ঢাকা ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

বরগুনায় কমছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ১০:৩৪:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ১ বার দেখা হয়েছে

বরগুনায় বছরের শুরুতেই দেশের সর্বাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে শুরু করলে এ জেলায় ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এমনকি কারণ অনুসন্ধানে হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনেও আসেন আইইডিসিআরের প্রতিনিধি দল। বছরের শুরুর দিকে প্রতিদিন প্রায় ১৫০-২০০ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় সর্বনিম্ন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন মাত্র ২ জন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর বরগুনায় ব্যাপক হারে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। পরে গত ১৫ জুন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৬ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ১৭ জুন সরেজমিনে হাসপাতালসহ বরগুনার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন।

বরগুনা সিভিল সার্জন অফিসের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি হয়েছেন একজন। বর্তমানে এ হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ১৩ জন। এছাড়া জেলার অন্য সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও কমেছে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা। শুধু পাথারঘাটা উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় একজন রোগী ভর্তি হলেও বাকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়নি ডেঙ্গু আক্রান্ত কোনো রোগী। তবে সব মিলিয়ে বর্তমানে জেলায় চিকিৎসাধিন রোগীর সংখ্যা ২৬ জন।

এ বছর জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৯ হাজার ৭৩২ জন। এদের মধ্যে শুধু বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৭ হাজার ৪২৩ জন। এবং বাকি পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন ২ হাজার ৩০৯ জন। তবে আক্রান্ত এসব রোগীর মধ্যে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ হাজার ৭০৬ জন। অপরদিকে বছর জুড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরগুনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এছাড়া পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২ জন এবং আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও এক জনসহ সরকারি হিসেবে জেলায় মোট ১৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও অন্তত ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বরগুনায় গত মার্চ মাসের দিকে ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা করা হয়। বরিশাল বিভাগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৪৬ ভাগ রোগীই বরগুনা জেলায় আক্রান্ত হয়েছে। গত দুইমাস ধরে বরগুনায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করলেও এর আগে আমরা ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে একটি ভয়াবহ সময় অতিবাহিত করেছি। তবে জেলায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায়  মাত্র ১৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসনসহ স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বর্তমানে জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় আমরা এখন স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছি।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আসা পরিস্থিতি ধরে রাখতে ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রেখেছি। এছাড়াও আইইডিসিআরের পরিদর্শনের পর যে সব এলাকায় ডেঙ্গুর লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে, বিশেষ করে সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়ন লাকুরতলা এলাকার মানুষদেরকে সচেতন হতে হবে। বৃষ্টির পানি যারা সংরক্ষণ করেন, তাদেরকে নিরাপদের পানি রেখে তা সংরক্ষণ করতে হবে। সকলের সচেতনতার মাধ্যমেই ডেঙ্গুর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।

বরগুনায় কমছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা

প্রকাশিত : ১০:৩৪:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

বরগুনায় বছরের শুরুতেই দেশের সর্বাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে শুরু করলে এ জেলায় ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এমনকি কারণ অনুসন্ধানে হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনেও আসেন আইইডিসিআরের প্রতিনিধি দল। বছরের শুরুর দিকে প্রতিদিন প্রায় ১৫০-২০০ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় সর্বনিম্ন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন মাত্র ২ জন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর বরগুনায় ব্যাপক হারে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। পরে গত ১৫ জুন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৬ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ১৭ জুন সরেজমিনে হাসপাতালসহ বরগুনার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন।

বরগুনা সিভিল সার্জন অফিসের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি হয়েছেন একজন। বর্তমানে এ হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ১৩ জন। এছাড়া জেলার অন্য সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও কমেছে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা। শুধু পাথারঘাটা উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় একজন রোগী ভর্তি হলেও বাকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়নি ডেঙ্গু আক্রান্ত কোনো রোগী। তবে সব মিলিয়ে বর্তমানে জেলায় চিকিৎসাধিন রোগীর সংখ্যা ২৬ জন।

এ বছর জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৯ হাজার ৭৩২ জন। এদের মধ্যে শুধু বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৭ হাজার ৪২৩ জন। এবং বাকি পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন ২ হাজার ৩০৯ জন। তবে আক্রান্ত এসব রোগীর মধ্যে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ হাজার ৭০৬ জন। অপরদিকে বছর জুড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরগুনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এছাড়া পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২ জন এবং আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও এক জনসহ সরকারি হিসেবে জেলায় মোট ১৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও অন্তত ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বরগুনায় গত মার্চ মাসের দিকে ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা করা হয়। বরিশাল বিভাগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৪৬ ভাগ রোগীই বরগুনা জেলায় আক্রান্ত হয়েছে। গত দুইমাস ধরে বরগুনায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করলেও এর আগে আমরা ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে একটি ভয়াবহ সময় অতিবাহিত করেছি। তবে জেলায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায়  মাত্র ১৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসনসহ স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বর্তমানে জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় আমরা এখন স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছি।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আসা পরিস্থিতি ধরে রাখতে ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রেখেছি। এছাড়াও আইইডিসিআরের পরিদর্শনের পর যে সব এলাকায় ডেঙ্গুর লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে, বিশেষ করে সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়ন লাকুরতলা এলাকার মানুষদেরকে সচেতন হতে হবে। বৃষ্টির পানি যারা সংরক্ষণ করেন, তাদেরকে নিরাপদের পানি রেখে তা সংরক্ষণ করতে হবে। সকলের সচেতনতার মাধ্যমেই ডেঙ্গুর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।