার্সদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তারা ঠিকমতো রোগীদের সেবা করেন না। আমি ওই চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আশা করি তত্ত্বাবধায়ক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।

তবে এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিশ রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহা. ফিরোজ জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রোগীর স্বজনরা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কোনো গাফিলতি পাওয়া যায় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।