রাজাদুল ইসলাম বাবু, শেরপুর প্রতিনিধি
গত পাচঁদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে শেরপুর জেলায়। একইসঙ্গে উজানে ভারতের মেঘালয় ও আসামেও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এতে দ্রুত বাড়ছে গারো পাহাড়ি এলাকার চারটি নদীর পানি। ইতোমধ্যে চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস থেকেও আগাম বন্যার বার্তা দিয়েছে। এতে শঙ্কায় পড়েছে কৃষকরা। তবে বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসনও আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত ভোগাই, চেল্লাখালি, মহারশি ও সোমেশ্বরী নদী। প্রতি বছরই একাধিকবার পাহাড়ি ঢলে এ নদীগুলোর পানিতে বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোটি টাকার ফসল ও বাড়িঘরের।
গত সপ্তাহে শেরপুর জেলায় আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাস দেয় বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস। এরপর গত চারদিন ধরে শেরপুরে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। একইসাথে ভারতের মেঘালয় এবং আসামে অব্যাহত বর্ষণের কারণে জেলার চারটি পাহাড়ি নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহারশি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একাধিক স্থানে ভাঙনের উপক্রম হয়েছে। এতে আগাম বন্যা হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শঙ্কায় পড়েছে কৃষক, মৎস্য খামারিসহ স্থানীয়রা। ফলে দ্রুত ধান কেটে নিরাপদ স্থানে নিচ্ছে কৃষক। এতে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকটের।
চলতি মৌসুমে জেলায় ৯১ হাজার ৯৫১ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়। এখন মাঠের ধান ঘরে তোলাই বড় চ্যালেঞ্জ। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন এবং প্রচারণা চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে জেলার ৯২ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানান শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাখোয়াত হোসেন। তিনি জানান, নিচু এলাকাগুলোর ধান কাটা ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সালমা লাইজু এলাকার পরিদর্শন করে বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে ফসলের মাঠ কর্দমাক্ত হয়ে যাওয়ায় ধান কাটা ও মাড়াই মেশিন ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই পরিবারের সকল সদস্যদের ঘরে বসে না থেকে ধান কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
এরই মধ্যে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন বন্যার আগাম প্রস্তুতি নিতে একাধিক প্রস্তুতিমূলক সভা করেছে। মন্ত্রণালয়ে বন্যার খাদ্য ও টিন বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘আমরা সকল অংশীজন ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে সভা করেছি। আমরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত রয়েছি।’
শেরপুরে আগাম বন্যার শঙ্কা, ফসল তোলা নিয়ে বিপাকে কৃষকরা
-
ডেস্ক রিপোর্ট
- প্রকাশিত : ১০:১৩:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
- ১৫১ বার দেখা হয়েছে
জনপ্রিয় সংবাদ