ঢাকা ০১:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

মামদানি ট্রাম্পকে ‘ভলিউম বাড়াতে’ বললেন

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ১১:১২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
  • ৬ বার দেখা হয়েছে

ইতিহাস তৈরি করে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর তার জয়ের পথে সবচেয়ে বেশি বাধা সৃষ্টিকারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তিনি।

ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার পর নিউইয়র্ক সিটির একটি মিলনায়তনে সমর্থকদের উদ্দেশে বিজয় ভাষণ দেন মামদানি।

সেখানে তিনি বলেন, “আজ নিউইয়র্ক সিটি দেখিয়ে দিয়েছে, কীভাবে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাকারী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে হয়। কেউ যদি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে চান, তিনি এই শহরকে দেখতে পারেন।”

“তো ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমি জানি আপনি আমাকে দেখছেন। আমার কিছু কথা আছে আপনার জন্য; দয়া করে ভলিউম বাড়িয়ে নিন।”

“নিউইয়র্কের নতুন প্রজন্ম পরিবর্তন চায়। আর এই পরিবর্তনের জন্য তারা আমাকে তাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করেছে। আমরা অভিজাততন্ত্র এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে সেই শক্তি দিয়েই সাড়া দেবো, যাতে তারা ভয় পায়। আমারা কোনোপ্রকার তুষ্টি, তোষণ বা তোষামোদের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই।”

বিজয় ভাষণে নাম উল্লেখ না করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘স্বৈরশাসক’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন মামদানি। বলেছেন, “কোনো স্বৈরশাসককে যদি ভয় দেখাতে হয়, তাহলে সর্বোত্তম উপায় হলো যেসব শর্ত ওই স্বৈরশাসককে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে সহায়তা করছে, সেগুলো অকার্যকর করে দেওয়া। যদি আমরা এমনটা করতে পারি, তাহলে শুধু ট্রাম্প নয়— তার পরবর্তীতে যদি কোনো স্বৈরশাসক আসে, তাকেও আমরা থামিয়ে দিতে পারব।”

“আর ট্রাম্পের উদ্দেশে বলছি, আপনি শুনে রাখুন— আমাদের কোনো একজনকে যদি আপনি আঘাত করতে চান, তাহলে সবাইকে আঘাত করতে হবে।”

নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মামদানি বলেন, “নিউইয়র্কের বাসিন্দারা, আজ আপনারা পরিবর্তনকে ম্যান্ডেট দিয়েছেন, নতুন রাজনীতিকে ম্যান্ডেট দিয়েছেন। আমরা নিউইয়র্ক শহরকে যেমন দেখতে চাই, তেমন একটি শহর গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিকে ম্যান্ডেট দিয়েছেন।”

অভিবাসী অধ্যুষিত নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য ডেমোক্রেটিক পার্টির শক্তিশালী ঘাঁটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং সরকারি দল রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই মামদানির বিরুদ্ধে ছিলেন।

নিউইয়র্কের এবারের মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন মোট ৩ জন—ডেমোক্রেটিক পার্টির জোহরান মামদানি, রিপাবলিকান পার্টির কার্টিস স্লিওয়া এবং নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা অ্যান্ড্রু কুওমো। কুওমো স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

মেয়র নির্বাচনে ৫০ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মামদানি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুয়োমো পেয়েছেন ৪২ শতাংশ ভোট এবং কার্টিস স্লিওয়া পেয়েছেন ৮ শতাংশ ভোট।

ট্রাম্প সমর্থন জানিয়েছিলেন কুওমোর প্রতি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, মামদানির বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারণা চালানোর জন্য আড়াই কোটি ডলার ব্যয় করেছে রিপাবলিকান পার্টি। এর পেছনে ছিলেন ট্রাম্প।

এছাড়া সম্প্রতি ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, মামদানি বিজয়ী হলে নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বরাদ্দ তিনি বন্ধ করে দেবেন।

নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় গতকাল রাতে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেচেন, ট্রাম্পের আর্থিক বরাদ্দ বন্ধের হুমকিকে ‘হালকাভাবে’ নেওয়া উচিত হবে না নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসনের।

