ঢাকা ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে ব্রাউন আটা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ১১:৪৯:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩৬ বার দেখা হয়েছে

বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসচেতন ভোক্তাদের মধ্যে ব্রাউন বা হোল হুইট আটা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ, সাধারণ সাদা আটার তুলনায় এতে থাকে বেশি ফাইবার, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট এবং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই)। যা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। ফলে স্বাদ ও গুণগত মানের কারণে শুধুমাত্র রোগী নয় বরং সাধারণ পরিবারেও এখন ব্রাউন আটার ব্যবহার বেড়েছে কয়েকগুণ।

যদিও বাংলাদেশের বাজারে গত কয়েক বছর আগেও ‘ব্রাউন আটা’ শব্দটি ছিল বেশ অপরিচিত। রুটি, পরোটা বা নানা ধরনের খাবার তৈরিতে সাদা আটার ব্যবহারেই মানুষ অভ্যস্ত ছিল। তবে করোনাকালে মানুষ যখন বেশি করে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হলো, তখন থেকেই বাজারে ব্রাউন আটার বিক্রি বাড়তে শুরু করে। এখন রাজধানীর বড় সুপারশপ থেকে শুরু করে অনলাইন মার্কেটপ্লেস কিংবা ছোট মুদি দোকান—সব জায়গাতেই ব্রাউন আটার উপস্থিতি চোখে পড়ে।

একইসাথে স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসার এবং মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের কারণেও বাংলাদেশে এখন ব্রাউন আটা দেশের বাজারে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শহর থেকে গ্রাম— সব জায়গায় ভোক্তারা ব্রাউন আটার দিকে ঝুঁকছেন। আর এই জনপ্রিয়তার তালিকায় সামনের সারিতে উঠে আসছে আকিজ গ্রুপের ‘সানশাইন ব্রাউন আটা’। যা বর্তমানে ভোক্তাদের আস্থার জায়গা দখল করে নিয়েছে।

বাংলাদেশে প্রায় দুই দশক আগে ব্রাউন আটার কমার্শিয়াল বাজারযাত্রা শুরু হয়। প্রথমদিকে রাবেয়া ফ্লাওয়ার মিলস কনজিউমার প্যাকে বাজারে এ পণ্য সরবরাহ করে। পরবর্তীতে এসিআই পিওর ফ্লাওয়ারের উদ্যোগে ক্রেতারা ব্রাউন আটা সম্পর্কে ব্যাপকভাবে জানতে পারেন। এরপর দেশের কিছু প্রতিষ্ঠান সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত বিউলার কোম্পানির পেসা মিল স্থাপনে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ব্রাউন আটা তৈরির প্রস্তুতি নেয়।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী আকিজ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেডের সানশাইন ব্র্যান্ডের ব্রাউন আটা ভোক্তাদের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। সুপারশপ ও আধুনিক বাজারগুলো পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, স্বাদ, গন্ধ ও মানের কারণে সানশাইন ব্রাউন আটা দ্রুতই ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে।

বাংলাদেশে প্রথম ব্রাউন আটা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার উদ্যোগ গ্রহণকারী আকিজ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অনুপ কুমার সাহা বলেন, “স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের মাঝে ব্রাউন আটার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে খাদ্য তালিকায় ব্রাউন আটা সাদা আটার তুলনায় আরও বেশি গুরুত্ব পাবে।”

গুলশানের একটি সুপারশপে আটা কিনতে আসা মাহমুদ হাসান বলেন, “আগে নানান ব্র্যান্ডের ব্রাউন আটা ব্যবহার করেছি। তবে আকিজের সানশাইন ব্রাউন আটার স্বাদ ও গুণগত মান আমাকে সন্তুষ্ট করেছে। রুটি নরম থাকে, আর পরিবারের সবাই খেতে পছন্দ করে।”

মিরপুরের গৃহিণী রওশন আরা বেগম বলেন, “আমাদের পরিবারে ডায়াবেটিস রোগী আছে। ডাক্তার বলায় আমরা ব্রাউন আটা ব্যবহার শুরু করি। এখন দেখি শুধু রোগীর জন্য নয়, সবার জন্যই এটা ভালো। খেতে যেমন ভালো লাগে, শরীরও হালকা লাগে।”

অন্যদিকে পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যথেষ্ট ফাইবার থাকলে শরীরের নানা জটিল রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো— এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। কারণ, ব্রাউন আটা দীর্ঘসময় পেট ক্ষুধামুক্ত রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও বেশ উপকারী ব্রাউন আটা। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। একইসাথে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা, হজমে সহায়তা করা, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারেও জুড়ি নেই ব্রাউন আটার।

