ঢাকা ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

শপথ নিলে কতদিন মেয়র পদে থাকতে পারবেন ইশরাক

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত : ১১:৫০:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • ১০২ বার দেখা হয়েছে

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নাম ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে শপথ নিলে তিনি কতদিন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) রাতে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত ছাড়াই গেজেট প্রকাশ করে ইসি।

এদিকে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের আগে এই বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়েছিল ইসি। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় তাদের মতামত দেওয়ার আগেই অনেকটা তাড়াহুড়ো করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ফলে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এই অবস্থায় শপথ নিলে মেয়র হিসেবে কতদিন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন ইশরাক?

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে শেষ হচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদের মেয়াদ।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপস চার লাখ ২৪ হাজার ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন।

তার বিপরীতে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন পেয়েছিলেন দুই লাখ ৩৬ হাজার ভোট। ওই নির্বাচনে অনিয়ম কারচুপির অভিযোগও ছিল বিস্তর।

ভোটের এক মাসের মাথায় ওই বছরের ৩ মার্চ নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে মামলা করেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। ২৭ মার্চ নির্বাচনি আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের প্রেক্ষিতে গেজেট প্রকাশ করে ইসি।

নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের রায়ের প্রেক্ষিতে গেজেটে ইসি শেখ ফজলে নূর তাপসের পরিবর্তে ইশরাক হোসেনকে নির্বাচিত মেয়র ঘোষণা করে সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গত ১৯ আগস্ট ঢাকার দুই সিটিসহ সারাদেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

সেই হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে। যে পদে দায়িত্ব পালন করছেন একজন প্রশাসক।

শূন্যপদের বিপরীতে উপ-নির্বাচন না দিয়ে কাউকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করে ইসির গেজেটের পর প্রশ্ন উঠেছে এই পদে ইশরাক হোসেন কতদিন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

আইন অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদের মেয়াদ রয়েছে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত। ইসির গেজেটের পর এই পদে শপথ নিলে তার মেয়াদকাল কতদিন হবে সেটি নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমান আইন অনুযায়ী এই সিটি করপোরেশনের মেয়াদ আছে আর ১৫-১৬ দিন। সেই অনুযায়ী যদি নতুন করে তফসিল ঘোষণা করা হয়, সেখানে যদি ইশরাক হোসেন প্রার্থী হতে চান তাহলে তাকে এই সময়ের মধ্যেই পদত্যাগ করে পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হতে হবে।

আর যদি এই সময়ের মধ্যে নতুন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করা হয় তখন কি হবে? এমন প্রশ্নে অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমান আইনে এই বিষয়গুলো নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। তবে স্থানীয় সরকার কমিশন নতুন যে সংস্কার প্রস্তাব করেছে সেখানে মেয়াদ শেষে ভোট না হলে প্রশাসক বসানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

তার মতে, এমন ঘটনা এর আগে ঘটেনি। যে কারণে এখন শপথ নিলে ইশরাক হোসেন কতদিন পদে থাকতে পারবেন তা নিয়ে একটা আইনগত জটিলতা রয়েই গেছে।

এর আগে একইভাবে চট্টগ্রামে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে মেয়র ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি এখন চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

গত বছরের ১ অক্টোবর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে শাহাদাত হোসেনকে জয়ী ঘোষণা করে আদালতের রায়ের পর গেজেট সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন।

জনপ্রিয় সংবাদ

শপথ নিলে কতদিন মেয়র পদে থাকতে পারবেন ইশরাক

প্রকাশিত : ১১:৫০:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নাম ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে শপথ নিলে তিনি কতদিন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) রাতে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত ছাড়াই গেজেট প্রকাশ করে ইসি।

এদিকে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের আগে এই বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়েছিল ইসি। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় তাদের মতামত দেওয়ার আগেই অনেকটা তাড়াহুড়ো করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ফলে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এই অবস্থায় শপথ নিলে মেয়র হিসেবে কতদিন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন ইশরাক?

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে শেষ হচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদের মেয়াদ।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপস চার লাখ ২৪ হাজার ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন।

তার বিপরীতে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন পেয়েছিলেন দুই লাখ ৩৬ হাজার ভোট। ওই নির্বাচনে অনিয়ম কারচুপির অভিযোগও ছিল বিস্তর।

ভোটের এক মাসের মাথায় ওই বছরের ৩ মার্চ নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে মামলা করেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। ২৭ মার্চ নির্বাচনি আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের প্রেক্ষিতে গেজেট প্রকাশ করে ইসি।

নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের রায়ের প্রেক্ষিতে গেজেটে ইসি শেখ ফজলে নূর তাপসের পরিবর্তে ইশরাক হোসেনকে নির্বাচিত মেয়র ঘোষণা করে সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গত ১৯ আগস্ট ঢাকার দুই সিটিসহ সারাদেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

সেই হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে। যে পদে দায়িত্ব পালন করছেন একজন প্রশাসক।

শূন্যপদের বিপরীতে উপ-নির্বাচন না দিয়ে কাউকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করে ইসির গেজেটের পর প্রশ্ন উঠেছে এই পদে ইশরাক হোসেন কতদিন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

আইন অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদের মেয়াদ রয়েছে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত। ইসির গেজেটের পর এই পদে শপথ নিলে তার মেয়াদকাল কতদিন হবে সেটি নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমান আইন অনুযায়ী এই সিটি করপোরেশনের মেয়াদ আছে আর ১৫-১৬ দিন। সেই অনুযায়ী যদি নতুন করে তফসিল ঘোষণা করা হয়, সেখানে যদি ইশরাক হোসেন প্রার্থী হতে চান তাহলে তাকে এই সময়ের মধ্যেই পদত্যাগ করে পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হতে হবে।

আর যদি এই সময়ের মধ্যে নতুন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করা হয় তখন কি হবে? এমন প্রশ্নে অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমান আইনে এই বিষয়গুলো নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। তবে স্থানীয় সরকার কমিশন নতুন যে সংস্কার প্রস্তাব করেছে সেখানে মেয়াদ শেষে ভোট না হলে প্রশাসক বসানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

তার মতে, এমন ঘটনা এর আগে ঘটেনি। যে কারণে এখন শপথ নিলে ইশরাক হোসেন কতদিন পদে থাকতে পারবেন তা নিয়ে একটা আইনগত জটিলতা রয়েই গেছে।

এর আগে একইভাবে চট্টগ্রামে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে মেয়র ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি এখন চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

গত বছরের ১ অক্টোবর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে শাহাদাত হোসেনকে জয়ী ঘোষণা করে আদালতের রায়ের পর গেজেট সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন।