ঢাকা ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

জুলাই শহীদ আহনাফের নামে গ্রন্থাগার মিরপুর মডেল অ্যাকাডেমিতে

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০৬:৪৭:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫৫ বার দেখা হয়েছে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মেধাবী ছাত্র শহীদ শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফের স্মরণে রাজধানীর মিরপুর মডেল অ্যাকাডেমিতে গ্রন্থাগার উদ্বোধন করা হয়েছে।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এই গ্রন্থাগারের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আহনাফের আত্মত্যাগ তাৎক্ষণিকভাবে আন্দোলনের গতি ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তার অবদান অপরিসীম।

উপদেষ্টা আরও বলেন, আহনাফ ছিলেন স্বপ্নদ্রষ্টা এক তরুণ, যিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সে তার মাকে বলতো- একদিন আমি এমন কিছু করব, তোমরা আমার জন্য গর্বিত হবে। বাস্তবে সে শুধু তার মাকে নয়, পুরো বাংলাদেশকে গর্বিত করেছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মডেল অ্যাকাডেমির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোহাম্মদ শামীম পারভেজ, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. নাসির উদ্দীন, মডেল অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন এবং আহনাফের বাবা মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং মা জারতাজ পারভীন।

মডেল অ্যাকাডেমির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. নাসির উদ্দীন বলেন, আমরা যত কিছুই করি না কেন, জুলাই শহীদদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও আমরা তাদের স্মরণে কিছু করতে চেষ্টা করছি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ মডেল একাডেমিতে আমাদের কৃতি সন্তান শহীদ আহনাফের নামে গ্রন্থাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। এই গ্রন্থাগার শহীদ আহনাফকে চিরস্মরণীয় করতে রাখবে বলে বিশ্বাস করি।

শহীদ আহনাফের বাবা মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের ছেলের স্মরণে মডেল অ্যাকাডেমির এই উদ্যোগের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা চাই এই গ্রন্থাগার অ্যাকাডেমির নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য বাতিঘরে পরিণত হোক। আমরা উপদেষ্টার কাছে প্রস্তাব করেছি এই স্কুলের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীন আহনাফ মডেল অ্যাকাডেমি’ করার জন্য। উপদেষ্টাও এতে ইতিবাচক সম্মতি দিয়েছেন।

আহনাফের মা জারতাজ পারভীন বলেন, এই স্কুলে আহনাফের অনেক স্মৃতি রয়েছে। এখানে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পড়াশুনা শেষ করেছে আহনাফ। ওর পছন্দের খেলা ছিল ফুটবল। সময় পেলেই এই স্কুলের মাঠে ফুটবল খেলতো। এই স্কুলের শিক্ষকরা আহনাফকে অনেক পছন্দ করতো। তারা (শিক্ষকরা) চায়, নতুন প্রজন্ম যেন আহনাফকে ভুলে না যায় সেজন্যই এই গ্রন্থাগারের নামকরণ আহনাফের নামে করা হয়েছে। আমি চাই, জুলাই আন্দোলনে যেসব শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন, তাদের চিরস্মরণীয় করে রাখতে প্রত্যেকের নামে সরকার কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কিছু একটা করা হোক।

মডেল অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, একটা স্কুলের প্রাণ হলো লাইব্রেরি বা গ্রন্থাগার। পাঠ্য বইয়ে পড়াশুনার একটা নির্দিষ্ট ঘণ্ডি রয়েছে। কিন্তু গ্রন্থাগার হলো জ্ঞানের সমুদ্র ভাণ্ডার। আহনাফের নামে যে গ্রন্থাগারটি আজকে উদ্বোধন করা হলো, এটার মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবেন।

গ্রন্থাগারটি পরিদর্শনে দেখা গেছে, এখানে গল্প, উপন্যাস, ধর্মীয় বই ও শিশুদের বইসহ বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতিচারণ নিয়ে একটি কর্নার করা হয়েছে গ্রন্থাগারে। যেখানে জুলাই সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন লেখকের বই রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর-১০ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন আহনাফ। তিনি বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকার একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। মিরপুর মডেল একাডেমি থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা শেষ করেন তিনি।

জুলাই শহীদ আহনাফের নামে গ্রন্থাগার মিরপুর মডেল অ্যাকাডেমিতে

প্রকাশিত : ০৬:৪৭:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মেধাবী ছাত্র শহীদ শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফের স্মরণে রাজধানীর মিরপুর মডেল অ্যাকাডেমিতে গ্রন্থাগার উদ্বোধন করা হয়েছে।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এই গ্রন্থাগারের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আহনাফের আত্মত্যাগ তাৎক্ষণিকভাবে আন্দোলনের গতি ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তার অবদান অপরিসীম।

উপদেষ্টা আরও বলেন, আহনাফ ছিলেন স্বপ্নদ্রষ্টা এক তরুণ, যিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সে তার মাকে বলতো- একদিন আমি এমন কিছু করব, তোমরা আমার জন্য গর্বিত হবে। বাস্তবে সে শুধু তার মাকে নয়, পুরো বাংলাদেশকে গর্বিত করেছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মডেল অ্যাকাডেমির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোহাম্মদ শামীম পারভেজ, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. নাসির উদ্দীন, মডেল অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন এবং আহনাফের বাবা মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং মা জারতাজ পারভীন।

মডেল অ্যাকাডেমির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. নাসির উদ্দীন বলেন, আমরা যত কিছুই করি না কেন, জুলাই শহীদদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও আমরা তাদের স্মরণে কিছু করতে চেষ্টা করছি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ মডেল একাডেমিতে আমাদের কৃতি সন্তান শহীদ আহনাফের নামে গ্রন্থাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। এই গ্রন্থাগার শহীদ আহনাফকে চিরস্মরণীয় করতে রাখবে বলে বিশ্বাস করি।

শহীদ আহনাফের বাবা মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের ছেলের স্মরণে মডেল অ্যাকাডেমির এই উদ্যোগের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা চাই এই গ্রন্থাগার অ্যাকাডেমির নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য বাতিঘরে পরিণত হোক। আমরা উপদেষ্টার কাছে প্রস্তাব করেছি এই স্কুলের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীন আহনাফ মডেল অ্যাকাডেমি’ করার জন্য। উপদেষ্টাও এতে ইতিবাচক সম্মতি দিয়েছেন।

আহনাফের মা জারতাজ পারভীন বলেন, এই স্কুলে আহনাফের অনেক স্মৃতি রয়েছে। এখানে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পড়াশুনা শেষ করেছে আহনাফ। ওর পছন্দের খেলা ছিল ফুটবল। সময় পেলেই এই স্কুলের মাঠে ফুটবল খেলতো। এই স্কুলের শিক্ষকরা আহনাফকে অনেক পছন্দ করতো। তারা (শিক্ষকরা) চায়, নতুন প্রজন্ম যেন আহনাফকে ভুলে না যায় সেজন্যই এই গ্রন্থাগারের নামকরণ আহনাফের নামে করা হয়েছে। আমি চাই, জুলাই আন্দোলনে যেসব শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন, তাদের চিরস্মরণীয় করে রাখতে প্রত্যেকের নামে সরকার কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কিছু একটা করা হোক।

মডেল অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, একটা স্কুলের প্রাণ হলো লাইব্রেরি বা গ্রন্থাগার। পাঠ্য বইয়ে পড়াশুনার একটা নির্দিষ্ট ঘণ্ডি রয়েছে। কিন্তু গ্রন্থাগার হলো জ্ঞানের সমুদ্র ভাণ্ডার। আহনাফের নামে যে গ্রন্থাগারটি আজকে উদ্বোধন করা হলো, এটার মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবেন।

গ্রন্থাগারটি পরিদর্শনে দেখা গেছে, এখানে গল্প, উপন্যাস, ধর্মীয় বই ও শিশুদের বইসহ বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতিচারণ নিয়ে একটি কর্নার করা হয়েছে গ্রন্থাগারে। যেখানে জুলাই সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন লেখকের বই রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর-১০ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন আহনাফ। তিনি বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকার একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। মিরপুর মডেল একাডেমি থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা শেষ করেন তিনি।