বাংলাদেশে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে ব্রাউন আটা

প্রকাশিত : ১১:৪৯:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসচেতন ভোক্তাদের মধ্যে ব্রাউন বা হোল হুইট আটা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ, সাধারণ সাদা আটার তুলনায় এতে থাকে বেশি ফাইবার, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট এবং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই)। যা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। ফলে স্বাদ ও গুণগত মানের কারণে শুধুমাত্র রোগী নয় বরং সাধারণ পরিবারেও এখন ব্রাউন আটার ব্যবহার বেড়েছে কয়েকগুণ।

যদিও বাংলাদেশের বাজারে গত কয়েক বছর আগেও ‘ব্রাউন আটা’ শব্দটি ছিল বেশ অপরিচিত। রুটি, পরোটা বা নানা ধরনের খাবার তৈরিতে সাদা আটার ব্যবহারেই মানুষ অভ্যস্ত ছিল। তবে করোনাকালে মানুষ যখন বেশি করে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হলো, তখন থেকেই বাজারে ব্রাউন আটার বিক্রি বাড়তে শুরু করে। এখন রাজধানীর বড় সুপারশপ থেকে শুরু করে অনলাইন মার্কেটপ্লেস কিংবা ছোট মুদি দোকান—সব জায়গাতেই ব্রাউন আটার উপস্থিতি চোখে পড়ে।

একইসাথে স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসার এবং মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের কারণেও বাংলাদেশে এখন ব্রাউন আটা দেশের বাজারে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শহর থেকে গ্রাম— সব জায়গায় ভোক্তারা ব্রাউন আটার দিকে ঝুঁকছেন। আর এই জনপ্রিয়তার তালিকায় সামনের সারিতে উঠে আসছে আকিজ গ্রুপের ‘সানশাইন ব্রাউন আটা’। যা বর্তমানে ভোক্তাদের আস্থার জায়গা দখল করে নিয়েছে।

বাংলাদেশে প্রায় দুই দশক আগে ব্রাউন আটার কমার্শিয়াল বাজারযাত্রা শুরু হয়। প্রথমদিকে রাবেয়া ফ্লাওয়ার মিলস কনজিউমার প্যাকে বাজারে এ পণ্য সরবরাহ করে। পরবর্তীতে এসিআই পিওর ফ্লাওয়ারের উদ্যোগে ক্রেতারা ব্রাউন আটা সম্পর্কে ব্যাপকভাবে জানতে পারেন। এরপর দেশের কিছু প্রতিষ্ঠান সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত বিউলার কোম্পানির পেসা মিল স্থাপনে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ব্রাউন আটা তৈরির প্রস্তুতি নেয়।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী আকিজ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেডের সানশাইন ব্র্যান্ডের ব্রাউন আটা ভোক্তাদের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। সুপারশপ ও আধুনিক বাজারগুলো পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, স্বাদ, গন্ধ ও মানের কারণে সানশাইন ব্রাউন আটা দ্রুতই ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে।

বাংলাদেশে প্রথম ব্রাউন আটা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার উদ্যোগ গ্রহণকারী আকিজ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অনুপ কুমার সাহা বলেন, “স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের মাঝে ব্রাউন আটার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে খাদ্য তালিকায় ব্রাউন আটা সাদা আটার তুলনায় আরও বেশি গুরুত্ব পাবে।”

গুলশানের একটি সুপারশপে আটা কিনতে আসা মাহমুদ হাসান বলেন, “আগে নানান ব্র্যান্ডের ব্রাউন আটা ব্যবহার করেছি। তবে আকিজের সানশাইন ব্রাউন আটার স্বাদ ও গুণগত মান আমাকে সন্তুষ্ট করেছে। রুটি নরম থাকে, আর পরিবারের সবাই খেতে পছন্দ করে।”

মিরপুরের গৃহিণী রওশন আরা বেগম বলেন, “আমাদের পরিবারে ডায়াবেটিস রোগী আছে। ডাক্তার বলায় আমরা ব্রাউন আটা ব্যবহার শুরু করি। এখন দেখি শুধু রোগীর জন্য নয়, সবার জন্যই এটা ভালো। খেতে যেমন ভালো লাগে, শরীরও হালকা লাগে।”

অন্যদিকে পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যথেষ্ট ফাইবার থাকলে শরীরের নানা জটিল রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো— এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। কারণ, ব্রাউন আটা দীর্ঘসময় পেট ক্ষুধামুক্ত রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও বেশ উপকারী ব্রাউন আটা। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। একইসাথে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা, হজমে সহায়তা করা, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারেও জুড়ি নেই ব্রাউন আটার।