পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন একজন ভুয়া জুলাই শহীদ সনাক্ত করেছে। বশির সরদার (৩৭) নামের তালিকাভুক্ত ওই জুলাই শহিদের নাম সরকারি গেজেট থেকে বাতিলের সুপারিশও করা হয়েছে।
কাগজপত্র পর্যালেচনা ও পরিবারের ভুল স্বীকারোক্তির পর জেলা প্রশাসন বুধবার তার গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, আমরা পটুয়াখালীতে একজন তালিকাভুক্ত জুলাই শহীদ সনাক্ত করেছি। তার পরিবারও ভুল স্বীকার করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ওই শহীদ পরিবারের নামে দেয়া ১০ লাখ টাকার সঞ্চয় পত্র স্থগিত করা হয়েছে। ওই জুলাই শহীদের নাম বশির সরদার। তিনি পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের সিকান্দার সরদারের ছেলে । তিনি পটুয়াখালী শহরের নিউ মার্কেটের কাঁচা বাজারে চা বিক্রেতা ছিলেন। তার ছেলে রেদোয়ান ৮ম শ্রেণিতে ও মেয়ে বুশরা আক্তার শ্রেণিতে লেখাপড়া করেন। স্ত্রী রেবা আক্তার একজন গৃহিণী।
জেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকার সম্প্রতি সারা দেশের জুলাই শহিদদের মৃত্যুর স্থান সংরক্ষণের নির্দেশনা দিলে পটুয়াখালীর ২৪ জন জুলাই শহীদদের ব্যাপারে অধিকতর খোঁজ খবর নিতে গিয়ে বশিল সর্দারের শহীদ হওয়ার বিষয়টি নজরে আসে। প্রথমে বশিরের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে বশির সরর্দার পটুয়াখালী শহরের চৌরাস্তা এলাকায় আহত হন এবং পরে তিনি নিহত হন। কিন্তু পটুয়াখালীতে কোনো স্থানে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি জেলা প্রশাসন থেকে চ্যালেঞ্জ করা হলে পরিবার ভুল স্বীকার করে।
এ ব্যাপারে বশিরের স্ত্রী রেবা আক্তার জানান, তার স্বামী বশির ডায়াবেটিক ও হাই প্রেসারের রোগী ছিলেন। ২০২৪ সালের জুন মাসে পায়ে রডের আঘাত পেলে তাকে ঢাকায় চিকিৎসা করানোর পর মারা যান। মৃত্যুর পর সন্তানদের নিয়ে অর্থাভাবে পড়ে যাই। তখন আমার দেবর নাসির সরর্দার সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়ে আবেদন করেন। এর পরের বিষয়গুলো আমার জানা নেই।
এ ব্যাপারে নাসির সরর্দার বলেন, পরিবারের আর্থিক অনটন ও নানা প্ররোচনায় পরে আমার ভাইয়ের জুলাই শহীদদের তালিকাভুক্ত করতে প্রয়োজনীয় আবেদন নিবেদন করি।
পরে আমরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে জেলা প্রশাসকের কাছে জুলাই শহীদ তালিকা থেকে আমার ভাইয়ের নাম বাতিলের অনুরোধ করি।
জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে তার স্ত্রীর নামের ১০ লাখ টাকার সঞ্চয় পত্র স্থগিত করা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছ থেকে আর কোনো সহায়তা পাইনি বলে দাবি করেন তিনি।