ঢাকা ০২:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

সিলেটে ৭০ বছর ধরে টিলার গায়ে জ্বলছে আগুন, পর্যটকদের অনন্য আকর্ষণ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ১০:২৮:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৩ বার দেখা হয়েছে

বিকেল গড়িয়ে যখন সন্ধ্যা নামে তখন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুরের উৎলারপাড় গ্রামের একটি ছোট্ট টিলা যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। টিলার ফাটল থেকে ধোয়া এবং আগুনের স্ফুলিঙ্গ উঁকি দিয়ে ওঠে। রাতের আঁধারে আগুনের এই খেলা দেখে মনে হয় প্রকৃতি যেন নিজেই তার রহস্য উন্মোচন করছে। স্থানীয়রা এটিকে ‘আগুনটিলা’ নামে চেনে। সাধারণ টিলার মতো এটি কাদা-মাটি দিয়ে তৈরি, কিন্তু ভেতর থেকে প্রতিনিয়ত গ্যাস বের হয়। এই ছোট্ট টিলার রহস্য পুরো গ্রামকে মুগ্ধ করেছে, আর পর্যটকদের জন্য এক অনন্য আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

১৯৫৫ সালে পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম লিমিটেড (পিপিএল) প্রথম এখানে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পায়। গ্যাস উত্তোলনের সময় উচ্চচাপের কারণে একটি বড় বিস্ফোরণ ঘটে এবং ভূমিধসের মাধ্যমে পুকুরের মতো গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়। অনুসন্ধানে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং নির্মিত ভবন ভূগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। আশপাশের টিলাগুলোর মধ্য দিয়ে এখনো সব সময়ই গ্যাস নির্গত হয়, যা আগুনের শিখা তৈরি করে।

স্থানীয়রা বলছেন, পীর শাহ আহমদ আলী আগে সতর্ক করেছিলেন, কূপ খনন অন্য স্থানে করা হোক। কিন্তু তার কথা না মেনে কাজ করা হলে বিস্ফোরণ ঘটে।

স্থানীয় আব্দুল খালিক দুলাল বলেন, বিস্ফোরণের ধ্বংসাবশেষ এখনও টিলার চারপাশে চোখে পড়ে। পীরের দোয়া ও বালু ছেটানোর পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ট্যুর অপারেটর এসোশিয়েশন অব সিলেটের (টোয়াস) সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন  বলেন, হরিপুরের আগুনটিলা এক অদ্ভুত প্রাকৃতিক ধ্রুপদী নিদর্শন। এটি শুধু দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে না, স্থানীয় অর্থনীতি ও পর্যটন শিল্পের জন্যও নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা, নিরাপত্তা ও পর্যটক সচেতনতা নিশ্চিত করলে, এটি দেশের পর্যটন মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আমাদের সংগঠন মনে করে, স্থানীয় জনগণকে এই স্থানের সংরক্ষণে সম্পৃক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। সরকারি ও বেসরকারি পর্যটন কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগে, আমরা চাই এই স্থানটি নিরাপদ ও আকর্ষণীয় করে তোলা হোক, যাতে হরিপুরের এই ঐতিহাসিক আগুনটি দেশের পর্যটন খাতে নতুন মাত্রা যোগ করে।

সিলেটে ৭০ বছর ধরে টিলার গায়ে জ্বলছে আগুন, পর্যটকদের অনন্য আকর্ষণ

প্রকাশিত : ১০:২৮:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

বিকেল গড়িয়ে যখন সন্ধ্যা নামে তখন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুরের উৎলারপাড় গ্রামের একটি ছোট্ট টিলা যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। টিলার ফাটল থেকে ধোয়া এবং আগুনের স্ফুলিঙ্গ উঁকি দিয়ে ওঠে। রাতের আঁধারে আগুনের এই খেলা দেখে মনে হয় প্রকৃতি যেন নিজেই তার রহস্য উন্মোচন করছে। স্থানীয়রা এটিকে ‘আগুনটিলা’ নামে চেনে। সাধারণ টিলার মতো এটি কাদা-মাটি দিয়ে তৈরি, কিন্তু ভেতর থেকে প্রতিনিয়ত গ্যাস বের হয়। এই ছোট্ট টিলার রহস্য পুরো গ্রামকে মুগ্ধ করেছে, আর পর্যটকদের জন্য এক অনন্য আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

১৯৫৫ সালে পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম লিমিটেড (পিপিএল) প্রথম এখানে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পায়। গ্যাস উত্তোলনের সময় উচ্চচাপের কারণে একটি বড় বিস্ফোরণ ঘটে এবং ভূমিধসের মাধ্যমে পুকুরের মতো গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়। অনুসন্ধানে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং নির্মিত ভবন ভূগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। আশপাশের টিলাগুলোর মধ্য দিয়ে এখনো সব সময়ই গ্যাস নির্গত হয়, যা আগুনের শিখা তৈরি করে।

স্থানীয়রা বলছেন, পীর শাহ আহমদ আলী আগে সতর্ক করেছিলেন, কূপ খনন অন্য স্থানে করা হোক। কিন্তু তার কথা না মেনে কাজ করা হলে বিস্ফোরণ ঘটে।

স্থানীয় আব্দুল খালিক দুলাল বলেন, বিস্ফোরণের ধ্বংসাবশেষ এখনও টিলার চারপাশে চোখে পড়ে। পীরের দোয়া ও বালু ছেটানোর পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ট্যুর অপারেটর এসোশিয়েশন অব সিলেটের (টোয়াস) সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন  বলেন, হরিপুরের আগুনটিলা এক অদ্ভুত প্রাকৃতিক ধ্রুপদী নিদর্শন। এটি শুধু দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে না, স্থানীয় অর্থনীতি ও পর্যটন শিল্পের জন্যও নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা, নিরাপত্তা ও পর্যটক সচেতনতা নিশ্চিত করলে, এটি দেশের পর্যটন মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আমাদের সংগঠন মনে করে, স্থানীয় জনগণকে এই স্থানের সংরক্ষণে সম্পৃক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। সরকারি ও বেসরকারি পর্যটন কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগে, আমরা চাই এই স্থানটি নিরাপদ ও আকর্ষণীয় করে তোলা হোক, যাতে হরিপুরের এই ঐতিহাসিক আগুনটি দেশের পর্যটন খাতে নতুন মাত্রা যোগ করে।