নওগাঁ প্রতিনিধিঃ- নওগাঁ শহরে এখন একটাই আতঙ্ক—মশা । ঘর-বাড়ির খাট থেকে শুরু করে বাজারের দোকান, অফিস কিংবা চায়ের টং—যেখানেই বসুন না কেন, কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঝাঁকে ঝাঁকে মশা ঘিরে ধরছে। মশার এই অস্বাভাবিক দাপটে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা নাজুক হয়ে পড়েছে। আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা।গত তিন মাসেই নওগাঁয় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২৯২ জন। সিভিল সার্জন অফিস বলছে, এ বছর মোট ৩২১ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে এখনো কোনো মৃত্যুর ঘটনা না ঘটায় স্বস্তি থাকলেও শহরবাসীর মুখে তেমন হাসি নেই—কারণ আশপাশে যেন চলছে মশার রাজত্ব।সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শহরের অলিগলিতে নেই পর্যাপ্ত ডাস্টবিন। বাসাবাড়ির আবর্জনা রাস্তায় পড়ে থাকে দিনের পর দিন। ড্রেনগুলোতে জমে আছে পচা পানি ও ময়লা।

কোথাও কোথাও আবার ড্রেনের ঢাকনাই নেই—ফলে খোলা নর্দমা যেন মশার প্রজননকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। উকিলপাড়ার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, এই ড্রেন আর আবর্জনার স্তূপে মশার জন্ম হওয়াই স্বাভাবিক। আমরা কর দিই, কিন্তু সেবা কোথায়?” হাসপাতাল রোডের ইউনুস মণ্ডলের অভিযোগ—“সন্ধ্যার পর দোকানে বসলে মশা তাড়াতে তাড়াতে চা ঠান্ডা হয়ে যায়! অথচ স্প্রে তো দূরের কথা, পৌরকর্মীর ছায়াও দেখি না।”বাঙ্গাবাড়িয়ার গৃহিণী সুমি আক্তার বলেন,“মশার যন্ত্রণায় ঘরেই থাকা কষ্টকর। কয়েল জ্বালালে ধোঁয়ায় হাঁপাই, আর না জ্বালালে মশা কামড়ায়—এভাবে তো থাকা যায় না।বরাদ্দ নেই দুই বছর, তাই ‘যতটুকু পারে’ করছে পৌরসভা, নওগাঁ পৌরসভার প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন,“গত দুই বছর ধরে মশক নিধনের কোনো সরকারি বরাদ্দ নেই। তাই নিজস্ব রাজস্ব থেকেই কাজ চালাতে হচ্ছে।”তিনি আরও জানান,ফগার মেশিনের চেয়ে হ্যান্ড স্প্রেকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি, যাতে লার্ভা ধ্বংস করা যায়। প্রতিটি ওয়ার্ডে পর্যায়ক্রমে কাজ চলছে।”তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ—এই ‘পর্যায়ক্রম’ তারা বাস্তবে দেখতে পান না।ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে সচেতনতার তাগিদ সিভিল সার্জন ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন,“ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিধনের পাশাপাশি বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখা জরুরি।

সবাইকে সতর্ক ও সচেতন হতে হবে।”পৌরবাসীর প্রত্যাশা—কাগজে নয়, মাঠে কার্যকর উদ্যোগম শার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি আর বাড়তে থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা শহরবাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। তাদের দাবি—বরাদ্দ থাক বা না থাক, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় পৌরসভাকে আরও দৃশ্যমান, কার্যকর ও নিয়মিত উদ্যোগ নিতে হবে।

ডেস্ক রিপোর্ট 






















