ঢাকা ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

ঝালকাঠির নদীতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইলিশ ধরা চলছেই

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ০৬:৩৫:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৩ বার দেখা হয়েছে

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকা সত্ত্বেও ঝালকাঠির নদীগুলোতে ইলিশ ধরার কার্যক্রম থামছে না। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান, জাল জব্দ, জরিমানা ও কারাদণ্ড চলমান থাকলেও নদীপাড়ে এখনও ইলিশ শিকারের ব্যস্ততা লক্ষ করা যাচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু জেলে গোপনে নদীতে নামছেন এবং প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রজননকালীন ইলিশ ধরছেন।

গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানের প্রথম দিন থেকেই মাঠে রয়েছে প্রশাসন। ভোর থেকেই ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিষখালী ও কীর্তনখোলা নদীতে নৌ-পুলিশ, মৎস্য বিভাগ, আনসার ও স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক দল একযোগে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় চারটি টহলদল ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকলেও ইলিশ শিকারে পুরোপুরি সফলতা পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, নিষিদ্ধ সময়ে কঠোর নজরদারি চালানো হচ্ছে। কোথাও কেউ গোপনে জাল ফেললে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে নৌকা ও জাল জব্দ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে দণ্ড ও জরিমানাও দেওয়া হচ্ছে। তবে জনবল সংকটের কারণে শতভাগ সফলতা অর্জন করা যাচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, গত ৮ দিনের অভিযানে প্রায় ৭৬ লাখ টাকার ৩.৯১ লক্ষ মিটার অবৈধ জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এ সময়ে পরিচালিত ৪৫টি মোবাইল কোর্টে ২২টি মামলা হয়েছে এবং ১৯ জন জেলেকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১১৯ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে, যা স্থানীয় ইয়াতিম খানায় বিতরণ করা হয়েছে।

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা জানান, নদীপথের দিক থেকে ঝালকাঠি দেশের অন্যতম নদীবিধৌত জেলা। এখানে ১৬টি প্রধান নদী রয়েছে, যেগুলোর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৯২ কিলোমিটার। এর মধ্যে জেলার অভ্যন্তরে নদীর অংশ ২৪৮ কিলোমিটার। এই নদীগুলোই জেলার নদীনির্ভর জীবিকা ও স্থানীয় অর্থনীতির মূলভিত্তি।

মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার বড় নদীগুলোর প্রায় ৮৫ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশের বিচরণ সবচেয়ে বেশি। যদিও বিগত বছরগুলোতে এর ব্যাপ্তি আরও বেশি ছিল।

ঝালকাঠি পৌর প্রশাসনসহ অন্যান্য প্রশাসনিক তথ্য অনুযায়ী, ইলিশ প্রজনন মৌসুমে জেলেদের সহায়তার জন্য ভিজিএফ কার্যক্রমের আওতায় চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ঝালকাঠি পৌরসভায় ২৩২ জন, নলছিটি পৌরসভায় ২৭৪ জন, কাঁঠালিয়া উপজেলায় ৯২৭ জন এবং রাজাপুর উপজেলায় ১ হাজার ৭২ জন জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার আলোকে মা ইলিশ সংরক্ষণে এই সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।

ঝালকাঠির নদীতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইলিশ ধরা চলছেই

প্রকাশিত : ০৬:৩৫:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকা সত্ত্বেও ঝালকাঠির নদীগুলোতে ইলিশ ধরার কার্যক্রম থামছে না। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান, জাল জব্দ, জরিমানা ও কারাদণ্ড চলমান থাকলেও নদীপাড়ে এখনও ইলিশ শিকারের ব্যস্ততা লক্ষ করা যাচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু জেলে গোপনে নদীতে নামছেন এবং প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রজননকালীন ইলিশ ধরছেন।

গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানের প্রথম দিন থেকেই মাঠে রয়েছে প্রশাসন। ভোর থেকেই ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিষখালী ও কীর্তনখোলা নদীতে নৌ-পুলিশ, মৎস্য বিভাগ, আনসার ও স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক দল একযোগে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় চারটি টহলদল ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকলেও ইলিশ শিকারে পুরোপুরি সফলতা পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, নিষিদ্ধ সময়ে কঠোর নজরদারি চালানো হচ্ছে। কোথাও কেউ গোপনে জাল ফেললে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে নৌকা ও জাল জব্দ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে দণ্ড ও জরিমানাও দেওয়া হচ্ছে। তবে জনবল সংকটের কারণে শতভাগ সফলতা অর্জন করা যাচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, গত ৮ দিনের অভিযানে প্রায় ৭৬ লাখ টাকার ৩.৯১ লক্ষ মিটার অবৈধ জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এ সময়ে পরিচালিত ৪৫টি মোবাইল কোর্টে ২২টি মামলা হয়েছে এবং ১৯ জন জেলেকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১১৯ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে, যা স্থানীয় ইয়াতিম খানায় বিতরণ করা হয়েছে।

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা জানান, নদীপথের দিক থেকে ঝালকাঠি দেশের অন্যতম নদীবিধৌত জেলা। এখানে ১৬টি প্রধান নদী রয়েছে, যেগুলোর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৯২ কিলোমিটার। এর মধ্যে জেলার অভ্যন্তরে নদীর অংশ ২৪৮ কিলোমিটার। এই নদীগুলোই জেলার নদীনির্ভর জীবিকা ও স্থানীয় অর্থনীতির মূলভিত্তি।

মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার বড় নদীগুলোর প্রায় ৮৫ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশের বিচরণ সবচেয়ে বেশি। যদিও বিগত বছরগুলোতে এর ব্যাপ্তি আরও বেশি ছিল।

ঝালকাঠি পৌর প্রশাসনসহ অন্যান্য প্রশাসনিক তথ্য অনুযায়ী, ইলিশ প্রজনন মৌসুমে জেলেদের সহায়তার জন্য ভিজিএফ কার্যক্রমের আওতায় চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ঝালকাঠি পৌরসভায় ২৩২ জন, নলছিটি পৌরসভায় ২৭৪ জন, কাঁঠালিয়া উপজেলায় ৯২৭ জন এবং রাজাপুর উপজেলায় ১ হাজার ৭২ জন জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার আলোকে মা ইলিশ সংরক্ষণে এই সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।