পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
রাস্তার ছাল-বাকল উঠে গেছে। কোথাও দেবে গেছে রাস্তা। আবার কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেসব গর্তে জমে আছে বৃষ্টির পানি। এমন বেহাল দশায় চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামের মানুষজনসহ পথচারিরা।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার তুলাতলী রাখাইন পল্লী থেকে ডালবুগঞ্জ বাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কি. মি. সড়ক খানাখন্দে এভাবে পড়ে আছে। গত দুই বছর ধরে সড়কের এমন বিধ্বস্ত দশায় ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের অন্তত ১৪ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। এ রাস্তার কারণে একইভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পাশের বালিয়াতলী, মিঠাগঞ্জ ও ধূলাসার ইউনিয়নের আরো পাঁচ গ্রামের মানুষ। রাস্তার এমন বেহাল দশায় এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষের যোগাযোগ ভোগান্তি চরমে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বাশার বলেন, গত দুই বছর ধরে এ সড়কটির ভগ্নদশায় ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা। জনজীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি জরুরী ভিত্তিতে মেরামত করা দরকার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার ইট-সুরকি উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সেসব খানাখন্দে গত কয়েকদিনের বর্ষার পানি জমে আছে। মাত্র পাঁচ কি. মি. রাস্তার বিভিন্ন অংশে সিলকোট উঠে অসংখ্য গর্ত হয়েছে। কোথাও কোথাও কাঁদামাটি পর্যন্ত বেরিয়ে গেছে। তা ছাড়া এ সড়কে একটি কালভার্টের অবস্থা খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। কালভার্টের অংশে যানবাহনসহ মানুষজনের চলাচলের জন্য কাঠের টুকরো দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ অংশ থেকে এখন কোনোমতে অটোবাইক, মোটরসাইকেল চালকরা যাত্রী নামিয়ে তারপর চলাচল করছে। ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধের উপক্রম হয়েছে।
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হেদায়েত উল্লাহ জেহাদি জানান, বালিয়াতলী ইউনিয়নের তুলাতলী থেকে পক্ষিয়াপাড়া বাজার পর্যন্ত প্রায় তিন কি. মি. সড়ক কার্পেটিং করা ছিল। আর পক্ষিয়াপাড়া থেকে ডালবুগঞ্জ বাজার পর্যন্ত প্রায় দুই কি. মি. সড়ক ইট বিছানো রয়েছে। পুরো রাস্তার তিন কি. মি. অংশে সিলকোট উঠে গর্ত হয়ে গেছে। বাকী দুই কি. মি. অংশের বিছানো ইটও দেবে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের অন্তত ১৪ গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এই রাস্তা ছাড়া বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। গত বছর এ সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ কালভার্টটির মেরামত করার জন্য ১৫ হাজার টাকা খরচ করেছি। এখন কালভার্টটি আবারও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এ সড়কটি সংস্কারের জন্য বহুবার উপজেলা পরিষদের সভায় বলেছি। কিন্তু কোনো উপায় হয়নি বলে তিনি জানান।
ডালবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যুথি আক্তার বলে, কলাপাড়া উপজেলা শহরে যাইতে কষ্টের শেষ থাকেনা। অটোতে উঠলে ভাঙা অংশের বিভিন্ন জায়গায় নামতে হয়। দ্রুত এ সড়কটি মেরামত করার দাবি জানাই।
পক্ষিয়াপাড়া বাজারের দোকানদার আবদুর রশিদ খান বলেন, আমরা ব্যবসায়ী। দোকানের জন্য মালামাল আনা, চলাচল কোনো কিছুই শান্তিতে করতে পারিনা।
কলাপাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘এ সড়কটি সংস্কারের তালিকায় রয়েছে। জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে যত দ্রুত সড়কটি সংস্কার করা যায়, সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’