ঢাকা ০৭:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

চট্টগ্রামে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমেছে জলাবদ্ধতা : চসিক মেয়র

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ১০:৩২:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
  • ৯ বার দেখা হয়েছে

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আমরা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতা কমাতে সক্ষম হয়েছি। চট্টগ্রামের অনেক এলাকায় এখন আর আগের মতো পানি জমছে না। তবু কিছু কিছু এলাকায় কাজ বাকি রয়েছে। সুইস গেটগুলো নির্মাণ সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতার বড় অংশ নিরসন হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৬ সালে ৩৬টি খাল সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ২১টি খাল সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে, অবশিষ্ট ১৫টি খালের কাজ এখনো বাকি রয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত বারইপাড়া খাল খননের কাজও দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। আমাদের বাকী ২১টি খালও সংস্কার করতে হবে। সেই কাজগুলোও আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী শুরু করবো। সার্বিকভাবে বিবেচনায় আমি মনে করি, এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, আর ৫০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) নগরীর চলমান বিভিন্ন কাজ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ নিয়েও উদ্বিগ্ন। খুব সামান্য জমা পানি থেকেও এডিস মশার লার্ভা তৈরি হচ্ছে। প্লাস্টিক, ডাবের খোসা, বোতল-সব কিছু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলে রাখলে জলাবদ্ধতা ও ডেঙ্গু—দুই সমস্যাই একসঙ্গে বাড়ে। ‘চট্টগ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে’ —এই বিশ্বাস নিয়ে আমরা কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, জলাবদ্ধতারোধে শুধু খাল পরিষ্কার করলেই হবে না, নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। ময়লা যেখানে সেখানে ফেলে, অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করে ড্রেনিং সিস্টেম ধ্বংস করা হচ্ছে। যতক্ষণ না আমরা শহরকে ভালোবাসবো, ততক্ষণ এই নগরকে বাসযোগ্য করে তোলা সম্ভব নয়।

‘সম্প্রতি চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণের সঙ্গে জোয়ারের পানি একত্রিত হওয়ায় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি উঠে যায়। অথচ মে মাসে ১৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পরেও আমরা অনেকটাই স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিলাম। এবার মাত্র ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলেও জোয়ারের কারণে পরিস্থিতি অনেকটা অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই আমি দ্রুত একটি সমন্বিত সভা ডেকেছি। সমন্বিত এই সভায় সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও সব সার্ভিস ওরিয়েন্টেড প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।’

চলমান সমস্যার জন্য নগর সরকারের অভাবকে দায়ী করে বলেন, আমি বারবার বলছি, এখন সময় এসেছে নগর সরকার প্রতিষ্ঠার। আজকে আমরা যে সমস্যাগুলো দেখছি, তা পরিকল্পিত নগর উন্নয়নের অভাবে। পৃথিবীর অনেক শহরে নগর সরকার আছে, সেখানে মেয়র হচ্ছেন সুপ্রিম অথরিটি। অথচ আমাদের এখানে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। একটি পরিকল্পিত নগর গঠনের জন্য ‘নগর সরকার’ প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি। মেয়রকে সুস্পষ্ট দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব না দিলে কোনো প্রকল্পই সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হবে না।

পরিদর্শনকালে মেয়রকে নাগরিকরা ম্যাস্কসহ বিভিন্ন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক টাইগারপাস, দেওয়ানহাটসহ বিভিন্ন স্থানে নালা-খালে মাটি ভরাট ও নির্মাণ সামগ্রী উন্মুক্ত রাখায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির অভিযোগ করলে মেয়র প্রতিষ্ঠানগুলোর সাইট পরিদর্শন করে সত্যতা পান। এসময় তিনি প্রতিষ্ঠানগুলাকে সতর্ক করেন এবং নির্মাণের ক্ষেত্রে পরিবেশের ক্ষতিকর কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করলে ম্যাজিস্ট্রেট প্রেরণ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফরহাদুল আলম, আগ্রাবাদ বক্স কালভার খনন প্রকল্প পরিচালক কমান্ডার মো. এনামুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ খান, নির্বাহী প্রকৌশলী  আনোয়ার জাহান ও সহকারী প্রকৌশলী গাজী মো. কামরুল হাসান।

চট্টগ্রামে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমেছে জলাবদ্ধতা : চসিক মেয়র

প্রকাশিত : ১০:৩২:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আমরা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতা কমাতে সক্ষম হয়েছি। চট্টগ্রামের অনেক এলাকায় এখন আর আগের মতো পানি জমছে না। তবু কিছু কিছু এলাকায় কাজ বাকি রয়েছে। সুইস গেটগুলো নির্মাণ সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতার বড় অংশ নিরসন হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৬ সালে ৩৬টি খাল সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ২১টি খাল সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে, অবশিষ্ট ১৫টি খালের কাজ এখনো বাকি রয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত বারইপাড়া খাল খননের কাজও দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। আমাদের বাকী ২১টি খালও সংস্কার করতে হবে। সেই কাজগুলোও আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী শুরু করবো। সার্বিকভাবে বিবেচনায় আমি মনে করি, এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, আর ৫০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) নগরীর চলমান বিভিন্ন কাজ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ নিয়েও উদ্বিগ্ন। খুব সামান্য জমা পানি থেকেও এডিস মশার লার্ভা তৈরি হচ্ছে। প্লাস্টিক, ডাবের খোসা, বোতল-সব কিছু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলে রাখলে জলাবদ্ধতা ও ডেঙ্গু—দুই সমস্যাই একসঙ্গে বাড়ে। ‘চট্টগ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে’ —এই বিশ্বাস নিয়ে আমরা কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, জলাবদ্ধতারোধে শুধু খাল পরিষ্কার করলেই হবে না, নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। ময়লা যেখানে সেখানে ফেলে, অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করে ড্রেনিং সিস্টেম ধ্বংস করা হচ্ছে। যতক্ষণ না আমরা শহরকে ভালোবাসবো, ততক্ষণ এই নগরকে বাসযোগ্য করে তোলা সম্ভব নয়।

‘সম্প্রতি চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণের সঙ্গে জোয়ারের পানি একত্রিত হওয়ায় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি উঠে যায়। অথচ মে মাসে ১৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পরেও আমরা অনেকটাই স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিলাম। এবার মাত্র ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলেও জোয়ারের কারণে পরিস্থিতি অনেকটা অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই আমি দ্রুত একটি সমন্বিত সভা ডেকেছি। সমন্বিত এই সভায় সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও সব সার্ভিস ওরিয়েন্টেড প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।’

চলমান সমস্যার জন্য নগর সরকারের অভাবকে দায়ী করে বলেন, আমি বারবার বলছি, এখন সময় এসেছে নগর সরকার প্রতিষ্ঠার। আজকে আমরা যে সমস্যাগুলো দেখছি, তা পরিকল্পিত নগর উন্নয়নের অভাবে। পৃথিবীর অনেক শহরে নগর সরকার আছে, সেখানে মেয়র হচ্ছেন সুপ্রিম অথরিটি। অথচ আমাদের এখানে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। একটি পরিকল্পিত নগর গঠনের জন্য ‘নগর সরকার’ প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি। মেয়রকে সুস্পষ্ট দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব না দিলে কোনো প্রকল্পই সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হবে না।

পরিদর্শনকালে মেয়রকে নাগরিকরা ম্যাস্কসহ বিভিন্ন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক টাইগারপাস, দেওয়ানহাটসহ বিভিন্ন স্থানে নালা-খালে মাটি ভরাট ও নির্মাণ সামগ্রী উন্মুক্ত রাখায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির অভিযোগ করলে মেয়র প্রতিষ্ঠানগুলোর সাইট পরিদর্শন করে সত্যতা পান। এসময় তিনি প্রতিষ্ঠানগুলাকে সতর্ক করেন এবং নির্মাণের ক্ষেত্রে পরিবেশের ক্ষতিকর কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করলে ম্যাজিস্ট্রেট প্রেরণ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফরহাদুল আলম, আগ্রাবাদ বক্স কালভার খনন প্রকল্প পরিচালক কমান্ডার মো. এনামুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ খান, নির্বাহী প্রকৌশলী  আনোয়ার জাহান ও সহকারী প্রকৌশলী গাজী মো. কামরুল হাসান।