 

মামদানি ট্রাম্পকে ‘ভলিউম বাড়াতে’ বললেন

প্রকাশিত : ১১:১২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

ইতিহাস তৈরি করে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর তার জয়ের পথে সবচেয়ে বেশি বাধা সৃষ্টিকারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তিনি।

ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার পর নিউইয়র্ক সিটির একটি মিলনায়তনে সমর্থকদের উদ্দেশে বিজয় ভাষণ দেন মামদানি।

সেখানে তিনি বলেন, “আজ নিউইয়র্ক সিটি দেখিয়ে দিয়েছে, কীভাবে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাকারী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে হয়। কেউ যদি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে চান, তিনি এই শহরকে দেখতে পারেন।”

“তো ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমি জানি আপনি আমাকে দেখছেন। আমার কিছু কথা আছে আপনার জন্য; দয়া করে ভলিউম বাড়িয়ে নিন।”

“নিউইয়র্কের নতুন প্রজন্ম পরিবর্তন চায়। আর এই পরিবর্তনের জন্য তারা আমাকে তাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করেছে। আমরা অভিজাততন্ত্র এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে সেই শক্তি দিয়েই সাড়া দেবো, যাতে তারা ভয় পায়। আমারা কোনোপ্রকার তুষ্টি, তোষণ বা তোষামোদের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই।”

বিজয় ভাষণে নাম উল্লেখ না করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘স্বৈরশাসক’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন মামদানি। বলেছেন, “কোনো স্বৈরশাসককে যদি ভয় দেখাতে হয়, তাহলে সর্বোত্তম উপায় হলো যেসব শর্ত ওই স্বৈরশাসককে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে সহায়তা করছে, সেগুলো অকার্যকর করে দেওয়া। যদি আমরা এমনটা করতে পারি, তাহলে শুধু ট্রাম্প নয়— তার পরবর্তীতে যদি কোনো স্বৈরশাসক আসে, তাকেও আমরা থামিয়ে দিতে পারব।”

“আর ট্রাম্পের উদ্দেশে বলছি, আপনি শুনে রাখুন— আমাদের কোনো একজনকে যদি আপনি আঘাত করতে চান, তাহলে সবাইকে আঘাত করতে হবে।”

নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মামদানি বলেন, “নিউইয়র্কের বাসিন্দারা, আজ আপনারা পরিবর্তনকে ম্যান্ডেট দিয়েছেন, নতুন রাজনীতিকে ম্যান্ডেট দিয়েছেন। আমরা নিউইয়র্ক শহরকে যেমন দেখতে চাই, তেমন একটি শহর গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিকে ম্যান্ডেট দিয়েছেন।”

অভিবাসী অধ্যুষিত নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য ডেমোক্রেটিক পার্টির শক্তিশালী ঘাঁটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং সরকারি দল রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই মামদানির বিরুদ্ধে ছিলেন।

নিউইয়র্কের এবারের মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন মোট ৩ জন—ডেমোক্রেটিক পার্টির জোহরান মামদানি, রিপাবলিকান পার্টির কার্টিস স্লিওয়া এবং নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা অ্যান্ড্রু কুওমো। কুওমো স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

মেয়র নির্বাচনে ৫০ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মামদানি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুয়োমো পেয়েছেন ৪২ শতাংশ ভোট এবং কার্টিস স্লিওয়া পেয়েছেন ৮ শতাংশ ভোট।

ট্রাম্প সমর্থন জানিয়েছিলেন কুওমোর প্রতি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, মামদানির বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারণা চালানোর জন্য আড়াই কোটি ডলার ব্যয় করেছে রিপাবলিকান পার্টি। এর পেছনে ছিলেন ট্রাম্প।

এছাড়া সম্প্রতি ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, মামদানি বিজয়ী হলে নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বরাদ্দ তিনি বন্ধ করে দেবেন।

নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় গতকাল রাতে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেচেন, ট্রাম্পের আর্থিক বরাদ্দ বন্ধের হুমকিকে ‘হালকাভাবে’ নেওয়া উচিত হবে না নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসনের।